চলতি নিম্নচাপের জেরে শুক্রবার দুপুর থেকে বাঁকুড়া জেলা জুড়ে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। আর তার জেরে ফের জল বাড়তে শুরু করেছে দারকেশ্বর, গন্ধেশ্বরী, কংসাবতী, শিলাবতী, দামোদর, শালী-সহ সবক’টি নদীতেই। গত ২৪ ঘন্টায় বাঁকুড়া জেলায় পৃথক দু’টি বজ্রপাতের ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে দু’জনের। নদী পারাপার করতে গিয়ে জলের তোড়ে ভেসে মৃত্যু হয়েছে এক জনের।আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস ছিলই। সেই পূর্বাভাসকে কার্যত সত্যি করে শুক্রবার দুপুর থেকে মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হয় বাঁকুড়া জেলায়।
আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টা থেকে শনিবার সকাল সাড়ে ৮টা পর্যন্ত অর্থাৎ ২৪ ঘন্টায় ২০.১ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। জেলার সর্বত্রই কমবেশি বৃষ্টি হওয়ায় প্রায় সবক’টি নদীতেই জলস্তরের উচ্চতা বৃদ্ধি পেয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় মাঠের কাজ সেরে বাড়িতে ফিরছিলেন বিষ্ণুপুর থানার ভালুকা গ্রামের স্বপন মান্ডি এবং লক্ষ্মী টুডু। আচমকাই বজ্রপাতে গ্রামের অদূরে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তাঁরা। পরে গ্রামবাসীরা এসে দেখেন ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়েছে স্বপন মান্ডির। আহত লক্ষ্মী টুডুকে দ্রুত উদ্ধার করে বিষ্ণুপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ওই দিন সন্ধ্যায় মাঠ থেকে গরু নিয়ে বাড়িতে ফেরার পথে বজ্রপাতে মৃত্যু হয় বিষ্ণুপুর থানার হেতাগোড়া গ্রামের বাসিন্দা বাবলু সর্দারের। দু’টি মৃতদেহই উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বাঁকুড়া জেলা হাসপাতালে পাঠায় বিষ্ণুপুর থানার পুলিশ।
অন্যদিকে, নদীর হঠাৎ বৃদ্ধি পাওয়া জলস্রোতে ভেসে গিয়ে মৃত্যু হয় বাঁকুড়ার মেজিয়া থানার লক্ষ্মণবাদী গ্রামের এক বাসিন্দার। মৃতের নাম সমর বাউড়ি। জানা গিয়েছে, নদীর পারে থাকা জমিতে চাষের কাজ সেরে সন্ধ্যায় স্থানীয় একটি ছোট নদী পেরিয়ে বাড়িতে ফিরছিলেন সমর। আচমকাই জলের স্রোতে ভেসে যান। গ্রামবাসীরা তড়িঘড়ি উদ্ধার কাজ শুরু করার পাশাপাশি খবর দেন বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীকে। শনিবার সকালে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী ওই নদীর জলে স্পিড বোটে তল্লাশি শুরু করে। বেশ কিছু ক্ষণের চেষ্টায় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী দেহ উদ্ধার করে মেজিয়া থানার পুলিশের হাতে তুলে দেয়। মেজিয়া থানার পুলিশ দেহের ময়নাতদন্তের জন্য বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজে পাঠিয়েছে।