• facebook
  • twitter
Thursday, 19 September, 2024

বাংলাদেশে বন্যার দায় ভারতের নয়,  স্পষ্ট জানাল ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রক

ত্রিপুরার বাঁধ থেকে জল ছাড়ার কারণে বাংলাদেশে বন্যা হয়নি, একথা স্পষ্ট জানানো হয় ভারত সরকারের তরফে। সরকারের তরফে প্রেস বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানানো হয়েছে, ত্রিপুরার ধলাই জেলায় গোমতী নদীর উপরে তৈরি ডম্বুর বাঁধ থেকে জল ছাড়ার কারণে বন্যা হয়েছে, এই তথ্য সঠিক নয়। মন্ত্রকের ওয়েবসাইটেও এই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে।  

ভয়াবহ বন্যার কবলে বাংলাদেশের অন্তত পক্ষে আটটি জেলা। নোয়াখালী, কুমিল্লা, সিলেট, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-সহ একাধিক জেলা বন্যা প্লাবিত। জলবন্দি কয়েক লাখ মানুষ। উদ্ধার কাজে নামানো হয়েছে সেনা বাহিনীকে। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের অভিযোগ,  ভারতের একটি নদী বাঁধ থেকে ছাড়া জলের কারণে বাংলাদেশের জেলাগুলি প্লাবিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রকের পক্ষ থেকে এই অভিযোগের জোরালো আপত্তি জানানো হয়েছে। ত্রিপুরার বাঁধ থেকে জল ছাড়ার কারণে বাংলাদেশে বন্যা হয়নি, একথা স্পষ্ট জানানো হয় ভারত সরকারের তরফে। সরকারের তরফে প্রেস বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানানো হয়েছে, ত্রিপুরার ধলাই জেলায় গোমতী নদীর উপরে তৈরি ডম্বুর বাঁধ থেকে জল ছাড়ার কারণে বন্যা হয়েছে, এই তথ্য সঠিক নয়। মন্ত্রকের ওয়েবসাইটেও এই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে।  

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘ আমরা উল্লেখ করতে চাই, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত গোমতী নদীর অববাহিকা এলাকায় কয়েক দিন ধরে এই বছর সবথেকে বেশি বৃষ্টি হয়েছে।  বাংলাদেশের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে যে ত্রিপুরার গোমতী নদীতে ডম্বুর বাঁধ থেকে জল ছাড়ার কারণে বন্যা হয়েছে। এটা সঠিক তথ্য নয়। মূলত বাঁধের নীচে দিকে জলের প্রবাহের কারণেই বাংলাদেশে এই বন্যা হয়েছে।”

 ত্রিপুরা রাজ্যের পাহাড় থেকে নেমে আসা গোমতী নদী দুই দেশের মধ্যেই প্রবাহিত হচ্ছে। নদীর নিম্ন অববাহিকায় অবস্থিত বাংলাদেশ। ওই নদীর উপর যে বাঁধ রয়েছে সেটি বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে ১২০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রকের বক্তব্য, বাংলাদেশ সীমান্ত পর্যন্ত ওই ১২০ কিলোমিটারের মধ্যে তিনটি জায়গায় দুই দেশের যৌথ পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র আছে নদীর জলস্তরের দিকে নজর রাখার জন্য। বাংলাদেশ সরকার নিয়মিত এই সংক্রান্ত তথ্য পেয়ে থাকে।

কেন্দ্রের বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ডম্বুর বাঁধ-কে বন্যার কারণ বলে দোষারোপ করা হচ্ছে, ওই বাঁধ থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়। বাংলাদেশও ত্রিপুরার এই বাঁধ থেকে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পায়। 

কেন্দ্র জানিয়েছে, গত ২১ আগস্ট থেকে সমগ্র ত্রিপুরা জুড়ে ও সংলগ্ন বাংলাদেশের জেলাগুলিতে ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। ভারী বৃষ্টি হলে স্বাভাবিকভাবেই বাঁধ থেকে জল ছাড়া হয়। নদীর জলস্তর বাড়তেই ২১ আগস্ট দুপুর ৩টে নাগাদ বাংলাদেশ সরকারকে সেই তথ্য জানানো হয়। সন্ধে ৬টা নাগাদ বন্যার কারণে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়, যার ফলে বাংলাদেশের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা কঠিন হয়ে যায়। তারপরও ভারত সরকার অন্য পথে বাংলাদেশকে বন্যা ও জলস্তর বৃদ্ধি সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য জানানো হয়। ভারতের তরফে জানানো হয়েছে, জরুরি তথ্য সরবরাহের মাধ্যমে যোগাযোগ বজায় রাখা হচ্ছে।

ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে প্রবাহিত হয়েছে ৫৪টি  নদী। এই নদীগুলিতে বন্যা দুই দেশেরই সমস্যা এবং সেক্ষেত্রে দুই দেশের মিলিত সহযোগিতা ও উদ্যোগেই সমস্যার সমাধান সম্ভব বলে জানিয়েছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রক।