বিশ্বজুড়ে চোখ রাঙাচ্ছে মাঙ্কি পক্স। হু হু করে ছড়াচ্ছে এই ভাইরাস। পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে মাঙ্কি পক্সকে গ্লোবাল এমার্জেন্সি ঘোষণা করেছে ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন বা WHO। পাকিস্তান, বাংলাদেশেও এম পক্স আক্রান্তের হদিশ মিলেছে। সকলেই অপেক্ষা করছে এই ভাইরাসের ভ্যাকসিনের জন্য। এরই মধ্যে সুখবর শোনল সিরাম ইনস্টিটিউট।
এক সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যমকে সংস্থার সিইও আদার পুনেওয়ালা জানিয়েছেন, সিরাম ইনস্টিটিউট এখন অ্যান্টি এম পক্স ভ্যাকসিন তৈরির কাজে ব্যস্ত রয়েছে। এটি তৈরি হলে লক্ষ লক্ষ মানুষ উপকৃত হবেন। ভ্যাকসিন নিলে জীবনের ঝুঁকি অনেকটাই কমে যাবে। আশা করছি, আগামী এক বছরের মধ্যেই আপনারা সুখবর পাবেন।
আফ্রিকার ১০ দেশে ঝড়ের গতিতে ছড়িয়ে পড়ছে মাঙ্কি পক্স বা এম পক্স। আক্রান্তদের মধ্যে বড় অংশই অল্পবয়সি। আফ্রিকার ১০টি দেশে দশ হাজারের বেশি আক্রান্তে হদিশ মিলেছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে আগামী সপ্তাহ থেকে কঙ্গো-তে এম পক্স ভ্যাকসিন দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। গ্রেট ব্রিটেনেও এমপক্স ভ্যাকসিন দেওয়া হতে পারে।
২০২২ সালের পর এই নিয়ে দ্বিতীয় বার মাঙ্কি পক্স নিয়ে সতর্কতা জারি করেছে হু। ২০২২ সাল থেকে মোট ১১৬টি দেশে এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির সন্ধান মিলেছে। তবে যেটা নিয়ে সবচেয়ে বেশি চিন্তা তা হল, এই রোগের নতুন একটি স্ট্রেন, যা সাধারণত যৌন সংক্রমণ থেকে ছড়াচ্ছে।
হু এর মহা-পরিচালক টেড্রোস আধানম জানিয়েছেন, মাঙ্কি পক্সের সংক্রমণ ঠেকাতে সব দেশকে একত্রে কাজ করতে হবে। কঙ্গোর বিশাল জনগোষ্ঠী এই রোগে আক্রান্ত। সেখানকার মানুষ অন্য দেশে গেলে রোগ সংক্রমণের আশঙ্কা থাকছে। তাই সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।
এদিকে বিশ্বজুড়ে মাঙ্কি পক্স সংক্রমণ বাড়তে থাকায় দেশের বিমানবন্দর, স্থলবন্দর ও সীমান্ত কর্তৃপক্ষকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে সংক্রমণের খবর মেলায় সোমবার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক সমস্ত বিমানবন্দর এবং কর্তৃপক্ষের উদ্দেশে সতর্কবার্তা জারি করল।
কেন্দ্রের এক সূত্র জানিয়েছে, গত সপ্তাহে রাজ্য ও ন্যাশনাল সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোলের (এনসিডিসি) সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। এটি একটি সেলফ লিমিটেট ভাইরাস। কোভিডের সঙ্গে এমপক্সের কোনও সম্পর্ক নেই। নোডাল অফিসাররা ইতিমধ্যেই হাসপাতালে রয়েছেন। আইসিএমআরের ৩২টি কেন্দ্রে পরীক্ষার ব্যবস্থা রয়েছে। এম পক্সের উপসর্গ অনেকটা চিকেন পক্সের মতো।
গুটিবসন্তের একই গোত্রীয় ভাইরাস হলেও এম পক্স কম ক্ষতিকারক। প্রথমে এটি প্রাণী থেকে মানুষের মধ্যে সংক্রমিত হয়েছিল। কিন্তু এখন এটি মানুষ থেকে মানুষেও ছড়াচ্ছে। এই রোগে আক্রান্তদের প্রাথমিক লক্ষণগুলি হল – জ্বর, মাথাব্যথা, ফোলা, পিঠে এবং পেশিতে ব্যথা। আক্রান্ত ব্যক্তির একবার জ্বর উঠলে গায়ে ফুসকুড়ি দেখা দিতে পারে।