এক জাতি এক কার্ড। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সােমবার দিল্লিতে রেজিস্ট্রার জেনারেল অফ ইন্ডিয়া (আরজিআই) ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে, আধার, রেশন কার্ড, ড্রাইভিং লাইসেন্স এবং পাসপাের্টের ক্ষেত্রে একটি মাত্র কার্ড চালু করার প্রস্তাব দিয়েছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও জানান, ২০২১ সালের আদমসুমারীর তথ্য মােবাইলের মাধ্যমে সংগ্রহের ব্যবস্থা করা হবে। এই প্রথম আদমসুমারির সমগ্র বিষয়টি কাগজহীনভাবে ডিজিটাল পদ্ধতিতে সম্পাদিত হবে। একটি কার্ডের মাধ্যমেই আধার, পাসপাের্ট, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট, ড্রাইভিং লাইসেন্স, ভােটার কার্ড ইত্যাদি সকল সুবিধা পাওয়া যাবে এমন ব্যবস্থা করতে হবে।
উল্লেখ্য আরজিআই আদমসুমারীর তথ্য সংগ্রহকারী প্রধান সংস্থা। তিনি বলেন, ২০২১ সালে ডিজিটাল মাধ্যমে একটি অ্যাপের সাহায্যে আদমসুমারীর কাজ পরিচালনা করা হবে। এটাই হবে কাগজ থেকে ডিজিটাল ব্যবস্থায় পরিবর্তন। তিনি বলেন, স্মার্টফোনের মাধ্যমে জনগণনার তথ্য সংগ্রহের জন্য একটি অ্যাপ তৈরি করা হচ্ছে। সরকার ১২ হাজার কোটি টাকা খরচ করছে জনগণনা ও জাতীয় জনসংখ্য রেজিস্টার (এনপিআর) তৈরির জন্য। তিনি জানান, নতুন জনগণনা ব্যবস্থায় কোনও ব্যক্তির মৃত্যু হলে সংশ্লিষ্ট তথ্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে নথিভুক্ত হয়ে যাবে আরজিআইতে।
তিনি জানান, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক চলতি বর্ষের মার্চ মাসে এক বিজ্ঞপ্তি জারি করে ২০২১ সালের জনগণনা কার্যক্রম ২০২০ সালের ১ মার্চ থেকে শুরু করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জম্মু এবং কাশ্মীর, হিমাচল প্রদেশ এবং উত্তরাখণ্ডের জনগণনার সংখ্যাতত্ত্ব শুরু করতে হবে ১ অক্টোবর ২০২০ তারিখ থেকে। উল্লেখ্য শেষ জনগণনা হয়েছিল ২০১১ সালে, তখন দেশের জনসংখ্যা নথিভুক্ত হয় ১২১ কোটি।
শেষবার ২০১১ সালে জনগণনা হয়েছিল গােটা দেশজুড়ে। তার থেকে এখনও পর্যত দেশের জনসংখ্যা ১৩০ কোটি ছাড়িয়ে গিয়েছে বলেই অনুমান বিশেষজ্ঞদের। তবে বছর দুই পর অর্থাৎ ২০২১ সালে আদমসুমারি দরজায় দরজায় ঘুরে নয়, বরং সম্পূর্ণ ডিজিটাল পদ্ধতির মাধ্যমে হবে আর সেই গণনার প্রস্তুতি হিসেবে দেশের প্রত্যেক নাগরিকের জন্য একটি মাল্টিপারপাস ডিজিটাল আইডি কার্ডও তৈরি করা হবে। সেই কার্ডের মধ্যেই মজুত থাকবে ভােটার, আধার, পাসপাের্ট, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের মতাে পরিচয়পত্রের তথ্য। সােমবার দিল্লিতে এক অনুষ্ঠানে এমনটাই জানান কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী দেশের জনসংখ্যা ছিল ১২১ কোটি। ফলে দু’বছর পর যে গণনা হবে তা বিশ্বের সবথেকে বড় আদমসুমারি হবে বলে জানানাে হচ্ছে। এই প্রসঙ্গে এদিন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, “২০২১ সালের আদমসুমারির জন্য একটি মােবাইল অ্যাপ ব্যবহার করা হবে। যার দ্বারা কাগজপত্রের গণনাকে ডিজিটাল গণনায় রূপান্তরিত করা হবে। আধার, পাসপাের্ট, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট, ভােটার কার্ড, ড্রাইভিং লাইসেন্স এই সব তথ্যই ওই একটা কার্ডের মধ্যেই মজুদ থাকবে। সম্ভাব্য পদ্ধতি এটাই’।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও জানিয়েছে, যদি কোনও ব্যক্তির মৃত্যু হয় তবে অন্যান্য জায়গা থেকে ডেটা সংগ্রহ করে ওই অ্যাপ নিজের থেকেই জনসংখ্যা আপডেট করে দেবে। মূলত অ্যানড্রয়েড ফোনের জন্য এই অ্যাপ ডিজাইন করা হচ্ছে বলে জানান শাহ।
সূত্রের খবর, ডিজিটালভাবে এই জনগণনা করতে প্রায় ১২,০০০ কোটি টাকা খরচ হবে কেন্দ্রীয় সরকারের। ভারতের ১৪০ বছরের ইতিহাসে এই প্রথমবার দোরে দোরে না ঘুরে সােজাসুজি অ্যাপের মাধ্যমে গণনা করা হবে। এই বিরাট কর্মকাণ্ডে প্রায় ৩৩ লক্ষ মানুষকে নিয়ােজিত করা হবে। চলতি বছর মার্চ মাসেই কেন্দ্রের তরফে ঘােষণা করা হয়েছিল যে ২০২১ সালে পয়লা মার্চ থেকে জনগণনা শুরু হবে। সেইমতাে এদিন ডিজিটাল জনগণনার পদ্ধতির কথা ঘােষণা করলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
২০২১ সালের আদমসুমারিতে (সেনসাস ২০২১) মােবাইল অ্যাপ ব্যবহার করা হবে বলে জানালেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অমিত শাহ। দিল্লিতে এক অনুষ্ঠানে অমিত শাহ বলেন “২০২১ সালের আদমসুমারিতে একটি মােবাইল অ্যাপ ব্যবহার করা হবে। কাগজে কলমে সুমারি করার থেকে এবার ডিজিটাল সুমারিতে রূপান্তরিত করা হবে বিষয়টিকে। ২০১১ সালে ভারতের সর্বশেষ আদমসুমারিটি হয়েছিল যখন দেশের জনসংখ্যা ছিল ১২১ কোটি। এই বছরের মার্চ মাসে, কেন্দ্রীয় সরকার ঘােষণা করেছিল যে পরবর্তী আদমসুমারিটি ২০২১ সালের ১ মার্চ রেফারেন্সের তারিখ হিসাবে গণ্য হবে।
মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে যে, কেন্দ্রীয় সরকার আদমসুমারি আইন, ১৯৪৮ (১৯৪৮ সালের ৩৭) এর ৩ ধারা দ্বারা প্রদত্ত ক্ষমতার অধীনে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। জম্মু ও কাশ্মীর, উত্তরাখণ্ড এবং হিমাচল প্রদেশের তুষার-সীমান্ত অঞ্চলের জন্য, রেফারেন্স তারিখটি ২০২০ সালের অক্টোবরের প্রথম দিন হবে, ওই বিজ্ঞপ্তিতে একথাও বলা হয়েছে।