সূত্রের খবর, ব্রিটেনে আশ্রয় চেয়ে আবেদন জানিয়েছেন হাসিনা। কিন্তু বিদেশ দফতর থেকে এখনও পর্যন্ত কোনও সাড়া মেলেনি। ব্রিটেনের শাসক দল লেবার পার্টি হাসিনাকে আশ্রয় দিতে চায় না। তাদের বক্তব্য, হাসিনাকে আশ্রয় দিলে দেশে উত্তেজনা ছড়াবে।
ব্রিটেনে কমপক্ষে ৭০ হাজার বাংলাদেশির বাস, যাঁদের অধিকাংশই হাসিনা-বিরোধী। অনেকে আবার হাসিনার প্রতিপক্ষ খালেদা জিয়ার সমর্থক। খালেদা জিয়ার ছেলে তারিক রহমান দেশ ছেড়ে ব্রিটেনে নির্বাসনে রয়েছেন। হাসিনার পদত্যাগের দিন রীতিমতো উৎসব হয়েছে লন্ডনের ‘ইস্ট এন্ড’-এর ব্রিক লেনে। টাওয়ার হ্যামলেটের আশপাশের অঞ্চলেও লোকে ‘হাসিনা-মুক্ত স্বাধীন দেশ’ উদ্যাপন করেছেন। এ অবস্থায় ব্রিটিশ সরকার মনে করছে হাসিনাকে দেশে নিয়ে এলে জনমানসে ক্ষোভ বাড়তে পারে ।
রূপা সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, তাঁর ফোনের ইনবক্স সবসময়েই বাংলাদেশিদের মেসেজে ভরে রয়েছে। সকলেই দেশের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন। হাসিনার পদত্যাগের দিন রূপা নিজের এক্স হ্যান্ডলে লিখেছিলেন, ‘ওরা চলে গিয়েছে! যারা সমালোচনা গ্রহণ করতে পারে না, যারা নির্বাচন করতে দেয় না, টেলিযোগাযোগ ও ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়, এমন স্বৈরাচারী শাসকেরা চলে গিয়েছে। ভারতে লুকিয়ে রয়েছে। এই আতঙ্কের একনায়কতন্ত্র শেষ হয়েছে, আমি খুব খুশি।’
শুধু রূপা হক নন, বিদেশমন্ত্রী ডেভিড ল্যামিও হাসিনার বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন। তিনি বিবৃতি দিয়ে বলেছিলেন, ‘‘গত কয়েক সপ্তাহে যা ঘটেছে, তার পূর্ণাঙ্গ ও নিরপেক্ষ রাষ্ট্রপুঞ্জ-পরিচালিত তদন্ত বাংলাদেশের মানুষের প্রাপ্য। বাংলাদেশের মানুষ শান্তিপূর্ণ গণতন্ত্র পাক।’’
এই পরিস্থিতিতে অস্বস্তিতে হাসিনার বোনঝি টিউলিপ। তিনি হ্যাম্পস্টেড কেন্দ্রের প্রতিনিধি। এ অঞ্চলের বাসিন্দাদের বেশির ভাগই শ্বেতাঙ্গ ব্রিটিশ। টিউলিপ বেশ জনপ্রিয় নিজের কেন্দ্রে। জনপ্রিয়তার জন্য স্টার্মারের মন্ত্রিসভাতেও জায়গা পেয়েছেন তিনি। কিন্তু বাংলাদেশের পরিস্থিতি ও হাসিনার সঙ্গে পারিবারিক যোগ নিয়ে বেশ চাপে তিনি। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহম্মদ ইউনূসের সঙ্গেও ভাল সম্পর্ক নয় টিউলিপের। ফলে আদৌ হাসিনা ব্রিটেনে যেতে পারবেন করিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। ভারতেরই বা পরবতী পদক্ষেপ কি হবে, সে বিষয়টি নিয়েও চর্চা শুরু হয়েছে কূটনৈতিক মহলে।