• facebook
  • twitter
Monday, 25 November, 2024

মহিলাদের কেশ ও পোশাক নিয়ে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রীর মন্তব্যে রাজনৈতিক মহলে বিতর্কের ঝড়

শহরের চুল স্ট্রেট করা বা বয়কাট করা কিংবা জিন্স পরা মহিলাদের এই আন্দোলনে সামিল হতে দেখা যায় না

হাসিনাকে দেখে যাঁরা হাসছেন, তাঁদের হাসি বন্ধ করতে জানে তৃণমূল কংগ্রেসের নেতাকর্মীরা। তাঁরা ভাবছেন হাসিনার মতো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পদত্যাগ করে অন্যত্র চলে যাবেন। এই মাটিতে দাঁড়িয়ে যাঁরা এসব ভাবছেন, এবং আর জি কর নিয়ে আন্দোলন করছেন, সেই মাটি খুঁড়ে তাঁদের কবরে পাঠিয়ে তারপর তিনি অন্য রাজ্যে যাবেন। রবিবার সন্ধ্যায় দিনহাটা শহরের পাঁচ মাথার মোড়ে তৃণমূল কংগ্রেসের ডাকা এক সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে একথা বলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী ও দিনহাটার বিধায়ক উদয়ন গুহ। তিনি আর জি করের আন্দোলনকারীদের উদ্দেশ্যে এই হুঁশিয়ারি দেন। আর জি কর কাণ্ডে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে শাসকদলের এই সভায় বিরোধীদের কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন মন্ত্রী উদয়ন।

এই সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন দলের মহিলা সেলের জেলা সভানেত্রী সুচিস্মিতা দেব শর্মা, তৃণমূল কংগ্রেস দলের দিনহাটা ২ নং ব্লক সভাপতি দীপক কুমার ভট্টাচার্য, দিনহাটা শহর ব্লক সভানেত্রী মৌমিতা ভট্টাচার্য, কাউন্সিলর পার্থ নাথ সরকার, চঞ্চল সাহা, শিখা নন্দী প্রমুখ। সভায় উদয়ন গুহ বলেন, যখন গ্রামে-গঞ্জে মদ খেয়ে মানুষ মারা যায়, আইপিএল বেটিং খেলে সর্বশান্ত হয় গরিব পরিবারের মানুষ, ঘাম ঝরানো শ্রমিকের পয়সা লটারি টিকিটে শেষ হয়, কিংবা জুয়ার ঠেকে শেষ হয়, গরীবের শেষ সম্বলটুকু, তখন গ্রামের মহিলাদেরই দেখা যায়, ঝাঁটা হাতে তা প্রতিরোধ করতে। অথচ শহরের চুল স্ট্রেট করা বা বয়কাট করা কিংবা জিন্স পরা মহিলাদের এই আন্দোলনে সামিল হতে দেখা যায় না। কারণ শহরের মানুষ মদ খান না, তারা ড্রিংকস করেন বলে তিনি কটাক্ষ করেন। গ্রামের মানুষের দুঃখ দুর্দশার কথা বুঝে শহরের এই মহিলাদের দেখা যায় না। এ ধরনের আন্দোলনের কারণে এতে কোনও আবেগ নেই।

উদয়ন বলেন, সিবিআই হচ্ছে ফেল করা ছাত্র। এই সিবিআই ইতিপূর্বে রবীন্দ্রনাথের নোবেল উদ্ধার করতে পারেনি। কোচবিহারের চুরি যাওয়া মদনমোহনের অষ্টধাতুর মূর্তির কিনারা করতে পারেনি। প্রসঙ্গক্রমে উদয়ন গুহ বলেন, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চেয়েছিলেন, আর জি কর-এর বিষয়টি সিবিআই-এর হাতে তুলে দিতে। আর জি কর কাণ্ডের তদন্তের ভার বর্তমানে সেই সিবিআই-এর হাতে। সিবিআই তদন্তভার নেওয়ার পর ক’দিন কেটে গেলেও এখনও দোষীরা গ্রেফতার হয়নি। কাজেই বিচার চাইতে হলে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র দপ্তরের উপর চাপ সৃষ্টি করতে হবে। কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্র দপ্তর‌ই সিবিআই-কে পরিচালনা করেন বলে মন্ত্রী উদয়ন গুহ উল্লেখ করেন। রাজ্যের পুলিশ তো ২৪ ঘন্টার মধ্যে সঞ্জয় রায়কে গ্রেফতার করতে পেরেছিল।

এদিন উদয়ন গুহ তাঁর বক্তব্য প্রসঙ্গে বলেন, সিবিআই-এর কাজ হচ্ছে ভোট এলেই তৃণমূল নেতাকর্মীদের ভয় দেখানো। আর জি কর কাণ্ডে দোষীদের গ্রেপ্তার প্রসঙ্গে উদয়ন গুহ তাঁর বক্তব্যে প্রয়াত মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু ও বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের সময়কালের খুন ও ধর্ষণ নিয়ে একের পর এক ব্যর্থতার কথা তুলে ধরেন। সেই সব ক্ষেত্রে জ্যোতিবাবু কিংবা বুদ্ধবাবু কিন্তু পদত্যাগ করেননি বলে তিনি উল্লেখ করেন। এদিকে, দিনহাটা শহরের পাঁচ মাথার মোড়ে উদয়ন গুহর করা মন্তব্য নিয়ে রাজনৈতিক ও অরাজনৈতিক মহলে বিতর্কের ঝড় উঠেছে। সোমবার সন্ধ্যায় দিনহাটা শহরের হেমন্ত বসু কর্নার থেকে মহিলাদের এক বিরাট প্রতিবাদ মিছিল শহরের পাঁচ মাথার মোড়ের দিকে এগিয়ে যায়।