আরজি করে মহিলা চিকিৎসককে যৌন নির্যাতন ও খুনের ঘটনার প্রতিবাদে একট্ঠা বাংলা থেকে দিল্লির চিকিৎসক মহল। ঘটনার নৃশংসতা নাড়িয়ে দিয়েছে গোটা দেশকে। বাংলার রাজ্য সরকারের কাছে মৃতার জন্য ন্যায় দাবির পাশাপাশি চিকিৎসক মহলের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দাবি ‘সুরক্ষা’। এতদিন এই ঘটনার জেরে আন্দোলন মিছিল দেশব্যাপী আন্দোলন ও প্রতিবাদের মাঝেই এবার চিকিৎসকদের নিরাপত্তায় কড়া আইনের দাবিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি লিখলেন পদ্ম পুরস্কার পাওয়া ৭০ জন চিকিৎসক। পাশাপাশি এই নৃশংস ঘটনায় সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপের দাবি তুলেছেন তাঁরা।
মোদিকে উদ্দেশ্য করে চিঠিতে চিকিৎসকরা লিখেছেন, “সম্প্রতি কলকাতার আর জি কর মেডিক্যাল কলেজে ঘটে যাওয়া ভয়ঙ্কর ঘটনা নিয়ে গভীর উদ্বেগ ও গভীর যন্ত্রণার সাথে আপনাকে চিঠি লিখছি। আমাদের জাতির প্রধান হিসাবে, আমরা এই উদ্বেগজনক পরিস্থিতি মোকাবিলায় আপনার অবিলম্বে এবং ব্যক্তিগত হস্তক্ষেপ কামনা করছি। আরজি কর হাসপাতালে যা ঘটেছে তাতে স্পষ্ট যে এই ধরনের নৃশংসতা প্রতিরোধ করতে যত দ্রুত সম্ভব কড়া পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। দেশের সাংসদ, নীতি নির্ধারক সংস্থাগুলির কাছে আমাদের আবেদন অবিলম্বে এই বিষয়ে দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ নেওয়ার।’ চিকিৎসকদের তরফে আরও জানানো হয়েছে, ‘এই ধরনের ঘটনা রুখতে ২০১৯ সালে ‘দ্য প্রিভেনশন অফ ভায়োলেন্স অ্যাগেইনস্ট ডক্টরস, মেডিক্যাল প্রফেশনালস অ্যান্ড মেডিক্যাল ইনস্টিটিউশন বিল’ প্রস্তুত করা হয়েছিল। যা এখনও পর্যন্ত সংসদে পেশ হয়নি। চিকিৎসকদের দাবি, দেশের স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে যারা কাজ করছেন তাঁরা যাতে নির্ভয়ে রোগীদের পরিষেবা দিতে পারেন তার জন্য অবিলম্বে এই বিল পাশ করানো হোক।’
চিঠিতে দিল্লির অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ মেডিকেল সায়েন্সের প্রাক্তন পরিচালক, মেদান্ত দ্য মেডিসিটির চেয়ারম্যান ও পরিচালক রণদীপ গুলেরিয়া, মহাজন ইমেজিংয়ের প্রতিষ্ঠাতা নরেশ ত্রেহান, ফোর্টিস এসকর্টস হার্ট ইনস্টিটিউটের চেয়ারম্যান হর্ষ মহাজন, ড. অশোক শেঠ, ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চের প্রাক্তন মহাপরিচালক বলরাম ভার্গব এবং ইনস্টিটিউট অফ লিভার অ্যান্ড বিলিয়ারি সায়েন্সের ডিরেক্টর এস কে সারিন-এর মত প্রতিষ্ঠিত চিকিৎসকরা স্বাক্ষর করেছেন।
আরজিকর কাণ্ডে কলকাতা-সহ উত্তাল দেশ। ইতিমধ্যে ছাত্রীকে ধর্ষণ-খুন কাণ্ডে দোষীদের কঠোরতম শাস্তি এবং কর্মস্থলে মহিলাদের নিরাপত্তা চেয়ে শনিবার চিকিৎসক সংগঠনের তরফে দেশজুড়ে ২৪ ঘণ্টা কর্মবিরতির ডাক দেওয়া হয়েছিল।
গত ৮ অগস্ট মধ্যরাতে আরজিকরে নিজের কর্মস্থলের মধ্যেই নৃশংস ঘটনার মুখোমুখি হন দ্বিতীয় বর্ষের ডাক্তারি ছাত্রী। পরের দিন চারতলার সেমিনার হল থেকে তাঁর রক্তমাখা দেহ উদ্ধার করা হয়। ধর্ষণের পর খুন করা হয় তাঁকে। এই ধরনের নৃশংসতা রোধ করার জন্য কঠোর আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য মোদীকে অনুরোধ করেছেন সমাজের বিশিষ্ট এই চিকিৎসকরা।