সম্প্রতি রাজ্যের পরিবহন দফতর নিয়ে জরুরি বৈঠকে বসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। এরপরই দেখা গেল ‘সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী’তে পরিবহণ ব্যবস্থা নিয়ে একাধিক অভিযোগ জমা পড়েছে। এবার সেই অভিযোগের দ্রত সমাধান করার জন্য বিশেষ নির্দেশিকা জারি করলেন পরিবহণ দফতরের সচিব সৌমিত্র মোহন। তবে কি জানানো হল নির্দেশিকায়? নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, পরিবহণ দফতরের নোডাল আধিকারিকদের নিয়মিত অভিযোগ গ্রহণ করতে হবে এবং তা তাঁদের অধীনে থাকা দফতরে পাঠাতে হবে। এক কথায়, জমা পড়া অভিযোগগুলির দ্রত সমাধানেই এবার তোড়জোড় শুরু করল পরিবহন দফতর।
এখানেই শেষ নয়, নির্দেশিকায় আরও জানানো হয়েছে, নোডাল আধিকারিকেরাই মূলত অভিযোগ যাচাইয়ের দায়িত্বে থাকবেন। রিজিওনাল ট্রান্সপোর্ট অফিস বা আরটিও সংক্রান্ত অভিযোগ গ্রহণ করে তাঁরা সেগুলি মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে পাঠিয়ে দেবেন। তবে প্রয়োজনে তাঁরা নিজেদের মতামত দিতে পারবেন। মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে সেই অভিযোগ খতিয়ে দেখার পর নোডাল অফিসার তা আরটিও এবং অ্যাসিসট্যান্ট রিজিওনাল ট্রান্সপোর্ট অফিস বা এআরটিওকে পাঠাবে। প্রয়োজনে ওই দফতরের তরফে অভিযোগকারীর সঙ্গে যোগাযোগ করে কথা বলা হবে। এর পর সেই রিপোর্ট ডিরেক্টরেটের নোডাল আধিকারিককে পাঠানো হবে। তিনি তা পরখ করে প্রয়োজন মনে করলে মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে পাঠাতে পারেন। অভিযোগ নিয়ে প্রশ্ন থাকলে নোডাল আধিকারিক তা আবার আরটিও এবং এআরটিও-র কাছে পাঠাতে পারেন। কেন সেই অভিযোগ গ্রহণযোগ্য নয়, তাও জানাতে হবে। কোনও অভিযোগ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য যদি রাজ্য সরকারের কোনও নীতি প্রণয়নের প্রয়োজন হয়, সে ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় প্রস্তাব গ্রহণ করা হবে।
এবার একটু অতীত ঘেঁটে দেখা যাক। উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের জুন মাস থেকে ‘সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী’ কর্মসূচি শুরু করে রাজ্য সরকার। সেখানে রাজ্যবাসী নিজেদের অভিযোগ জানাতে পারেন। এই ‘সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী’তেই পরিবহণ ব্যবস্থা নিয়ে বহু অভিযোগ জমা পড়েছে বলে সূত্রের খবর। সম্প্রতি এই নিয়ে নবান্নে একটি বৈঠক হয়। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী, পরিবহণ দফতরের প্রতিমন্ত্রী দিলীপ মণ্ডল, রাজ্যে মন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম, কলকাতা পুলিশের বেশ কয়েকজন আধিকারিক। ওই বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বেশ কিছু পরামর্শ দেন। তার পরেই পরিবহণ সচিব সৌমিত্র এই নির্দেশিকা জারি করেছেন। এবার এই নির্দেশিকা মেনেই কাজ করবে সংশ্লিষ্ট পরিবহন দফতর।
প্রসঙ্গত, লোকসভা নির্বাচন মিটতেই রাজ্যের একাধিক সরকারি দফতরের কার্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্নবাণে বিদ্ধ হয়েছিল রাজ্যের পরিবহন দফতরও। সম্প্রতি পরিবহণ দফতরের রিভিউ মিটিং থেকে একাধিক বড় প্রশ্ন তুলেছিলেন মমতা। পরিবহন সংক্রান্ত সমস্যার দ্রুত সমাধানের নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি। এবার সেই নির্দেশ মতোই তৎপর হলেন পরিবহণ দফতরের সচিব সৌমিত্র মোহন। তাঁর ঘোষিত বিশেষ নির্দেশিকা মেনেই এবার চলবে পরিবহন দফতর।