আরজি কর মেডিক্যালের তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের সুবিচারের দাবিতে ১২ ঘণ্টা বন্ধ ডেকেছিল এসইউসিআই। পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী এদিন এসইউসিআইয়ের জমায়েত ঘিরে ধুন্ধুমার কাণ্ড বেঁধে গেল হাজরা মোড়ে। বন্ধ সমর্থকদের টেনে-হিঁচড়ে তোলা হলো প্রিজন ভ্যানে।
শুক্রবার সকাল ১১টা নাগাদ হাজরা মোড়ে বন্ধের সমর্থনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন এসইউসিআইয়ের কর্মীরা। আর জি করের মৃতা চিকিৎসকের খুন ও ধর্ষণে জড়িত দোষীদের উপযুক্ত শাস্তির দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন সংগঠনের কর্মীরা।
তারপর হাজরা মোড়ে শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী রোডের উপর টালিগঞ্জের দিক থেকে আশুতোষ কলেজের দিকে এগোতে থাকে মিছিল। কিন্তু পুলিশের তরফ থেকে আগেই, ব্যারিকেড দিয়ে রাস্তা ঘিরে রাখা হয়েছিল। পুলিশ আন্দোলনকারীদের রাস্তা আটকাতেই, উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়।
পুলিশের ব্যারিকেট ভেঙে বন্ধ সমর্থকরা এগিয়ে যেতে চেষ্টা করেন। কিছু দূর এগোতেই, তাদের ফের বাধা দেয় পুলিশ। তখনই আন্দোলনকারী এবং পুলিশের মধ্যে ধস্তাধস্তি বেঁধে যায়। এরপর বিক্ষোভরত এসইউসিআই কর্মীদের গ্রেফতার করা হয়। তাঁদের টেনে-হিঁচড়ে, চ্যাংদোলা করে বাসে এবং প্রিজন ভ্যানে তোলা হয়। তারপর ধৃতদের লালবাজারের উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়া হয়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় জনা পঞ্চাশ এসইউসিআই কর্মী-সমর্থককে গ্রেফতার করা হয়েছে।
ওদিকে এদিন দুপুরে একই দাবিতে শ্যামবাজারে ধরনায় নামে বিজেপি। সেখানেও পুলিশের সঙ্গে বিজেপির খণ্ডযুদ্ধ বেঁধে যায়। শুধু শ্যামবাজার নয়, বিজেপির ডাকে এদিন বেলা ২টো থেকে কলকাতার বিভিন্ন প্রান্তে পথ অবরোধ হয়েছে। এমনকী, অভিযোগ উঠেছে, শ্যামবাজারে বিজেপির ধরনামঞ্চ ভেঙে দেয় পুলিশ। এদিন বিজেপি নেতা-কর্মীরা সেখানে ধরনায় বসার চেষ্টা করতেই, বিজেপি নেতাদের টেনে হিঁচড়ে গ্রেফতার করে নিয়ে যান পুলিশ আধিকারিকরা। এর পর ওই জায়গায় ধরনায় বসতে চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে বিজেপি।
উল্লেখ্য, আরজি করে নিহত মহিলা চিকিৎসককে সুবিচার দেওয়ার দাবিতে শুক্রবার দুপুর থেকে শ্যামবাজারে ধরনায় বসবে বলে জানিয়েছিল বিজেপি। দলের এ কথা জানিয়েছিলেন দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। বৃহস্পতিবার রাত থেকে সেই কর্মসূচির জন্য মঞ্চ বাঁধার কাজ শুরু হয়। অভিযোগ, অনুমতি নেই, এই কারণ দেখিয়ে এদিন সকালে এসে সেই মঞ্চ ভেঙে দিয়ে যায় পুলিশ। বেলা ১টা নাগাদ শ্যামবাজারে জড়ো হন বিজেপি নেতাকর্মীরা। ফের মঞ্চ বাঁধার চেষ্টা করেন তাঁরা। সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের বাঁধা দেয় পুলিশ। এই নিয়ে পুলিশ ও বিজেপি কর্মীদের মধ্যে ধস্তাধস্তি বেধে যায়।
সেখানে থাকা বিজেপি নেতাকর্মীদের টেনে হিঁচড়ে প্রিজন ভ্যানে তোলে পুলিশ। পুলিশের বাধার মুখে ক্ষোভে ফেটে পড়েন বিজেপি নেতারা। এই ঘটনার পর পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে বিজেপি।
এবিষয় রুদ্রনীল বলেন, ‘আমাদের বাধা দিয়ে রুখবে ভাবছে। মানুষ জেগে উঠেছে। তারা রাতেও পথে নামছে। এবার এদের পতন আসন্ন।’
পুলিশ সূত্রে খবর, রুদ্রনীল ঘোষসহ প্রায় ১৫ জন বিজেপি নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্য দিকে ,শ্যামবাজারে ধরনায় বসার অনুমতি চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেছে বিজেপি।