ফের হিন্ডেনবার্গকে হাতিয়ার করে বিজেপিকে ঘিরতে প্রস্তুত বিরোধী শিবির কংগ্রেস। হিন্ডেনবার্গের নয়া অভিযোগকে অস্ত্র করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে তথা বিজেপি সরকারকে তুলোধনা করতে কংগ্রেস বিক্ষোভের পথে হাটঁতে শুরু করেছে। মঙ্গলবার দল ঘোষণা করেছে, আগামী ২২ অগস্ট, বৃহস্পতিবার দেশব্যাপী বিক্ষোভ দেখানো হবে। সেই প্রতিবাদ-বিক্ষোভে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অফ ইন্ডিয়ার চেয়ারপার্সন মাধবী পুরী বুচের ইস্তফা এবং আদানির সঙ্গে সেবির সম্পর্ক নিয়ে যৌথ সংসদীয় কমিটির তদন্তের দাবি জানানো হবে।
উল্লেখ্য, হিন্ডেনবার্গের নয়া তির হানার পর কংগ্রেস ও ইন্ডিয়া জোট শরিকরা মোক্ষম অস্ত্র পেয়েছে। খোদ রাহুল গান্ধি এনিয়ে তোপ দাগেন মোদি সরকারকে। রাহুলের তোপের পরেই বাজারে রে-রে করে নেমে পড়েন বিজেপি নেতারাও। এনিয়ে গত দুদিন ধরে রাজধানীর রাজনীতি সরগরম রয়েছে।
এদিন দলের সাধারণ সম্পাদক, প্রদেশ সভাপতি এবং রাজ্যগুলির দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে। সেই বৈঠকে কিছুদিনের মধ্যে হতে চলা বেশ কয়েকটি রাজ্যের বিধানসভা ভোট, উপনির্বাচন, সাংগঠনিক কাঠামো সহ বেশকিছু জাতীয় বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।
বৈঠক শেষে খাড়গে এক এক্সবার্তায় জানান, সেবির সঙ্গে আদানির আঁতাঁত নিয়ে ধাক্কা দেওয়া তথ্যের পূর্ণাঙ্গ তদন্ত প্রয়োজন। শেয়ার বাজারে টাকা খাটানো ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের টাকা জলে চলে যাবে তা হতে পারে না। মোদী সরকারের উচিত অবিলম্বে সেবির চেয়ারপার্সনের পদত্যাগ দাবি করা। এবং এ বিষয়ে যৌথ সংসদীয় কমিটির হাতে তদন্তভার দেওয়ার দাবি জানান খাড়্গে।
বৈঠকের সারবত্তা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে প্রবীণ নেতা কেসি বেণুগোপাল বলেন, দল ঠিক করেছে আগামী ২২ অগস্ট সেবির চেয়ারপার্সনের পদত্যাগ দাবি এবং জেপিসি চেয়ে দেশজুড়ে আন্দোলনে নামা হবে।
দেশের শেয়ার বাজারের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলায় রাহুল গান্ধীকে সোমবার তুলোধনা করে বিজেপি। প্রসঙ্গত, সম্প্রতি মার্কিন অর্থবাজার সংক্রান্ত বিশেষজ্ঞ সংস্থা হিন্ডেনবার্গ ভারতে বিরাট কিছু ঘটতে চলেছে বলে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করায় ফের সরব হন কংগ্রেস সাংসদ রাহুল। রবিবার রাতে হিন্ডেনবার্গ-আদানি ইস্যু নিয়ে গতবছর সংসদে ঝড় তোলা নেতা নতুন করে বিজেপিকে নিশানা করেন। তারই জবাবে বিজেপি নেতা অমিত মালব্য এক্সবার্তায় নিন্দা করেন রাহুলের।
মালব্য বলেন, বিরোধী দলনেতার প্রচেষ্টা দেশের অর্থনীতির আস্থা ও ভরসাকে বিনষ্ট করে। যা রাহুল গান্ধীর প্রকৃত উদ্দেশ্য। এই প্রচেষ্টা ভারতের অর্থনীতিকে ধ্বংস করা ছাড়া আর কিছু নয়, বলেন মালব্য। তিনি আরও বলেন, হিন্ডেনবার্গের শেয়ার বাজারে উত্থান-পতনের অভিযোগ নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট নিয়োজিত বিশেষজ্ঞ কমিটি জানিয়ে দিয়েছিল যে, ওই অভিযোগের কোনও সারবত্তা মেলেনি। তা সত্ত্বেও রাহুল গান্ধী এই ধরনের অভিযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন।
মালব্যর মতে, ২০২৪ সালের ৩ জানুয়ারি দেশের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বে সু্প্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ ছিল স্টক মার্কেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অফ ইন্ডিয়ার দ্বারা কোনও ইচ্ছাকৃত বা সজ্ঞানে আইন ভঙ্গ হয়নি। এরপরেও রাহুল কীভাবে এ ধরনের অভিযোগ তুলতে পারেন, জবাব চেয়েছেন মালব্য। প্রসঙ্গত, রাহুল বলেছেন, হিন্ডেনবার্গের অভিযোগ সেবির বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে এবং সুপ্রিম কোর্ট যদি স্বেচ্ছা উদ্যোগে এ বিষয়ে ফের একবার তদন্তের নির্দেশ দেয়।