মঙ্গলবার জোড়া প্রকল্পের উদ্বোধন করেন রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষ। বারাসত ১ নম্বর ব্লকের পশ্চিম খিলকাপুর এবং ইছাপুর নীলগঞ্জ পঞ্চায়েতে সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট প্রকল্পের উদ্বোধন করেন রথীন। উল্লেখ্য, কয়েক দিন আগেই পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের টাকার বকেয়া কাজ দ্রুত শেষ করার নির্দেশ দিয়েছিল রাজ্য পঞ্চায়েত দফতর। এরপরেই নড়েচড়ে বসেন উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার প্রশাসনের কর্তারা। জেলার প্রতিটি ব্লক আধিকারিককে রাজ্য সরকারের প্রকল্পের বকেয়া কাজ আগামী ১৫ আগষ্টের মধ্যে শেষ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন উত্তর ২৪ পরগনা জেলার জেলাশাসক। সেই সূত্রেই মঙ্গলে জোড়া প্রকল্পের উদ্বোধন করেন খাদ্যমন্ত্রী। এমনকি বুধবার অর্থাৎ আজও কোটরা পঞ্চয়েতে এই প্রকল্পের কাজ শুরু হবে বলেই জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। এদিন খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষ এই প্রকল্পের উদ্বোধন করে বলেন, নোংরা-আবর্জনার বিষয়টি এখন গোটা দুনিয়ার কাছেই গভীর সমস্যা। গ্রামীণ এলাকা শহরের কাছাকাছি চলে এসেছে। ফলে গ্রামীণ এলাকার নোংরা আবর্জনা সঠিক ভাবে সংগ্রহ করার জন্যই পশ্চিম খিলকাপুর এবং ইছাপুর নীলগঞ্জ পঞ্চায়েতে এদিন দুটি সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট প্রকল্প চালু করা হল। এই প্রকল্প সচল রাখতে না পারলে সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েতের ব্যর্থতা হিসেবেই চিহ্নিত হবে।
পশ্চিম খিলকাপুর পঞ্চায়েতের নেতাজী পল্লি এলাকায় সাড়ে সাত কাটা জমির উপর তৈরি হয়েছে সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট প্রকল্প। প্রাথমিক ভাবে পঞ্চায়েতের সাতটি বুথ এলাকা নিয়ে এই প্রকল্প শুরু হয়েছে। এর ফলে প্রায় ১৫ হাজার মানুষ উপকৃত হবেন এই প্রকল্পের মাধ্যমে। এদিনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে খাদ্যমন্ত্রী ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা শাসক(জেলা পরিষদ) পিনাকী রঞ্জন প্রধান, বারাসত ১ নং ব্লকের বিডিও রাজীব দত্ত চৌধুরী, পঞ্চায়েত প্রধান সবিতা মন্ডল সহ অন্যান্যরা। এদিন পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে পচনশীল এবং অপচনশীল নোংরা আবর্জনা ফেলার জন্য নীল এবং সবুজ বালতি নেতাজী পল্লীর প্রতিটি বাড়ির মহিলাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার মাধ্যমে প্রতিটি বাড়ি থেকে ময়লা ও আবর্জনা সংগ্রহ করার পর পশ্চিম খিলকাপুরের এই প্রকল্পে ফেলা হবে। ইতিমধ্যেই বাড়ির আবর্জনা সংগ্রহের জন্য চারটি গাড়ি চালু করেছে পঞ্চায়েত। পরবর্তীতে পচনশীল সামগ্রী থেকে জৈব সার তৈরির পরিকল্পনাও রয়েছে পঞ্চায়েতের। তবে এই প্রকল্পে প্রবেশের রাস্তা ও বাউন্ডারি সহ সাব মার্শাল বসানোর কাজ এখনও বাকি। সেগুলোও দ্রুত শেষ করা হবে বলেই পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গেছে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, পশ্চিম খিলকাপুর পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দারা বাড়ির নোংরা-আবর্জনা যত্রতত্র ফেলে দিতেন বলেই অভিযোগ। এর ফলে পরিবেশ অপরিচ্ছন্নতা ও দূষণের পাশাপাশি ডেঙ্গি সহ বিভিন্ন পতঙ্গবাহী রোগের সংক্রমণ ঘটত। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট প্রকল্পকে এক্ষেত্রে গুরুত্ব দিয়েছেন। এক কথায়, পরিবেশ দূষণমুক্ত করার পথে হেঁটেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাই পুরসভার পাশাপাশি পঞ্চায়েত এলাকাতেও সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট চালু করতে উদ্যোগী হয়েছেন তিনি। এদিন রথীনের পাশাপাশি অতিরিক্ত জেলাশাসক পিনাকী রঞ্জন প্রধান এ প্রসঙ্গে বলেন, বাড়ির আবর্জনা আলাদা আলাদা বালতিতে রাখার ক্ষেত্রেও পঞ্চায়েতের বাসিন্দাদের সচেতন হওয়াটা জরুরি। পশ্চিম খিলকাপুর পঞ্চায়েতের প্রধান সবিতা মন্ডল বলেন, আগামী দিনে আরও দু-তিনটি এই ধরনের প্রকল্প চালু করা হবে, তাহলেই গোটা পঞ্চায়েতের কোনায় কোনায় পৌঁছানো সম্ভব হবে।