বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন নিয়ে সরব হলেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান মহম্মদ ইউনুস। তিনি সংখ্যালঘুদের উপরে হামলার ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন। ইউনুস বলেন, ‘সংখ্যালঘুদের উপরে এই হামলা কখনই সমর্থন করা যায় না। এটি নির্মম।’ তিনি আরও বলেন, ‘সংখ্যালঘুরা কি আমাদের দেশের নাগরিক নয়? তাঁরা আমার ভাই। আমরা এক সঙ্গে লড়েছি এবং আমরা এক সঙ্গেই বাঁচব।’
প্রসঙ্গত হাসিনার পদত্যাগের এক সপ্তাহেও শান্ত হল না বাংলাদেশ। এখনও সেই অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি। চারিদিকে ঘটছে হিংসার ঘটনা। কোটা সংস্কার করার পরেও হাসিনার পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনকারীরা হামলাকারীর ভূমিকা নিতে শুরু করে। বিক্ষোভ দমন করতে গিয়ে ফের মৃত্যু বাড়তে থাকে। আন্দোলনের নামে দেশজুড়ে শুরু হওয়া সন্ত্রাস দমনে লাশের মিছিল দেখতে আগ্রহী ছিলেন না শেখ হাসিনা। সেজন্য গত ৫ আগস্ট তাঁর সরকারি আবাস ‘গণভবন’-এ যখন হামলা চালাতে এগিয়ে আসে আন্দোলনকারীরা, তখন তাঁকে ইস্তফা দিয়ে দেশত্যাগের জন্য চাপ আসতে থাকে। তাঁকে আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগ তো দূরের কথা, তিনি দেশবাসীর উদ্দেশ্যে ভাষণ দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সেই সুযোগ দেওয়া হয়নি। এমনকি তাঁর নিজের অতি প্রয়োজনীয় জিনিসগুলিও সঙ্গে নেওয়ার সুযোগ পান নি। সেনা প্রধানের সামনে ইস্তফা দিয়েই এক কাপড়ে দেশ ছাড়তে হয় দেশের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রীকে।
ইতিমধ্যে সেদেশে গঠিত হয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। সেই সরকারের প্রধান নোবেল জয়ী মহম্মদ ইউনুস। তা সত্ত্বেও আন্দোলনকারী ও সন্ত্রাসবাদীদের নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ বর্তমান বাংলাদেশ সরকার। দেশজুড়ে সংখ্যালঘুরা আক্রান্ত হচ্ছেন প্রতিনিয়ত। এরই প্রতিবাদে শনিবার পথে নামেন সংখ্যালঘুরা। এদিন লক্ষাধিক সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানায়। রাজধানী ঢাকা, চট্টগ্রাম-সহ একাধিক জায়গায় তাঁদের ঐক্যবদ্ধ প্রতিবাদ মিছিল দেখা গিয়েছে। হাসিনা দেশ ছাড়ার পরে হিন্দু-সহ বিভিন্ন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর ২০০টিরও বেশি অত্যাচারের অভিযোগ উঠেছে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের একাধিক জায়গায় বহু হিন্দু মন্দির ভেঙে দেওয়া হয়েছে। আক্রান্ত হয়েছেন শতাধিক হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ। সেইসব ভিডিও ভাইরাল হয়েছে বাংলাদেশে। এমনকি কাঁটাতারের গন্ডি টপকে সেই নৃশংস অত্যাচারের বিভিন্ন ভিডিও ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক মাধ্যমের দৌলতে। এইসব হিংসার মদত জোগাতে শুরু করেছে জামাতপন্থীরা। এমনটাই সূত্রের খবর। আর প্রতিবাদেই একদিকে যেমন আওয়ামী লীগ রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ শুরু করেছে, ঠিক তেমনি সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ও প্রকাশ্যে প্রতিবাদ মিছিল শুরু করেছে। শনিবার এই প্রতিবাদ মিছিলে তাঁদের সঙ্গে শামিল হন বহু ছাত্র ও মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষও। প্রায় সাত লক্ষেরও বেশি মানুষ এই প্রতিবাদ মিছিলে অংশ নিয়েছিল বলে জানা গিয়েছে।