নিজস্ব প্রতিনিধি: মিটেছে লোকসভা নির্বাচন এবং একাধিক কেন্দ্রের উপনির্বাচনও। এবার পরিকল্পনা মাফিক, বুধের দুপুরে রাজ্য মন্ত্রিসভায় ছোট রদবদল করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পার্থ ভৌমিকের হাতে থাকা সেচ দফতরের দায়িত্ব পেলেন সবংয়ের বিধায়ক মানস ভুঁইয়া। অর্থাৎ দায়িত্ব বাড়ল মানসের। জল সম্পদ ও উন্নয়ন দফতরের সঙ্গে এবার থেকে সেচ দফতরও সামলাবেন তিনিই।
প্রসঙ্গত, পার্থ বর্তমানে ব্যারাকপুরের সাংসদ। অন্যদিকে, রেশন দুর্নীতি মামলায় জেলবন্দি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ওরফে বালুর হাতে এক সময়ে থাকা শিল্প পুনর্গঠন দফতরের দায়িত্ব পেলেন মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। এবার তথ্য প্রযুক্তি দফতরের সঙ্গে শিল্প পুনর্গঠন দফতরও সামলাবেন বাবুল। পাশাপাশি রদবদল হল মন্ত্রী গোলাম রব্বানির দায়িত্বও। তাঁর হাত থেকে নিয়ে নেওয়া হয়েছে পরিবেশ দফতর। সেই দফতর গিয়েছে অর্থ দফতরের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের হাতে। সুতরাং, চন্দ্রিমার হাতেও রইলো দুই দফতরের দায়িত্ব। রব্বানি পেলেন অচিরাচরিত শক্তি দফতর। এবার প্রশ্ন হল, সম্প্রতি ফাঁকা হওয়া কারা দফতরের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন কে? বেশ কয়েকটি দফতরে রদবদল করা হলেও সম্প্রতি মন্ত্রিপদ থেকে ইস্তফা দেওয়া অখিল গিরির কারা দফতরের দায়িত্ব আপাতত কেউকেই দেওয়া হল না। নবান্ন সূত্রের খবর, ওই দফতর আপাতত মুখ্যমন্ত্রী নিজের হাতেই রাখছেন।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, কয়েকদিন আগে এক মহিলা বনাধিকারিকের উদ্দেশে বিতর্কিত মন্তব্য করে দল ও সরকারের রোষের মুখে পড়েছিলেন অখিল। এরপর দলের নির্দেশ মেনেই কারা দফতরের মন্ত্রিপদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন পূর্ব মেদিনীপুরের রামনগরের বিধায়ক। তখন থেকেই জল্পনা তৈরি হয়, কারা দফতরের দায়িত্ব কে পাবেন, তা নিয়ে। মঙ্গলবারই মন্ত্রিপদে অখিলের ইস্তফা গ্রহণ করে রাজভবন। অন্যদিকে নবান্ন সূত্রে খবর, গত ১৭ জুলাই রাজ্য মন্ত্রিসভায় রদবদল সংক্রান্ত বিষয়ে রাজ্যপালের অনুমতি চেয়ে ফাইল পাঠানো হয়েছিল রাজভবনে।
তবে রাজভবন এতদিন তাতে অনুমতি দেয়নি। সূত্রের খবর, মঙ্গলবার সেই ফাইলে অনুমোদন দিয়েছেন রাজ্যপাল। ফলে আর টালবাহানা না করে দ্রুত মন্ত্রিসভায় রদবদল করে ফেললেন মমতা। বুধবার মন্ত্রিসভার বৈঠকের পরই এই রদবদল প্রকাশ্যে আসলো। কারা দফতরের দায়িত্ব মমতা রাখলেন নিজের হাতেই। পাশাপাশি, জ্যোতিপ্রিয় গ্রেফতার হওয়ার পর তাঁকে মন্ত্রিসভা থেকে সরিয়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। তাঁর হাতে থাকা বন দফতরের দায়িত্ব সেই সময় ওই দফতরেরই প্রতিমন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদাকে দেওয়া হয়েছিল। আর শিল্প পুনর্গঠন দফতরটি নিজের হাতে রেখেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এবার মমতা সেই দফতরের দায়িত্ব দিলেন বাবুলকে। মোটের উপর নির্যাস হল, মন্ত্রিসভার সদস্যদের মধ্যেই দফতরের অদলবদল হয়েছে। অর্থাৎ, এক জনের দফতর অন্য আর একজনকে দেওয়া হয়েছে। নতুন কোনও মুখ এবার মন্ত্রিসভায় আনা হল না। এক্ষেত্রে দেখা গেল, মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য এবং বাবুল সুপ্রিয়র দায়িত্ব বৃদ্ধি পেল।