কাঠমাণ্ডু, ৭আগস্ট– সেই বুধবার, অকুৎস্থল সেই নেপালই। আবার নেপালের আকাশে ভেঙে পড়া কপ্টারের কালো ধোঁয়া। কারণ সেই প্রতিকূল আবহাওয়া। ওড়ার মাত্র ৩ মিনিটের মধ্যেই শেষ যাত্রা। পাহাড়ের গায়ে ধাক্কা খেয়ে ভেঙে পড়ল কাঠমাণ্ডু থেকে রওয়ানা দেওয়া হেলিকপ্টারটি। হেলিকপ্টারে থাকা সকল যাত্রীরই মৃত্যু হয়েছে বলে খবর। উদ্ধারকাজ চলছে।
বুধবার দুপুরে নেপালের কাঠমান্ডু থেকে কপ্টারটি রওনা দিয়েছিল। গন্তব্য ছিল রসুয়া। তার মাঝে নুয়াকোট জেলার সূর্যচৌর এলাকায় পাহাড়ের সঙ্গে ওই কপ্টারের সংঘর্ষ হয়। আবহাওয়া প্রতিকূল থাকার কারণে এই দুর্ঘটনা বলে প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে। যান্ত্রিক ত্রুটির সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
নেপালের স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, দুর্ঘটনাগ্রস্ত বিমানটি এয়ার ডাইন্যাস্টি নামক নেপালি বিমান সংস্থার। কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন বিমানবন্দর থেকে বুধবার দুপুর ১টা ৫৪ মিনিটে উড়েছিল কপ্টারটি। সূর্যচৌরে পৌঁছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তার সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ওড়ার মাত্র তিন মিনিটের মধ্যেই কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কপ্টারের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল। কিছুতেই ওই কপ্টারের সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছিল না। এর পরেই খবর আসে, পাহাড়ে ধাক্কা খেয়েছে এয়ার ডাইন্যাস্টির কপ্টারটি। তাতে চার জন ছিলেন। তাঁদের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর। সূর্যচৌরে পৌঁছে গিয়েছে একাধিক উদ্ধারকারী দল।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের ২৪ জুলাই বুধবারই নেপালের এই ত্রিভুবন বিমানবন্দর থেকে উড়েই দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিল সূর্য এয়ারলাইন্সের একটি বিমান। তাতে মোট ১৯ জন ছিলেন। পাইলট ছাড়া সকলেরই মৃত্যু হয় ওই ঘটনায়। আবহাওয়া খারাপ থাকার কারণে দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিল বিমানটি। সূর্য এয়ারলাইনসের একটি বিমান ‘টেক অফ’-এর কিছু ক্ষণের মধ্যেই দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। আগুন ধরে যায় ক্রু এবং যাত্রী-সহ মোট ১৯ জনকে নিয়ে যাত্রা শুরু করা ওই বিমানটিতে। কালো ধোঁয়ায় ঢেকে যায় বিমানটি। ছুটে আসেন বিমানবন্দরের কর্মী এবং নিরাপত্তারক্ষীরা। তড়িঘড়ি শুরু হয় উদ্ধারকাজ। আপাতত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বিমানবন্দরের পরিষেবা।
বুধবার সকালে যখন ওই বিমানটি যাত্রা শুরু করে তখন আবহাওয়া খারাপ ছিল। ‘টেক অফ’-এর খানিক ক্ষণ পরেই আগুন ধরে যায় যাত্রিবাহী বিমানটিতে। তড়িঘড়ি উদ্ধারকাজ শুরু হয়। তাতে বিমানে থাকা বেশ কয়েক জনকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়। উদ্ধার করা হয় বিমানচালককেও। ওই ঘটনায় বিমানচালক মণীশ শাক্যক ছাড়া বাকি সব যাত্রীর মৃত্যু হয়।
সেই ঘটনায় সাউথ এশিয়া টাইমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, রানওয়ে থেকে পিছলে যায় বিমানটি। তাতেই এই বিপত্তি ঘটে।
২০১০ সাল থেকে একের পর এক বড় বিমান দুর্ঘটনা হয়েছে নেপালে। গত ১৪ বছরে অন্তত ১২টি এমন দুর্ঘটনা রয়েছে, যাতে অনেক প্রাণহানীর ঘটনা ঘটেছে। তার সঙ্গে যোগ হল বুধবারের বিমান দুর্ঘটনা। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ইয়েতি এয়ারলাইনসের একটি বিমান ওড়ার পরে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। আগুন ধরে গিয়ে পোখারায় পড়ে বিমানটি। সব মিলিয়ে ৭২ জন ছিলেন ওই বিমানটিতে। তাঁরা সবাই মারা যান।