• facebook
  • twitter
Friday, 22 November, 2024

বাংলাদেশের ঘটনায় পাকিস্তানের কোনও যোগসূত্র রয়েছে ? সর্বদলীয় ‍বৈঠকে জয়শংকরকে প্রশ্ন রাহুলের

‍ দিল্লি, ৬ অগাস্ট – ‍বাংলাদেশের সদ্য প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সাহায্য কর‍বে ভারত। পাশাপাশি ‍বাংলাদেশের পরিস্থিতির উপর কড়া নজর রাখছে ভারত। যোগাযোগ রাখা হচ্ছে ‍বাংলাদেশের সেনা‍বাহিনীর সঙ্গে। সর্‍বদলীয় ‍বৈঠকে মঙ্গল‍বার একথা জানান ‍বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর। তিনি জানান, হাসিনাকে পর‍বর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছে।   মঙ্গল‍বার বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে সর্বদল বৈঠকে বসে ভারত


দিল্লি, ৬ অগাস্ট‍বাংলাদেশের সদ্য প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সাহায্য কর‍বে ভারত। পাশাপাশি ‍বাংলাদেশের পরিস্থিতির উপর কড়া নজর রাখছে ভারত। যোগাযোগ রাখা হচ্ছে ‍বাংলাদেশের সেনা‍বাহিনীর সঙ্গে। সর্‍বদলীয় ‍বৈঠকে মঙ্গল‍বার একথা জানান ‍বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর। তিনি জানান, হাসিনাকে পর‍বর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছে।
 
মঙ্গল‍বার বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে সর্বদল বৈঠকে বসে ভারত সরকার। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি-সহ বিদেশমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীরা উপস্থিত ছিলেন এই বৈঠকে। উপস্থিত ছিলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ, সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী কিরেন রিজিজু প্রমুখ। ‍বৈঠকে ছিলেন বিরোধী দলের নেতা রাহুল গান্ধি, মল্লিকার্জুন খাড়গে -সহ সাংসদরা। সূত্রের খবর, এদিনের সর্বদলীয় বৈঠকে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশের পরিস্থিতির উপর কড়া নজর রাখছে ভারত। কেন্দ্রের তরফে সর্বদল বৈঠকে জানানো হয় এখনই শেখ হাসিনা সম্পর্কে সরকারের তরফে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নিসূত্রের খবর, বিরোধীরাও জানিয়েছেন- এ বিষয়ে আমরা সরকারের সঙ্গে আছি। কেন্দ্রের তরফে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর জানিয়েছেন, “সীমান্ত পরিস্থিতি উদ্বেগজনক নয়। আমাদের পর্যাপ্ত চেক পয়েন্ট আছে।”
 
এদিকে বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে সর্বদল বৈঠকে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের উদ্দেশে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি প্রশ্ন করেন বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধি। গোটা ঘটনার সঙ্গে ‍বিদেশি শক্তিগুলি, ‍বিশেষত পাকিস্তানের কোনও যোগসূত্র রয়েছে কি না জানতে চান ‍বিরোধী দলনেতা।
জয়শঙ্কর ‍জ‍বা‍বে ‍বলেন, বিষয়টি এখনও তদন্তসাপেক্ষ। তিনি আরও জানান, কেন্দ্রের কাছে এই মর্মে তথ্য রয়েছে যে, বাংলাদেশে টালমাটাল পরিস্থিতি চলাকালীন একাধিকবার সমাজমাধ্যমে প্রোফাইলের ছবি বদলেছেন এক পাক কূটনীতিক। এটি কোনও বড় যোগসূত্রের ইঙ্গিত করে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখবে কেন্দ্র।
সর্বদল বৈঠকে রাহুল আরও জানতে চান, ঢাকায় ক্ষমতার পালাবদলের যে কূটনৈতিক প্রভাব ভারতের উপর পড়তে চলেছে, তার মোকাবিলায় আগামী দিনে কী কী পদক্ষেপ করবে সরকার? এই পরিস্থিতিতে ভারতের বিদেশনীতি কী হ‍বে তা-ও জানতে চান রাহুল গান্ধি। জয়শঙ্কর জবাবে জানান, কেন্দ্র এখনও সব দিক খতিয়ে দেখছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সঙ্গেও যোগাযোগ রেখেছে নয়াদিল্লি। পরিস্থিতি কোন দিকে যায় তা খতিয়ে দেখেই সিদ্ধান্ত নেবে কেন্দ্র।
 
রাহুলের তৃতীয় প্রশ্ন ছিল, বাংলাদেশে যেভা‍বে নাটকীয় পট পরিবর্তন ঘটল তা নিয়ে দিল্লির কাছে কোনও পূর্বাভাস ছিল কি না। এর জবাব এড়িয়ে যান জয়শঙ্কর। তিনি বলেন, ভারত পরিস্থিতি খতিয়ে দেখছে। পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে শীঘ্রই সিদ্ধান্ত জানাবেন তাঁরা।
 
বাংলাদেশের প্রবাসী ভারতীয়দের পরিস্থিতি নিয়েও ওই ‍বৈঠকে আলোচনা হয়। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে ভারতীয় নাগরিকদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করাই কেন্দ্রের লক্ষ্য বলে জানিয়েছেন জয়শঙ্কর। তবে এখনই জরুরি ভিত্তিতে বাংলাদেশ থেকে ভারতীয়দের সরিয়ে আনা হচ্ছে না। প্রয়োজনে যে কোনও সময়ে দ্রুত পদক্ষেপ করা হবে। সর্বদল বৈঠকে সাংসদদের জয়শঙ্কর বলেছেন, ‘‘যে পরিস্থিতি বাংলাদেশে তৈরি হয়েছে, তার দিকে আমরা নজর রাখছি। সঠিক সময় এলে ভারত সরকার সঠিক পদক্ষেপ করবে।’’ আপাতত হাসিনাকে কিছু দিন সময় দিতে চায় ভারত। সূত্রের খবর, হাসিনা লন্ডনে রাজনৈতিক আশ্রয় নিতে চান। কিন্তু ব্রিটেন থেকে এখনও কোনও সাড়া মেলেনি। হাসিনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী, তা জানার পর পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে নয়াদিল্লি।
 
তবে মঙ্গলবারের বৈঠকে রাহুল ছাড়া বাকি সকলেই সহমত পোষণ করেন। একমাত্র রাহুলই কেন্দ্রীয় সরকারকে প্রশ্ন করেন। বিরোধীপক্ষের বাকি শরিকেরা আগেই জানিয়ে দেন, কেন্দ্র যা বলবে সেই পথেই হাঁটবেন তাঁরা। একই কথা সোমবার বলেছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তবে সূত্রের খবর, রাহুলের এমন সরাসরি প্রশ্নের জন্য তৈরি ছিলেন না বিরোধীরাও।
 
বাংলাদেশের পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে সোমবারই কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার নিরাপত্তা বিষয়ক কমিটির জরুরি বৈঠক ডেকেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সোমবার রাতে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনে আয়োজিত ওই বৈঠকেও হাজির ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, প্রতিরক্ষামন্ত্রী, বিদেশমন্ত্রী। ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর দফতরের মুখ্যসচিব পিকে মিশ্র, ‘র’-এর প্রধান রবি সিংহ এবং কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা দফতরের ডিরেক্টর তপন ডেকা। মঙ্গলবার সকালে বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে সর্বদল বৈঠক ডাকেন জয়শঙ্কর। মঙ্গলবার সকাল ১০টায় সংসদে বৈঠকটি শুরু হয়। সংবাদ সংস্থা সূত্রে খ‍বর , এই বৈঠকে সব দলের প্রতিনিধিদের সামনে বাংলাদেশের পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর।
তৃণমূলের তরফে সর্বদল বৈঠকে অংশ নিয়েছিলেন সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। বৈঠকে সুদীপ বলেন, “বাংলাদেশের বিষয়ে আমাদের অবস্থান সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলে দিয়েছেন। এ বিষয়ে আমরা ভারত সরকারের সঙ্গে সহযোগিতা করে চলব। বিরোধের কোনও জায়গা নেই৷” বাংলাদেশ নিয়ে কেন্দ্র পরবর্তী পদক্ষেপ করলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সেই বিষয়ে অবহিত করার আর্জি জানান তিনি।
 
সর্বদলীয় বৈঠক শেষে জানানো হয়েছে, ওখানে বর্তমানে ২০০০০ মতো ভারতীয় রয়েছেন। তবে ভারত সরকার মনে করছে, এখনই সেখানে এমন পরিস্থিতি নেই যে ভারতীয়দের ফিরিয়ে আনতে হবে। প্রসঙ্গত, ইতিমধ্যেই ৮০০০ ভারতীয় পড়ুয়া বাংলাদেশ থেকে দেশে ফিরে এসেছেন বলে সব রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের জানিয়েছে সরকার।
 

সর্‍বদলীয় ‍বৈঠকের পর জয়শংকর তাঁর এক্স–হ্যান্ডেলে জানান, ‘‍বাংলাদেশে চলমান পরিস্থিতি সম্পর্কে আজ সংসদে একটি সর্‍বদলীয় ‍বৈঠকে গোটা পরিস্থিতি তুলে ধরা হয়েছে। যে সর্‍বসম্মত সমর্থন এ‍বং ‍বোঝাপড়া মিলেছে তা প্রশ্ংসনীয়। ‘