দিল্লি, ৫ আগস্ট – দিল্লির কোচিং সেন্টারে তিন পড়ুয়ার মৃত্যুর ঘটনায় কড়া পদক্ষেপ করল সুপ্রিম কোর্ট। সোমবার শীর্ষ আদালতের তরফে নোটিস পাঠানো হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের পাশাপাশি দিল্লি সরকারকে। জবাব তলব করা হয়েছে দিল্লি পুরসভার কাছেও। উল্লেখ্য, দিল্লির কোচিং সেন্টারের জলমগ্ন বেসমেন্টে ডুবে মৃত্যু হয় তিন ইউপিএসসি প্রার্থীর। এই ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করে শীর্ষ আদালত। তীব্র ভর্ৎসনা করে সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ, এই ঘটনা সবার চোখ খুলে দিয়েছে। দিল্লির রাজেন্দ্রনগরের এই কোচিং সেন্টারগুলিকে ‘ডেথ চেম্বার’ বলেও উল্লেখ করে দেশের শীর্ষ আদালত।
বিচারপতি সূর্য কান্ত এবং উজ্জ্বল ভুঁইয়ার বেঞ্চে সোমবার শুনানি শুরু হয়। কোচিং সেন্টারগুলোকে তীব্র ধিক্কার জানান দুই বিচারপতি। আদালতের পর্যবেক্ষণ, ‘পড়ুয়াদের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে এই কোচিং সেন্টারগুলি। এগুলি এক একটি ডেথ চেম্বারে পরিণত হয়েছে। যে সমস্ত কোচিং সেন্টারে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থার জন্য কোনও ‘নো অবজেকশন’ সার্টিফিকেট নেই সেগুলিকে বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল দিল্লি হাইকোর্ট। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় কোচিং সেন্টার ফেডারেশন। এই মামলার জন্য তাদের উপর এক লক্ষ টাকা জরিমানা আরোপ করেছে সুপ্রিম কোর্ট।
তার পরেই দুই বিচারপতি জানিয়েছেন, কেন্দ্র এবং দিল্লির সরকারকে শোকজ নোটিস দেওয়া হয়েছে। জবাব তলব করা হয়েছে দিল্লি পুরসভার থেকেও। উল্লেখ্য, দিল্লি হাই কোর্টের নির্দেশে অন্তত ৩৬টি কোচিং সেন্টার বন্ধ করা হয়েছিল। সমস্ত কোচিং সেন্টারে সেফটি রুল মেনে চলা হচ্ছে কি না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে। এ প্রসঙ্গে অ্যাটর্নি জেনারেলকে সাহায্যের জন্য বলা হয়েছে। যদি কোনও কোচিং সেন্টার সেফটি রুলের মাপকাঠিতে ব্যর্থ হয় সেক্ষেত্রে তাদের অনলাইন ক্লাস শুরু করতে হবে।
সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সূর্যকান্ত সোমবার শুনানিতে বলেন, ‘দিল্লির সরকার কিংবা কেন্দ্র কী পদক্ষেপ নিচ্ছে আমাদের জানা নেই। তবে সাম্প্রতিক এই দুর্ঘটনা আমাদের চোখ খুলে দিয়েছে। তাই স্বতপ্রণোদিতভাবে আমরা কেন্দ্র এবং দিল্লির সরকারকে নোটিশ পাঠাচ্ছি। আমরা জানতে চেয়েছি এখনও পর্যন্ত নিরাপত্তার জন্য কোচিং সেন্টারগুলিতে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’
উল্লেখ্য, ইতিমধ্যেই ৩ ইউপিএসসি পড়ুয়ার মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। শুধু তাই নয়, গোটা ঘটনায় দিল্লি পুরসভা ও পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছে দিল্লি হাই কোর্টের তরফে। আদালতের তরফে জানানো হয়েছে, এই মামলার তদন্ত নিয়ে সাধারণ মানুষের মনে যাতে কোনও সন্দেহের অবকাশ না থাকে তার জন্যই এই মামলার তদন্ত করবে এজেন্সি।
উল্লেখ্য, গত ২৭ জুলাই দিল্লির রাজেন্দ্রনগরে রাউ’ আইএএস স্টাডি সার্কেল কোচিং সেন্টারের জলমগ্ন বেসমেন্টে ডুবে মৃত্যু হয় তিন প্রার্থীর। সেই ঘটনায় কড়া পর্যবেক্ষণ সুপ্রিম কোর্টের।