ওয়ানড় নিয়ে শাহ-বিজয়ন দ্বন্দ্বে জিএসআই জানাল
দিল্লি, ২ আগস্ট– একদিকে বিধস্ত ওয়ানড় থেকে জীবনের স্পন্দন শুনতে মরিয়া চেষ্টা করে চলেছে উদ্ধারকারীরা। আর অন্যদিকে এই বিপর্যয় নিয়ে রাজনীতির অলিন্দে একে-ওপরের বিরুদ্ধে রাজনীতির লড়াইয়ে নেমে পড়েছে বিজেপি ও কেরল সরকার। কিন্তু এবার এই লড়াইয়ের মাঝে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করল জিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের বাকযুদ্ধের মধ্যেই এবার মুখ খুলল জিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া। জিএসআইয়ের তরফে জানানো হল, পাহাড়ি এলাকায় ধস থেকে প্রাণহানি বাঁচাতে বছর কয়েক আগে যে বিশেষ সতর্কবার্তা চালু করা হয়েছিল, তা এখনও পরীক্ষামূলক স্তরে। তাতে নিখুঁতভাবে ভূমিধসের পূর্বাভাস পাওয়া সম্ভব নয়।
ওয়ানড়ের বিপর্যয়ের পর কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সংসদে দাঁড়িয়ে দাবি করেন, “গত ২৩ জুলাই অর্থাৎ দুর্ঘটনার এক সপ্তাহ আগে কেরল সরকারকে সতর্ক করেছিল কেন্দ্র। তার পর ২৪ এবং ২৫ জুলাই আরও দুটি সতর্কবার্তা দেওয়া হয়। গত ২৬ জুলাই আরও একবার প্রবল বৃষ্টিপাত এবং ভূমিধসের সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তা সত্ত্বেও কেরল সরকার কোনও মানুষকেই নিরাপদে সরিয়ে নিয়ে যায়নি। যদি নাগরিকদের নিরাপদে সরানো হত, তাহলে এত মানুষের প্রাণ যেত না।”
তবে শাহের দাবির পরেই পিঠ বাঁচাতে নেমে পরে কেরল সরকার। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর দাবির কয়েক ঘণ্টা বাদে পালটা বিবৃতি দিয়ে পিনারাই বিজয়ন বলেন, “ওয়ানড়ে ধসের সম্ভাবনা নিয়ে কেন্দ্র আগাম কোনও সতর্কবার্তা পাঠায়নি। শুধু ওয়ানড় জেলায় বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা সংক্রান্ত কমলা সতর্কতা জারি করা হয়েছিল। বাস্তবে সেই সতর্কতার চেয়েও বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে।”
কেন্দ্র বনাম কেরল সরকারের এই দ্বন্দে জিএসই-এর বিবৃতি ইতি টানল কিনা তা সময় বলবে তবে জিএসআই-এর দাবিতে স্পষ্ট কেন্দ্র কেরলকে আগাম জানানোর যে দাবি করেছে তা ভুল। কেননা জিএসআই জানিয়ে দিল, ভূমিধস নিয়ে নিখুঁতভাবে আগাম সতর্কবার্তা দেওয়া সম্ভবই নয়। জিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া জানিয়ে দিল, পাহাড়ি এলাকায় ভূমিধস রুখতে একটি আগাম সতর্কবার্তা চালুর চেষ্টা চলছে। তবে সেটা এখনও নিখুঁত নয়। এই পদ্ধতি চালু করতে আরও পাঁচ-ছয় বছর সময় লাগবে। ভূতত্ত্ববিদদের একাংশের ধারণা, জিএসআইয়ের এই মন্তব্য আসলে বিজয়নের দাবিতেই সিলমোহর দিল।