মুম্বই, ১ আগস্ট: আইপিএল নিলাম নিয়ে পাঞ্জাব কিংসের মালিকের সঙ্গে তুমুল ঝগড়া বলিউড বাদশা শাহরুখ খানের। সম্প্রতি এমনই গুঞ্জন ছড়িয়েছে ক্রিকেট দুনিয়ায়। সূত্রের খবর, বুধবার রাতে মুম্বইয়ে আইপিএল মালিকদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন বোর্ডের কর্তারা। উপস্থিত ছিলেন বোর্ডের সচিব জয় শাহ। সেই বৈঠকে মেগা নিলাম নিয়ে ওঠে একাধিক প্রশ্ন। পাঞ্জাব কিংসের মালিক নেস ওয়াদিয়ার সঙ্গে তুমুল বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন কলকাতা নাইট রাইডার্সের কর্ণধার শাহরুখ খান। নিলামের নিয়ম-কানুন ও শর্ত নিয়ে দুই দলের মালিক পরস্পর বিতর্ক জড়িয়ে পড়েন বলে সূত্রের দাবি। একটি ক্রিকেট ওয়েবসাইট এই খবর প্রকাশ্যে এনেছে।
যদিও শাহরুখ খান এবিষয়ে সংবাদমাধ্যমে কোনও মত ব্যক্ত করেননি। পাশাপাশি, নেস ওয়াদিয়া বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। ওয়াদিয়া বলেন, “আমি শাহরুখকে ২৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে চিনি। ওর সঙ্গে আমার কোনও শত্রুতা নেই। প্রত্যেকে নিজেদের মতামত ব্যক্ত করেছি মাত্র। তাঁর পক্ষে যুক্তি দিয়েছেন। দিনের শেষে যাঁরা এই প্রতিযোগিতার সঙ্গে যুক্ত, তাঁদের মতামতই প্রাধান্য দিতে হয়। আশা রাখি, বোর্ড যেটা ভালো মনে করবে, সেটাই হবে।”
প্রসঙ্গত আইপিএল-এ দুই ধরণের নিলাম হয়ে থাকে। একটি মেগা নিলাম এবং অন্যটি মিনি নিলাম। মিনি নিলাম প্রতি বছর হলেও মেগা নিলাম হয় প্রতি তিন বছর অন্তর। এদিন রাতে মেগা নিলাম নিয়ে মুম্বইয়ে বোর্ডের সদর দফতরে বৈঠকে বসেন আইপিএল দলগুলির মালিক ও বোর্ডের কর্তারা। সেখানে সশরীরে হাজির ছিলেন শাহরুখ খান। ছিলেন পাঞ্জাব কিংসের মালিকও। ক্রিকেটের ওই ওয়েবসাইটটির প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, মেগা নিলাম নিয়ে তীব্র বিরক্তি প্রকাশ করেন কেকেআর-এর মালিক শাহরুখ খান। তিনি কার্যত এই নিলাম তুলে দেওয়ার দাবি জানান। প্রশ্ন তোলেন পুরনো ক্রিকেটার ধরে রাখার নীতি নিয়েও। এজন্য আইপিএল-এর নীতিতে বদল আনার কথা বলেন কিং খান। তিনি বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী, চার জনের পরিবর্তে আরও বেশি সংখ্যক ক্রিকেটার ধরে রাখার পক্ষে মত দেন। এই বিষয়টি নিয়ে পাঞ্জাব কিংসের মালিকের সঙ্গে শাহরুখের মতবিরোধ হয় বলে সংবাদ মাধ্যমটি জানিয়েছে। তাদের দাবি, শাহরুখের এই মতের বিরোধিতা করেন নেস ওয়াদিয়া। যা নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে কার্যত তর্কযুদ্ধ শুরু হয়ে যায়। আকস্মিক এবং অনভিপ্রেত এই ঘটনায় হতবাক হয়ে যান বৈঠকে উপস্থিত অন্যান্য সদস্যরা।
তবে শাহরুখের এই মতের পক্ষে সান রাইজার্স হায়দরাবাদের মালকিন কাব্য মরানের সমর্থন পেয়েছেন। তিনিও বড় নিলাম তুলে দিয়ে ছোট নিলামের পক্ষে মত দিয়েছেন। মরান বলেছেন, “একটা দল গড়ে তুলতে অনেক সময় লাগে। অনেক বিনিয়োগ দরকার হয়। তরুণ ক্রিকেটারদের পরিণত করে তুলতে সময় লাগে। তিন বছর অক্লান্ত পরিশ্রমের পর আজ অভিষেক শর্মার মতো ক্রিকেটার ধারাবাহিকভাবে ভাল খেলছে। বাকি দলগুলোতেও এরকম উদাহরণ রয়েছে।”
উল্লেখ্য, প্রতি তিন বছর আয়োজিত মেগা নিলামের বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী, একটি দল সর্বোচ্চ চারজন ক্রিকেটার ধরে রাখতে পারে। একজন ‘রাইট-টু-ম্যাচ’ কার্ড ব্যবহার করে কিনতে পারে। দলগুলি সেরা চারজন ক্রিকেটারকে ধরে রেখে বাকিদের ছেড়ে দিয়ে পারে। অন্যদিকে, প্রতি বছর আয়োজিত মিনি নিলামে ক্রিকেটার ছাড়ার ক্ষেত্রে কোনও নির্দিষ্ট নিয়ম নেই। যাঁরা আগের মরসুমে ভালো খেলতে পারেননি, সাধারণত তাঁদেরকেই ছেড়ে দেয় ক্রিকেট টিমগুলি। দুই নিলামের মধ্যে তাৎপর্যপূর্ণ ব্যাপার হল, মিনি নিলামে ক্রিকেটারদের দাম বেশি ওঠে। যেমন- গত বারের মিনি নিলামে মিচেল স্টার্ক অতীতের সব নজির ভেঙে ২৪.৭৫ কোটি টাকা দাম পেয়েছিলেন।