দিল্লি, ২৫ জুলাই – দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের বিচারবিভাগীয় হেফাজতের মেয়াদ বৃহস্পতিবার আবার বৃদ্ধি পেল। আবগারি দুর্নীতি মামলায় ধৃত দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়াল এবং বিআরএস নেত্রী কে কবিতা আপাতত তিহাড় জেলেই থাকবেন। এদিন দিল্লির রাউজ অ্যাভিনিউ আদালত কেজরিওয়ালের বিচারবিভাগীয় হেফাজতের মেয়াদ আগস্টের ৮ তারিখ পর্যন্ত বৃদ্ধি করেছে। জেল হেফাজতের মেয়াদ বেড়েছে এই মামলায় ধৃত দিল্লির প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী তথা আম আদমি পার্টি -র নেতা মণীশ সিসোদিয়ারও।
বিচারক কাবেরী বাওয়েজা বৃহস্পতিবার আবগারি দুর্নীতি সংক্রান্ত বেআইনি আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত ইডির মামলায় কেজরিওয়ালকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। অন্যদিকে, এই দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলায় সিবিআই হেফাজতের মেয়াদ বাড়িয়েছে ৮ আগস্ট পর্যন্ত।
ইডি মামলায় সিসৌদিয়ার জেল হেফাজতের মেয়াদও ৩১ জুলাই পর্যন্ত বেড়েছে। প্রসঙ্গত, গত ২১ মার্চ আবগারি দুর্নীতি মামলায় কেজরিকে গ্রেফতার করেছিল ইডি। পরে সিবিআই একই মামলায় তাঁকে গ্রেফতার করে। সিবিআই হেফাজতে থাকার পর তিনি এখন তিহাড়ে রয়েছেন। সেখান থেকেই বৃহস্পতিবার ভিভিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তাঁকে আদালতে পেশ করা হয়।
কেজরিওয়াল মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেননি। ফলে দেশের ইতিহাসে তিনিই প্রথম মুখ্যমন্ত্রী, যাঁকে পদে থাকাকালীন গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার হওয়ার পর থেকেই বারবার জামিনের আবেদন করেছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর আবেদন একাধিকবার খারিজ করে দেয় দিল্লি হাইকোর্ট। এর পর লোকসভা ভোটের সময়ে তাঁকে কিছু দিনের জন্য অন্তর্বর্তী জামিন দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। তার মেয়াদ শেষ হলে ২ জুন আবার তিহাড় জেলে গিয়ে আত্মসমর্পণ করেছিলেন কেজরিওয়াল।
সেই সময় কেজরিওয়াল ইডির মামলাতেই জেলে ছিলেন। পরে সিবিআই তাঁকে গ্রেফতার করে। সিবিআই হেফাজতে থাকার পরে আদালতের নির্দেশে তাঁকে ফের বিচারবিভাগীয় হেফাজতে চলে যেতে হয়। ফলে আবার তাঁর ঠিকানা হয় তিহাড় জেল। এই নিয়ে প্রথমে রাউজ অ্যাভিনিউ আদালতে তাঁর তরফে আবেদন করা হয়। ইডি ও জেল কর্তৃপক্ষ সেই আবেদনের বিরোধিতা করে। গত ১ জুলাই তাঁর আবেদন সংশ্লিষ্ট আদালত খারিজ করে দেয়। তখন তিনি দিল্লি হাইকোর্টে আবেদন করেন। গত ১৮ জুলাই এই নিয়ে দিল্লি হাইকোর্টে শুনানি হয়। সেখানেও ইডি কেজরিওয়ালের আবেদন নিয়ে আপত্তি জানায়। দিল্লি হাইকোর্ট ওই মামলার রায় রিজার্ভ করে রাখে।
সেদিকে আবগারি মামলাতেই বৃহস্পতিবার আদালতে পেশ করা হয় আপের মণীশ সিসোদিয়া এবং বিআরএস-এর কে কবিতাকে। তাঁদেরও জেল হেফাজতের মেয়াদ বেড়েছে।
দিল্লির আবগারি নীতি মামলায় এখনও পর্যন্ত ১৮ জন গ্রেফতার হয়েছেন। এই মামলায় তিহাড় জেলে থাকাকালীনই কেজরিকে গ্রেপ্তার করে সিবিআই। সেই মামলায় ২৫ জুলাই পর্যন্ত কেজরিকে জেল হেফাজতে থাকার নির্দেশ দিয়েছিল দিল্লির আদালত। জেলবন্দি থাকার মেয়াদ শেষ হতেই বৃহস্পতিবার ফের রাউজ অ্যাভিনিউ আদালতে শুনানি শুরু হয়। তিহাড় জেল থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যোগ দেন আপ সুপ্রিমো। শুনানির পরে বিচারক জানিয়ে দেন, আগামী ৮ আগস্ট পর্যন্ত জেলেই থাকতে হবে কেজরিওয়ালকে।