• facebook
  • twitter
Friday, 22 November, 2024

প্রাইভেট টিউশন পড়ালে যেতে পারে স্কুলের চাকরি! আন্দোলন জারি গৃহশিক্ষক সংগঠনের

নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: কেটে গিয়েছে এক বছর, এখনও জারি রইলো ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল প্রাইভেট টিউটর ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন’ -এর আন্দোলন। দিনে দিনে বদলে যাচ্ছে প্রাইভেট শিক্ষকদের আন্দোলনের অভিমুখ। উল্লেখ্য, গতবছর ১লা জুন রাজ্যের সরকার নিয়ন্ত্রিত স্কুলের শিক্ষকদের প্রাইভেট টিউশন বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাই কোর্ট। কিন্তু তাতে কি? সরকার নিয়ন্ত্রিত স্কুলের শিক্ষকদের একাংশ বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়েছিলেন হাইকোর্ট

নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: কেটে গিয়েছে এক বছর, এখনও জারি রইলো ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল প্রাইভেট টিউটর ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন’ -এর আন্দোলন। দিনে দিনে বদলে যাচ্ছে প্রাইভেট শিক্ষকদের আন্দোলনের অভিমুখ। উল্লেখ্য, গতবছর ১লা জুন রাজ্যের সরকার নিয়ন্ত্রিত স্কুলের শিক্ষকদের প্রাইভেট টিউশন বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাই কোর্ট। কিন্তু তাতে কি? সরকার নিয়ন্ত্রিত স্কুলের শিক্ষকদের একাংশ বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়েছিলেন হাইকোর্ট রায়কে। তারপর জল গড়িয়েছে অনেক দূর। এবার কড়াকড়ি হলো প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ। সরকারি নির্দেশিকা অমান্য করে টিউশনি করলে সরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের চাকরি বাতিল করা হবে, গত ১৮ জুলাই এমনই নোটিশ জারি করলেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান। মাত্র ১৫ দিনের মধ্যে বিদ্যালয় পরিদর্শকদের এই বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ৩২৬৪টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১২ হাজার প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষিকাকে এ বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে। এ বিষয়ের তদারকিতে পিছিয়ে নেই পূর্ব বর্ধমানও। পাশাপাশি জেলায় জেলায় চলছে বিদ্যালয় পরিদর্শক বা ডিআইদের তদন্ত।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, কলকাতা হাইকোর্টের রায়কে অমান্য করেই রমরমিয়ে চলছিল সরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের গৃহশিক্ষকতা। শিক্ষা মহল যাকে ‘শিক্ষার নামে প্রহসন’ বলেই আখ্যা দিয়েছে। এর ফলে রাজ্য সরকারের শিক্ষা খাতে নানা উন্নয়নমূলক প্রকল্পের জাদুকাঠি থাকার পরেও রাজ্যের শিক্ষার মান ক্রমশ হচ্ছে নিম্নমুখী। কারণ, সরকারি বিদ্যালয়ে মোটা অংকের বেতন পাওয়ার পরও, আলাদা করে প্রাইভেট টিউশন পড়ানো শিক্ষকদের কাছে লাভজনক ব্যবসা ব্যতিত অপর কিছু নয়। এরপর গতবছর ৪ঠা সেপ্টেম্বর ডবলুবিপিটিডবলুএ এর তরফ থেকে কলকাতার করুণাময়ী মোড়ে বিশাল জনসভা করা হয় এবং মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি রামানুজ গাঙ্গুলীর কাছে ডেপুটেশন জমা দেওয়া হয়।

পাশাপাশি বিভিন্ন জেলা থেকে অভিযুক্ত পাঁচ হাজার শিক্ষকদের নামের তালিকা ও প্রমাণ পেনড্রাইভে জমা দেওয়া হয়। এরপর স্কুলের শিক্ষকরা প্রাইভেট টিউশন বন্ধ করছেন না বলে পর্ষদ বিভিন্ন স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের কাছ থেকে মুচলেকা চায়। সমিতির অভিযোগ, মুচলেকা দেওয়ার পরেও শিক্ষকরা টিউশন চালিয়ে যান।

গত ডিসেম্বরে ফের আদালত অবমাননা মামলা করেন সমিতি। সম্প্রতি চলতি বছরে মে মাসের শেষ সপ্তাহে স্কুল শিক্ষা দফতরকে প্রধান বিচারপতি টি এস শিবগণনমের ডিভিশন বেঞ্চের তরফে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, আগামী আট সপ্তাহের মধ্যে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ এবং জেলা স্কুল পরিদর্শককে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। সরকারি ও সরকার নিয়ন্ত্রিত স্কুলের শিক্ষকেরা যেন সম্পূর্ণ ভাবে প্রাইভেট পড়ানো বন্ধ করেন, সে বিষয়ে চালাতে হবে নজরদারি। সেই মতো চলতি বছরের ২১শে জুন স্কুল শিক্ষা দফতরের তরফ থেকে একটি গাইডলাইনও প্রকাশ করা হয়। এই আট সপ্তাহের ঘড়া পূর্ণ হতে বাকি মাত্র আর কয়েকদিন। পূর্ব মেদিনীপুর, পূর্ব বর্ধমান সহ রাজ্যের প্রায় সব জেলাতেই স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের তলব করছেন ডিআইগণ। বর্তমানে প্রধান শিক্ষকদের দেওয়া মুচলেকা সঠিক কিনা এবং কী করে এই প্রাইভেট টিউশন বন্ধ হবে, সেই বিষয়ের পরবর্তী সিদ্ধান্তের দিকে তাকিয়ে রাজ্যের গৃহশিক্ষক সংগঠন সহ গোটা শিক্ষা মহল।