পরবর্তী শুনানি নভেম্বরে
মোল্লা জসিমউদ্দিন: বুধবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে উঠে দাড়িভিট সংক্রান্ত মামলা।উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুরের দাড়িভিটে পুলিশের গুলিতে মৃত দুই ছাত্রের পরিবারকে ক্ষতিপূরণে স্থগিতাদেশ দিল কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। নিহত পরিবারের দাবি , -‘২ লক্ষ টাকা নয়। ২০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে’। বুধবার ওই বিপুল পরিমাণ অর্থ ক্ষতিপূরণ চাওয়া নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চ। দাড়িভিট কাণ্ডের দুই ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনায় এনআইএ তদন্তের নির্দেশ বহাল। বুধবার এই কথা জানিয়ে দিল প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। দাঁড়িভিটের ঘটনায় এনআইএ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের তৎকালীন বেঞ্চের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা।আগামী নভেম্বর মাসে মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে বলে জানা গেছে ।
গত ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে শিক্ষক নিয়োগ ঘিরে পড়ুয়া ও অভিভাবক বিক্ষোভে রণক্ষেত্রের চেহারা নিয়েছিল উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুরের দাড়িভিট উচ্চ বিদ্যালয়। বিক্ষোভ সামলাতে পুলিশ গুলি চালালে দুই ছাত্র রাজেশ সরকার ও তাপস বর্মন প্রাণ হারান। ক্ষতিপূরণ ও এনআইএ তদন্তের দাবি জানিয়ে মামলা দায়ের হয় কলকাতা হাইকোর্টে। তৎকালীন বেঞ্চের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় এনআইএ তদন্ত এবং ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। অভিযোগ ওঠে হাইকোর্টের নির্দেশের পরেও রাজ্য পুলিশ, এনআইকে তদন্তভার তুলে দেয়নি। সেই নিয়ে দেওয়ায় আদালত অবমাননার মামলা দায়ের হয়েছিল। সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে যায় রাজ্য।
এদিন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চে রাজ্য সরকারের আবেদনের শুনানি চলে । সেই শুনানিতে রাজ্য সরকারের আইনজীবী জানান,-‘ ইতিমধ্যেই এই মামলা সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য এনআইএ-কে দেওয়া হয়েছে। ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নিয়ম মোতাবেক, মৃত দুই ছাত্রের পরিবারকে দু’লাখ টাকাও দেওয়া হবে’। এদিন মৃত দুই ছাত্রের পরিবারের তরফে ২ লক্ষ নয়, ২০ লক্ষ টাকা আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি জানানো হয়। এই মামলার শুনানি পর্বে পর্যবেক্ষণ মন্তব্যে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘ভিক্টিম কম্পেনশেসন স্কিম’ অনুযায়ী ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার দু’লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ পাওয়ার কথা। কেন ২০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে?’
এরপরেই ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, সিঙ্গল বেঞ্চ ক্ষতিপূরণ দেওয়ার যে নির্দেশ দিয়েছিল পরবর্তী শুনানি পর্যন্ত তা স্থগিত থাকবে। আগামী নভেম্বরে এই মামলার পরবর্তী শুনানি।২০১৮ সালে স্থানীয় থানার পুলিশের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধ হয় প। পুলিশের গুলিতে দু’জন মারা যায়। এমন অভিযোগ উঠেছিল। কলকাতা হাইকোর্টে মামলা উঠেছিল। তৎকালীন বেঞ্চের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার এজলাসে মামলার শুনানি চলেছে দীর্ঘ সময়। বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা রাজ্যের মুখ্যসচিব ও স্বরাষ্ট্রসচিব, এডিজি সিআইডিকে তলব করেছিলেন। তারা উপস্থিত না হওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন বিচারপতি।
এরপর ওই ঘটনার তদন্তের ভার সিআইডির উপর দেওয়া হয়।সিঙ্গেল বেঞ্চের সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে যায় রাজ্য। প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানমের এজলাসে এই মামলার শুনানি হয়। এদিন দুই ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনায় ক্ষতিপূরণ দেওয়ার উপর আপাতত স্থগিতাদেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট।রাজ্য সরকার দুই লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণের কথা জানিয়েছিল। কিন্তু সেই পরিমাণ টাকায় সন্তুষ্ট নন ওই দুই ছাত্রের পরিবার। তারা ২০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন। তাদের আইনজীবীর বক্তব্য, দুই ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনায় ২ লক্ষ টাকা যথেষ্ট নয়। যেহেতু ক্ষতিপূরণের নির্দিষ্ট কোনও অঙ্ক জানায়নি সিঙ্গল বেঞ্চ। তাই বিষয়টি নিয়ে কোনও নির্দেশ দেয়নি ডিভিশন বেঞ্চ।আগামী নভেম্বর কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে বলে জানা গেছে।