প্রবীর সাহা, পুরপ্রধান, নববারাকপুর পুরসভা
নতুন বাংলা গড়ার শপথে সেদিন যুবনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আহ্বান করলেন যুব সমাজকে ‘মহাকরণ চলো’৷ নিজেদের অধিকারকে প্রতিষ্ঠা করতে অত্যাচারী-বর্বর শাসক গোষ্ঠীকে উপড়ে ফেলতেহবে৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডাকে ১৯৯৩ সালের ২১ জুলাই সকাল থেকে ছাত্র পরিষদের সৈনিকরা ছুটে এসেছিলেন কলকাতার রাজপথে৷ তরুণ সমাজ গর্জে উঠল৷ অপশাসন থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আন্দোলনে সামিল হলেন বন্ধুরা৷ আওয়াজ উঠল নির্বাচনকে প্রহসনে পরিণত করা চলবে না৷ সচিত্র ভোটার কার্ড ছাড়া কোনও ভোট হবে না৷ সমাজকে বিভ্রান্ত করা চলবে না৷ নতুন বাংলা গড়তে হবে৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডাকে উদ্বুদ্ধ হয়ে যুবসমাজ ঝাঁপিয়ে পড়লেন নতুন বাংলা গড়ার আন্দোলনে৷ সেদিন সারা কলকাতা জনস্রোতে ভেসে গেল৷ সবার লক্ষ্য ‘মহাকরণ চলো’৷ স্বৈরাচারী শাসককে উৎখাত করতে হবে৷ যুব সমাজের আওয়াজে মুখর হয়ে উঠল শহর৷
কলকাতার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মিছিল চলেছে মহাকরণের উদ্দেশ্যে৷ আমরা তখন ছাত্র পরিষদের সদস্য হিসেবে সেই আন্দোলনে সামিল৷ ‘মহাকরণ চলো’ আহ্বানে উত্তাল কলকাতা৷ শাসক গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে আওয়াজ উঠল৷ সেই আওয়াজে ভয় পেয়ে গেল বর্বর শাসক গোষ্ঠী৷ দূর থেকে আমরা শুনতে পাচ্ছিলাম আজকের মানবিক মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদাত্ত কণ্ঠস্বর৷ আমরা আরও অনুপ্রাণিত হয়ে এগিয়ে চলেছি মহাকরণের দিকে৷ হঠাৎই দেখি রণমূর্তি হয়ে পুলিশ আমাদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে লাঠিচার্জ শুরু করে৷ তারপর কাঁদানে গ্যাসের সেল উড়ে আসতে শুরু করে৷ চোখ জ্বালা করছিল৷ জল পড়ছিল চোখ দিয়ে৷ রমাল ভিজিয়ে চোখ মুছে আবার সামনে এগিয়ে যাওয়া৷ তারই মধ্যে শোনা গেল গুলির শব্দ৷ ছোটাছুটি শুরু হয়ে গেল৷ এরই মধ্যে খবর এল পুলিশের গুলিতে কয়েকজন বন্ধু শহিদ হয়ে গেছেন৷ তবুও প্রতিবাদ থেকে সরে থাকেননি যুবনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ সঙ্গে তরুণ ব্রিগেড৷ শেষ পর্যন্ত গণতন্ত্রের জয় হয়েছে ২০১১ সালে৷
নতুন স্বপ্ন নিয়ে নতুন সরকার এসেছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে৷ মানুষের কল্যাণে ও উন্নয়নের প্রতীক হিসেবে সবার আদর্শ মানবিক মুখ্যমন্ত্রী৷ সেই আদর্শকে সামনে রেখে আজকের যুবনেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলার মানুষকে আহ্বান করেছেন একুশে জুলাই শহিদ দিবস৷ নব জাগরণের দিনে সবাই অঙ্গীকার করবেন জয় হোক মা-মাটি-মানুষের৷ জয় হোক বাংলার৷