• facebook
  • twitter
Monday, 25 November, 2024

পড়ুয়াদের ওপর হামলা একেবারেই মেনে নেওয়া যায় না, জানাল রাষ্ট্রসংঘ

অগ্নিগর্ভ বাংলাদেশ ছেড়ে প্রায়  ১০০০ ভারতীয় পড়ুয়া  দেশে ফিরেছেন ঢাকা, ২০ জুলাই– কোটা আন্দোলনের জেরে জ্বলছে বাংলাদেশ৷ ক্রমেই পরিস্থিতি আরও জটিলতর হচ্ছে৷ হমসিম হাসিনা সরকার গোটা দেশে কার্ফু জারি করে-ইন্টারনেট বন্ধ করে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছে৷ ইতিমধ্যেই শুক্রবার রাত পর্যন্ত এই সংঘর্ষে প্রাণ গিয়েছে কমপক্ষে ১০৫ জনের৷ এই অবস্থায় শনিবার বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টে কোটা মামলার

অগ্নিগর্ভ বাংলাদেশ ছেড়ে প্রায়  ১০০০ ভারতীয় পড়ুয়া  দেশে ফিরেছেন

ঢাকা, ২০ জুলাই– কোটা আন্দোলনের জেরে জ্বলছে বাংলাদেশ৷ ক্রমেই পরিস্থিতি আরও জটিলতর হচ্ছে৷ হমসিম হাসিনা সরকার গোটা দেশে কার্ফু জারি করে-ইন্টারনেট বন্ধ করে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছে৷ ইতিমধ্যেই শুক্রবার রাত পর্যন্ত এই সংঘর্ষে প্রাণ গিয়েছে কমপক্ষে ১০৫ জনের৷ এই অবস্থায় শনিবার বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টে কোটা মামলার শুনানি হওয়ার কথা ছিল৷ কিন্ত্ত তার আগে শুক্রবার ছুটির দিন সত্ত্বেও চলে দফায় দফায় সংঘর্ষ৷ ঝরেছে রক্ত৷ শনিবার ঢাকা মেট্রো স্টেশনেও আন্দোলনকারীদের আগুন লাগিয়ে দেওয়ার খবর সামনে এসেছে৷ তারপরেই এদিন সকাল থেকে ঢাকা এবং অন্য এলাকায় শুনশান ও ফাঁকা রাস্তায় সেনাবাহিনী টহল দিতে শুরু করেছে বলে জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স৷

এই অগ্নিগর্ভ বাংলাদেশ নিয়ে মুখ খুলল রাষ্ট্রসংঘ৷ জানিয়ে দিল, এই পরিস্থিতি উদ্বেগজনক৷ এবং তা একেবারেই মেনে নেওয়া যায় না৷ প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে পরিস্থিতি ক্রমেই জটিলতর হচ্ছে৷ মৃতের সংখ্যা পেরিয়ে গিয়েছে ১০৫৷ স্বাভাবিকভাবেই গোটা বিশ্বে উদ্বেগ ছডি়য়েছে ঢাকার পরিস্থিতি৷

রাষ্ট্রসংঘের মানবাধিকার বিভাগের প্রধান ভলকার টার্ক জানিয়েছেন, ‘বাংলাদেশের সাম্প্রতিক হিংসায় বহু মানুষের মৃতু্য ও আহত হওয়ার ঘটনায় আমি অত্যন্ত উদ্বিগ্ন৷ প্রতিবাদী পড়ুয়াদের উপরে হামলা উদ্বেগজনক এবং তা একেবারেই মেনে নেওয়া যায় না৷ এই হামলার নিরপেক্ষ, সম্পূর্ণ ও যথাযথ তদন্ত হওয়া দরকার৷ যারা দোষী, তাদের চিহ্নিত করতে হবে৷’
এদিকে, বাংলাদেশের প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার সকাল ১০টা পর্যন্ত পরিস্থিতি দেখার পরেই কার্ফুর বিষয়ে কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে সেটা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে৷ তবে, সাধারণ মানুষ যাতে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস কেনাকাটা করতে পারেন, সেইজন্য শনিবার দুপুর ১২টা থেকে ২ ঘণ্টার জন্য কার্ফু শিথিল করা হয় বলে জানানো হয়েছে৷

পড়শি দেশের এই উত্তাল পরিস্থিতিতে সেখানে শিক্ষারত ভারতীয় পড়ুয়াদের নিয়ে যথেষ্ট চিন্তিত দিল্লি৷ জানা গিয়েছে, ক্ষোভের আগুনের আঁচ থেকে বাঁচতে তারা যেকোনও উপায়ে ফিরে আসছেন দেশে৷ প্রায় ৮৫০০ পড়ুয়াসহ প্রায় ১৫হাজার ভারতীয় আটকে আছেন বাংলাদেশে৷ তবে তাঁরা নিরাপদে আছেন বলেও জানিয়েছেন ভারতের বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র রনধীর জয়সোয়াল৷ শনিবার পর্যন্ত ৯৯৮ জন পড়ুয়া ভারতে ফিরেছেন। যার মধ্যে ৭৭৮ জন স্থল বন্দর ও ২০০ জন বিমানে ধরে দেশে ফিরেছেন। এর মধ্যে শুক্রবারই ৩০০-এরও বেশি ভারতীয় পড়ুয়া উত্তর-পূর্বের সীমান্ত পার করে ভারতে চলে এসেছেন৷ তাঁরা মূলত এমবিবিএস অর্থাৎ ডাক্তারি পড়তে গিয়েছিলেন বাংলাদেশে৷ জানা গিয়েছে, ত্রিপুরার আগরতলার কাছে আখুরা বন্দর ও মেঘালয়ের ডাউকি দিয়ে বাংলাদেশ থেকে ভারতে ফিরে আসছেন পড়ুয়ারা৷ মূলত উত্তর প্রদেশ, হরিয়ানা, মেঘালয়, জম্মু-কাশ্মীরের পড়ুয়ারাই বাংলাদেশে পড়তে গিয়েছিলেন৷ তারাই দেশে ফিরে আসছেন৷ পড়ুয়ারা জানিয়েছেন, ট্যাক্সি করে ৬ ঘণ্টার পথ পেরিয়ে সীমান্তে পৌঁছেছেন৷ বাংলাদেশোর নিরাপত্তা বাহিনী তাদের এসকর্ট করে পৌঁছে দিয়েছেন৷

মেঘালয়ে আধিকারিকরা জানিয়েছেন, ২০০-রও বেশি পড়ুয়া সীমান্ত পার করে দেশে এসেছেন৷ ভূটান ও নেপালেরও বহু পড়ুয়া আপাতত ভারতে চলে এসেছেন৷ ভারত সরকার নিয়মিত বাংলাদেশ হাই কমিশনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে৷ বাংলাদেশ ল্যান্ড-পোর্ট অথরিটির সঙ্গেও যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। যাতে ভারতীয় পড়ুয়ারা সুরক্ষিতভাবে দেশে ফিরে আসতে পারেন৷

বিগত তিন সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে বিক্ষোভের আগুন জ্বলছে বাংলাদেশ৷ কোটা বা সংরক্ষণ প্রত্যাহারের দাবিতে আন্দোলনে পথে নেমেছে পড়ুয়ারা৷ যোগ দিয়েছে সাধারণ মানুষ৷ বিক্ষোভ সামলাতে পুলিশের পাশাপাশি সেনাও নামিয়েছে সরকার৷ দুই পক্ষের সংঘর্ষে ক্রমেই বাড়ছে মৃতের সংখ্যা৷ গত সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তুমুল অশান্তি হয়৷ পরের দিন পুলিশের গুলিতে মৃতু্য হয় ৬ জনের৷ এরপরই সরকারের তরফে দেশের সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়৷

এই উত্তপ্ত পরিস্থিতির মাঝেই বাংলাদেশ থেকে ভারতে ফিরতে শুরু করেছে পড়ুয়ারা৷ ওপার বাংলার পরিস্থিতি ক্রমাগত অবনতি হতেই ভারতীয় পড়ুয়ারা দেশে ফিরতে শুরু করেছেন৷