• facebook
  • twitter
Friday, 22 November, 2024

গুণমান খারাপ, শক্তিগড়ে ঐতিহ্যের ল্যাংচা ঘরগুলোতে খাদ্য দপ্তরের ব্যাপক অভিযান ঘিরে চাঞ্চল্য

অভিযোগ নবান্নে আমিনুর রহমান, বর্ধমান, ১৯ জুলাই: পূর্ব বর্ধমানের শক্তিগড়ের ল্যাংচার জগৎ বিখ্যাত পরিচিতি। বর্ধমানের রাজাদের রাজত্বকাল থেকে এই ল্যাংচা ঐতিহাসিক তকমা পেয়ে এসেছে। সেই ল্যাংচার দোকানগুলোতে গুণমান নিয়ে একাধিক অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ পৌঁছে যায় নবান্নে। আর তারপরেই খাদ্য দপ্তরের ফুড সেফটি বিভাগের অফিসাররা ব্যাপক অভিযান চালালেন। তদন্তে ঘটনাস্থলে গিয়ে ল্যাংচা নির্মাতাদের একাধিক অনিয়ম ধরা

অভিযোগ নবান্নে

আমিনুর রহমান, বর্ধমান, ১৯ জুলাই: পূর্ব বর্ধমানের শক্তিগড়ের ল্যাংচার জগৎ বিখ্যাত পরিচিতি। বর্ধমানের রাজাদের রাজত্বকাল থেকে এই ল্যাংচা ঐতিহাসিক তকমা পেয়ে এসেছে। সেই ল্যাংচার দোকানগুলোতে গুণমান নিয়ে একাধিক অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ পৌঁছে যায় নবান্নে। আর তারপরেই খাদ্য দপ্তরের ফুড সেফটি বিভাগের অফিসাররা ব্যাপক অভিযান চালালেন। তদন্তে ঘটনাস্থলে গিয়ে ল্যাংচা নির্মাতাদের একাধিক অনিয়ম ধরা পড়ল। এব্যাপারে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি সহ নমুনা সংগ্রহ সবই চলল দিনভর। আর এ নিয়ে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। শহর বর্ধমান থেকে মাত্র কয়েক কিলোমিটার দূরে আমড়া এলাকায় গড়ে ওঠা ওই সব দোকানগুলোতে পুলিশের নজরদারি থাকবে বলেও ঘোষণা করা হয়।

এক সময়ে বর্ধমানের শক্তিগড়ে গুটি কয়েক ল্যাংচার দোকান ছিল। সবগুলো পুরনো। পরে জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণ হবার পর শক্তিগড় থেকে কিছুটা আগে আমড়া এলাকায় গড়ে ওঠে একাধিক ল্যাংচা ঘর। বাড়তে বাড়তে সেই সংখ্যা এখন প্রায় পঞ্চাশের বেশিতে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু দোকানগুলোতে তৈরি ল্যাংচা নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে গুণমানের অভিযোগ জমা পড়ছিল খাদ্য দপ্তরে। কিন্তু কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি বলে জানা গিয়েছে।

সূত্রের খবর, কয়েকদিন আগে নবান্নের কোনও এক আধিকারিকের আত্মীয় আমড়া থেকে ল্যাংচা কিনে রীতিমতো ঠকে যান। ওই অফিসারের কাছে এই ঘটনার খবর যাওয়ার পর বিষয়টি জানানো হয় পূর্ব বর্ধমানের খাদ্য দপ্তরে। তারপর ফুড সেফটি বিভাগের ১০টি দল ভাগ হয়ে একের পর এক দোকানে একসঙ্গে অভিযান শুরু করে। এক এক করে প্রায় ৩০ টি দোকানে অভিযান চালিয়ে একাধিক শিউরে উঠা অভিযোগ পাওয়া গেছে বলে দাবি করেন ফুড সেফটি বিভাগের অফিসাররা। ফুড সেফটি বিভাগের ডেপুটি সিএমওএইচ সুবর্ণ গোস্বামী বলেন, গুণমান যে খারাপ,  সে ব্যাপারে বিভিন্ন অভিযোগে সর্তক করা হয়েছে। মেয়াদ উত্তীর্ণ মিষ্টি বিক্রি, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে ল্যাংচা তৈরি, ল্যাংচায় নিষিদ্ধ রং ব্যবহারের মতো মারাত্মক অভিযোগ তোলা হয়েছে।

সবচেয়ে বড় কথা, প্রায় ১৫ টি ল্যাংচা ঘরে ফুড সেফটি অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ড অথরিটি ইন্ডিয়ার রেজিস্ট্রেশন বা লাইসেন্সই নেই। ৩২জন কর্মী আধিকারিকদের রিপোর্ট থেকে ওই তথ্য পাওয়া গিয়েছে। দোকানে দমকল বিধি না মানা, অস্বাস্থ্যকর কাঁচামাল ব্যবহার নিয়ে একাধিক অভিযোগ তোলা হয়েছে। সব ক্ষেত্রেই সর্তক করে নোটিশ জারি করা হয়েছে বলে জানা গেছে। এবার থেকে নিয়মবিধি না মানা হলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে পুলিশ ও খাদ্য দপ্তরের আধিকারিকরা ল্যাংচার দোকানগুলোতে নজরদারি রাখবে বলেও জানা গিয়েছে। এদিকে শক্তিগড়ের মতো জায়গায় ঐতিহ্যের ল্যাংচা ঘরগুলোতে ক্রেতাদের সঙ্গে এধরনের ঘটনাকে প্রতারণার সমান বলে দাবি করা হয়েছে বিভিন্ন মহলের পক্ষ থেকে। ঘটনা ঘিরে শক্তিগড় থেকে শুরু করে বর্ধমান পর্যন্ত শোরগোল পড়ে গিয়েছে।