• facebook
  • twitter
Friday, 22 November, 2024

অভ্যন্তরীণ চাহিদা পূরণ করে অতিরিক্ত মাছ গেল প্রতিবেশি রাজ্যে

সহযোগিতা নেওয়া হয়েছে বিশ্বভারতীর গবেষকদের খায়রুল আনাম: মাছে-ভাতে বাঙালির রসনা তৃপ্তিতে এরাজ্যের মৎস্যভোজিদের এখনও অনেকখানি নির্ভর করতে হয় ভিন রাজ্য থেকে আমদানি করা মাছের উপরে। একই পরিসংখ্যান রয়েছে ডিমের ক্ষেত্রেও। আর এই দু’টি বিষয়ের দিকে দৃষ্টি দিয়ে রাজ্য সরকার উৎপাদন বাড়িয়ে অভ্যন্তরীণ চাহিদা পূরণ করে উদ্বৃত্ত মাছ ও ডিম ভিনরাজ্যে রফতানির উদ্দেশ্যে বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি নিয়ে

সহযোগিতা নেওয়া হয়েছে বিশ্বভারতীর গবেষকদের

খায়রুল আনাম: মাছে-ভাতে বাঙালির রসনা তৃপ্তিতে এরাজ্যের মৎস্যভোজিদের এখনও অনেকখানি নির্ভর করতে হয় ভিন রাজ্য থেকে আমদানি করা মাছের উপরে। একই পরিসংখ্যান রয়েছে ডিমের ক্ষেত্রেও। আর এই দু’টি বিষয়ের দিকে দৃষ্টি দিয়ে রাজ্য সরকার উৎপাদন বাড়িয়ে অভ্যন্তরীণ চাহিদা পূরণ করে উদ্বৃত্ত মাছ ও ডিম ভিনরাজ্যে রফতানির উদ্দেশ্যে বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি নিয়ে চলেছে। যাতে মাছ ও ডিম উৎপাদনকারীদের স্বাবলম্বী করার সাথে সাথে তাঁদের আর্থিক দিক থেকে লাভবান করা যায়। যার সুফলও মিলছে একটু একটু করে। এখনও পর্যন্ত ডিম না হলেও মাছ উৎপাদনে সাফল্য দেখাতে পেরেছে বীরভূম জেলা।

জেলায় এই মুহূর্তে যে ২১ হাজার ৭০০ হেক্টর জলাভূমি রয়েছে, তার অধিকাংশকেই মাছ চাষের উপযোগী করে সেখানে জেলার মৎস্যভোজীদের কাছে প্রিয় টেবিল ফিশ অর্থাৎ রুই, কাতলা ও মৃগেল–এই তিন প্রকার মাছ চাষের মধ্যে দিয়ে এই সাফল্য এসেছে। এজেলা যেমন খরা প্রবণ জেলায় মৎস্যচাষের উপযোগী, তেমনি বৃহৎ জলাশয় ও দিঘি না থাকা সত্ত্বেও লালমাটির এই জেলায় শেষ এক বছরে যেখানে বাৎসরিক মাছের চাহিদা ৭৫ হাজার মেট্রিক টন, সেখানে ৮৩ হাজার মেট্রিক টন মাছ উৎপাদিত হয়েছে। অর্থাৎ, জেলার অভ্যন্তরে মাছের চাহিদা পূরণ করে পার্শ্ববর্তী জেলা ও রাজ্যে ৮ হাজার মেট্রিক টন মাছ পাঠানো সম্ভব হয়েছে। আর জেলায় মাছ উৎপাদনের ক্ষেত্রে এই সাফল্যের পিছনে যথেষ্ট অবদান রয়েছে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের। বিশ্বভারতীর গবেষকরা জেলায় মাছ উৎপাদনের ক্ষেত্রে সমস্ত রকমের সহযোগিতা দিয়ে এই সাফল্যের অন্যতম সহায়ক হয়ে উঠেছে। জেলার তিনজন সেরা মাছ চাষিকে মৎস্য দফতরের পক্ষ থেকে সম্মাননাও জ্ঞাপন করা হয়েছে।

জেলায় মাছের এই উৎপাদন বৃদ্ধিতে রাজ্য সরকার সরাসরি মাছ চাষিদের আর্থিক সহায়তাও দিয়েছে। মাছ চাষিদের ক্রেডিট কার্ডে ঋণ যেমন দেওয়া হয়েছে, তেমনি বেশকিছু মাছ চাষিকে বসবাসের জন্য বাড়িও দেওয়া হয়েছে। জেলার আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকার মাছ চাষিদের বিনামূল্যে মাগুর, সিঙি মাছের চারা ছাড়াও চুন এবং মাছের খাবারও দেওয়া হয়েছে।

জেলায় মাছ উৎপাদনের ধারা অব্যাহত রাখতে সাড়ে ৭ বিঘার বেশি আয়তনের ৮ টি জলাশয়ে মাছ চাষ করার জন্য পৃথক পৃথকভাবে ১০ লক্ষ টাকা করে আর্থিক সহযোগিতা দেওয়া হয়েছে প্রশাসনের পক্ষ থেকে। দেওয়া হয়েছে, ১৭ কুইন্টাল পর্যন্ত মাছের চারা। ৩ হাজার ক্ষুদ্র মাছ চাষিকে দেওয়া হয়েছে ২০ কেজি করে মাছের চারা। যাতে ১০ হাজারের বেশি মাছ উৎপন্ন হবে বলে আশা করা হচ্ছে। যা এজেলাকে মাছ উৎপাদনে ভবিষ্যতে আরও সমৃদ্ধির দিকে নিয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।