বুধবার দুপুরে কলকাতা হাইকোর্টে বীরভূমের লাভপুর এলাকার খুনের এক মামলার পুনরায় তদন্তের নির্দেশ জারি করা হয়। ৯ বছর পূর্বে এই মামলার যিনি তদন্তকারী পুলিশ অফিসার ছিলেন, তাঁকেই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে মামলার পুনরায় তদন্তের। তবে বীরভূমের পুলিশ সুপারের নজরদারিতে তিনমাসের মধ্যেই তদন্তের কাজ শেষ করে ফেলতে হবে বলে আদেশনামায় উল্লেখ আছে।
কলকাতা হাইকোর্টের এহেন নির্দেশে ভীষণ চাপে পড়ে গেলেন লাভপুরের বিধায়ক মণিরুল ইসলাম। কেননা এই মামলায় তিনি মূল অভিযুক্ত হিসাবে রয়েছেন। মামলার তদন্তে প্রথমভাগে এই স্থানীয় বিধায়ক মণিরুল ইসলাম সহ ২২ জন অভিযুক্তদের অভিযােগ থেকে অব্যাহতি দিয়েছিলেন তদন্তকারী পুলিশ অফিসার। সেসময় লাভপুর বিধায়ক শাসকদলের প্রভাবশালী বিধায়ক হিসাবে ছিলেন। বর্তমানে তিনি ‘ঘরপােড়া গরু’র মত রাজনৈতিক ময়দানে বিচরণ করছেন। দিল্লি গিয়ে দলবদল করলেও বিজেপিতে অচ্ছুৎ অবস্থায় আছেন। তাই রাজ্য পুলিশের তদন্তে দলত্যাগী তৃণমূল বিধায়ককে নিয়ে নানান জল্পনা জেলা রাজনৈতিকমহলে।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১০ সালে লাভপুরে ৩ জন খুন হয়েছিলেন। নিহতেরা হলেন ধানু সেখ, কাটুন সেখ এবং তুরুক সেখ। এই খুনে অভিযােগকারী এলাকার বিধায়ক মনিরুল ইসলাম সহ ৫৫ জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযােগ দায়ের করেন। পুলিশি তদন্তে চার্জশিট পেশে দেখা যায়, বিধায়ক মনিরুল ইসলাম সহ ২২ জনকে তাদের বিরুদ্ধে ওঠা খুনের অভিযােগ থেকে নিষ্কৃতি দেওয়া হয়েছে। এহেন পুলিশি তদন্ত রিপাের্টে অসনতুষ্ট হয়ে ২০১৫ সালে ডিসেম্বর মাসে সিউড়ি জেলা আদালতে মামলাকারী পুনরায় তদন্তের জন্য পিটিশন দাখিল করেন।
সেই পিটিশন গ্রহণ না হওয়ায় কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় নিহতের পরিবার। বুধবার দুপুরে কলকাতা হাইকোর্ট এর বিচারপতি মধুমতী মিত্রের বেঞ্চ জানিয়ে দেয়— ২০১০ সালের এই খুনের মামলায় পুনরায় তদন্ত করবেন আগেকার তদন্তকারী পুলিশ অফিসার। পুলিশ সুপারের নজরদারিতে এই তদন্ত চলবে। এবং তা শেষ করতে হবে তিনমাসের মধ্যেই। সেইসাথে ২০১৮ সালের সাক্ষী সুরক্ষা প্রকল্প আইনে মামলাকারী এবং নিহতের পরিবারকে পুলিশি নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে হবে।