তেহরান, ১১ জুলাই– আমেরিকার সেনা অভিযানে নিহত আইএস (ইসলামিক স্টেট) নেতা আবু বকর আল বাগদাদির স্ত্রী আসমা ফাওজি মহম্মদ আল-কুবায়সির মৃতু্যদণ্ডের সাজা হল৷ বুধবার ইরাকের একটি আদালত সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে জডি়ত থাকা এবং মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধে তাঁকে প্রাণদণ্ড দিয়েছে বলে পশ্চিম এশিয়ার কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের দাবি৷
বাগদাদির ‘প্রথম স্ত্রী’ আসমা আইএসের অন্দরে উম্মে হুদাইফা নামে পরিচিত৷ রানিয়া মেহমুদ তাঁর আর এক ছদ্মনাম৷ বাগদাদির মৃতু্যর আগেই ২০১৮ সালের জুন মাসে সিরিয়া সীমান্তবর্তী এলাকা হাতায় প্রদেশ থেকে আসমাকে তুরস্কের সেনা গ্রেফতার করেছিল৷ পরে ইরাকের হাতে তাঁকে তুলে দেওয়া হয়৷ তাঁর থেকে জঙ্গি সংগঠনটির ‘অভ্যন্তরীণ কার্যকলাপ’ সম্পর্কে বহু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গিয়েছে বলে দাবি করা হয়েছিল তুরস্কের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থার তরফে৷
পশ্চিম বাগদাদের কার্খের ফৌজদারি আদালতের রায়ে বলা হয়েছে, ২০১৪ সালে নিনেভে প্রদেশের পশ্চিম প্রান্তের শিঞ্জর অঞ্চল এবং আশপাশের এলাকা দখল করে নিয়েছিল আইএস বাহিনী৷ সে সময় তারা হাজার হাজার ইয়াজিদিকে হত্যা এবং বন্দি করেছিল৷ অসংখ্য ইয়াজিদি নারীকে তারা জোর করে যৌনদাসী হতে বাধ্য করেছিল৷ আর শিঞ্জর অঞ্চল থেকে আইএস সেনাদের অপহরণ করে আনা ইয়াজিদি নারীদের আটকে রেখে অত্যাচার চালানোয় প্রত্যক্ষ ভূমিকা ছিল আসমার৷
এমনই এক নির্যাতিতা ইয়াজিদি মহিলার পরিবারের দায়ের করা মামলার প্রেক্ষিতেই মৃতু্যদণ্ড হয়েছে আসমার৷ প্রসঙ্গত, আইএসের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা বাগদাদি ২০১৪ সালে নিজেকে ‘খলিফা’ হিসাবে ঘোষণা করেন৷ তার পর থেকে হিংসার নিরিখে অন্যান্য সব জঙ্গি সংগঠনকে টেক্কা দিয়ে দিয়েছিল আইএস৷
২০১৯ সালের ২৬ অক্টোবর সিরিয়ার ইদলিব প্রদেশের বারিশা এলাকায় বাগদাদির ডেরায় হানা দেয় মার্কিন বাহিনীর ডেল্টা ফোর্স এবং ৭৫তম রেঞ্জার্স রেজিমেন্ট৷ আচমকা হামলায় কোণঠাসা হয়ে পডে়ন বাগদাদি৷ তিন সন্তানকে নিয়ে একটি সুড়ঙ্গের মধ্যে আশ্রয় নিয়েছিলেন তিনি৷ শেষ পর্যন্ত সেখানেই আত্মঘাতী জ্যাকেটের বোতাম টিপে তিন সন্তান ও নিজেকে উডি়য়ে দেন৷