• facebook
  • twitter
Friday, 18 October, 2024

বন্যা-বিধ্বস্ত অসম এবং অশান্ত মণিপুর পরিদর্শনে রাহুল, কথা বলেন আক্রান্তদের সঙ্গে

  গুয়াহাটি ও ইম্ফল, ৮ জুলাই –  উত্তর পূর্বের দুই রাজ্য,  বন্যা-বিধ্বস্ত অসম এবং অশান্ত মণিপুর পরিদর্শন করলেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধি।  অসমে বন্যাকবলিতদের সঙ্গে সাক্ষাতের পর তিনি মণিপুরের দাঙ্গায় ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে দেখা করেন। গত মাসে দাঙ্গার জেরে মণিপুরের জিরিবাম জেলা থেকে  ১৭০০ মানুষ আশ্রয় নেন অসমে। মণিপুরের জিরিবাম থেকে অসমে আসা সেই শরণার্থীদের সঙ্গে এদিন কথা বলেন রাহুল। রাহুল গান্ধির সামনে

  গুয়াহাটি ও ইম্ফল, ৮ জুলাই –  উত্তর পূর্বের দুই রাজ্য,  বন্যা-বিধ্বস্ত অসম এবং অশান্ত মণিপুর পরিদর্শন করলেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধি।  অসমে বন্যাকবলিতদের সঙ্গে সাক্ষাতের পর তিনি মণিপুরের দাঙ্গায় ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে দেখা করেন। গত মাসে দাঙ্গার জেরে মণিপুরের জিরিবাম জেলা থেকে  ১৭০০ মানুষ আশ্রয় নেন অসমে। মণিপুরের জিরিবাম থেকে অসমে আসা সেই শরণার্থীদের সঙ্গে এদিন কথা বলেন রাহুল। রাহুল গান্ধির সামনে কান্নায় ভেঙে পড়েন কয়েকজন মহিলা । রাহুল আশ্বাস দেন, তাঁদের দুর্দশার কথা তিনি  সংসদে  তুলে ধরবেন।
অসমের বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে সোমবার সকালে অসমে যান লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধি। সোমবার সকাল ১০ টা নাগাদ অসমের শিলচর বিমানবন্দরে নামেন রাহুল। এরপর তিনি যান কছর জেলার লখিপুরের থালাই ইন-এর ক্যাম্পে। ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নেওয়া, বন্যায় গৃহহীনদের সঙ্গে কথা বলেন রাহুল।  কাছাড় জেলায় বেশ কয়েক জন বন্যাদুর্গতের সঙ্গে কথা বলেন তিনি  । প্রসঙ্গত, বিরোধী দলনেতা হওয়ার পর এই প্রথম উত্তর-পূর্ব ভারতে এলেন রাহুল। 
 
প্রসঙ্গত, গত কয়েক দিন ধরে লাগাতার ভারী বৃষ্টিতে অসমের বিস্তীর্ণ অংশ বানভাসি। প্লাবিত ৩০টি জেলা। অধিকাংশ নদীর জল বিপদসীমা অতিক্রম করছে। রাজ্যের প্রায় ২৩ লক্ষ মানুষ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত, প্রাণ হারিয়েছেন ৭৮ জন। বন্যার জেরে৬৮ হাজার হেক্টরেরও বেশি চাষজমি সেখানে ক্ষতিগ্রস্ত। অসমের  ত্রাণ শিবির থেকে সড়কপথে মণিপুরের জিরিবামের ত্রাণ শিবিরের উদ্দেশে রওনা হন রাহুল।জিরিবামের হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলে তিনি দাঙ্গা বিধ্বস্ত রাজ্যের ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে দেখা করেন। এদিকে, জিরিবামে রাহুলের সফরের আগেই নিরাপত্তা বাহিনীর কনভয়ে উগ্রপন্থীরা হামলা করে বলে খবর। দুই পক্ষের গুলির লড়াই চলে। তবে কোনও হতাহতের খবর নেই।

এদিকে রাহুল এদিন জিরিবামে পৌঁছনোর আগে নতুন করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে মণিপুরের এই জেলা। সোমবার সকালেও জিরিবামে গুলি চলে বলে খবর।  জানা যায়, জিরিবামের মেইতেই জনগোষ্ঠীদের বসবাসের এলাকায় ঢুকে বেশ কয়েক রাউন্ড গুলি চালায় কয়েকজন দুষ্কৃতী।  যদিও অভিযুক্তদের চিহ্নিত করা সম্ভব হয়নি।  সোমবার ভোররাত ৩ টে থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত গুলিযুদ্ধ চলে। পুলিশ সূত্রে খবর, এলাকার বেশ কয়েকটি বাড়িতেও গুলি চালায় ওই জঙ্গিরা।  যদিও এই ঘটনার জেরে রাহুলের জিরিবাম সফরে কোন ব্যাঘাত ঘটেনি।  

 এদিকে, রাহুলের এই সফরকে ঘিরে বাগ‌্‌যুদ্ধ শুরু হয়ে গিয়েছে কংগ্রেস এবং বিজেপির মধ্যে। কংগ্রেসের বক্তব্য, বন্যায় বিপর্যস্ত অসমে তো বটেই, এখনও পর্যন্ত গোষ্ঠীহিংসায় দীর্ণ মণিপুরে যাওয়ার সময় পাননি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি । কিন্তু রাহুল বার বার উত্তর-পূর্ব ভারতে ছুটে গিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর রাশিয়া সফরের সঙ্গে রাহুলের উত্তর পূর্বের সফরের তুলনা করে, কংগ্রেস এক্স পোস্টে লেখে,’আজ অজৈবিক প্রধানমন্ত্রী মস্কো পৌঁছেছেন, আর লোকসভার বিরোধী দলনেতা অসম, মণিপুরের সফর করছেন। যাঁরা নন বায়োলজিক্যাল প্রধানমন্ত্রীর সমর্থক, তাঁরা ঢাক পেটাবেন এটা বলে যে, প্রধানমন্ত্রী রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধ রুখে দিয়েছেন কিছুক্ষণের জন্য। হয়তো, মস্কো সফর এর থেকেও আরও অদ্ভুত কিছু দাবি দাওয়া নিয়ে হবে।’ বিজেপির পাল্টা কটাক্ষ, রাহুল মানুষের ‘দুর্দশা দেখতে পর্যটনে’ বেরিয়েছেন। সোমবার সকালে রাহুলকে শিলচর বিমানবন্দরে স্বাগত জানান অসম এবং মণিপুরের কংগ্রেস নেতারা।

 ২০২৩ সালের মে মাসে উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যে গোষ্ঠীহিংসা শুরু হওয়ার পর দু’বার মণিপুরে গিয়েছেন রাহুল। সোমবার তৃতীয় বারের জন্য সে রাজ্যে যান  তিনি। প্রায় ১৪ মাস ধরে চলা গোষ্ঠীহিংসায় মণিপুরে ২০০ জন প্রাণ হারিয়েছেন। মাঝে কয়েক মাস সে রাজ্য থেকে বড় অশান্তির খবর না পাওয়া গেলেও সম্প্রতি অসম সীমান্ত লাগোয়া জিরিবামে নতুন অশান্তির  সূত্রপাত হয়েছে ।