• facebook
  • twitter
Friday, 22 November, 2024

রাজ্যে উপাচার্য নিয়োগে সার্চ কমিটি গঠনের নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের

দিল্লি, ৮ জুলাই – রাজ্যে উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে জট কাটাতে সার্চ কমিটি গঠনের নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট।  সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি উদয় উমেশ ললিতকে  চেয়ারম্যান করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আগামী ২ সপ্তাহের মধ্যে এই প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। তিন মাসের মধ্যে বিজ্ঞাপন দিয়ে সরকারকে রাজ্যের সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগের প্রক্রিয়া শেষ করতে বলেছে শীর্ষ আদালত। কী পদ্ধতিতে নিয়োগ প্রক্রিয়া

দিল্লি, ৮ জুলাই – রাজ্যে উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে জট কাটাতে সার্চ কমিটি গঠনের নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট।  সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি উদয় উমেশ ললিতকে  চেয়ারম্যান করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আগামী ২ সপ্তাহের মধ্যে এই প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। তিন মাসের মধ্যে বিজ্ঞাপন দিয়ে সরকারকে রাজ্যের সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগের প্রক্রিয়া শেষ করতে বলেছে শীর্ষ আদালত। কী পদ্ধতিতে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে, তাও বলে দিয়েছে আদালত। সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশে খুশি রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করে তিনি লেখেন, ‘গণতন্ত্রের আবার জয় হল’.

সোমবার সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছে, সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি উদয় উমেশ ললিতের নেতৃত্বে এক বিশেষজ্ঞ দল গঠন করা হবে, যার চেয়ারম্যান হবেন প্রাক্তন বিচারপতি। চেয়ারম্যান কমিটিতে বিভিন্ন বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে প্রয়োজনে আরও চার বিশেষজ্ঞকে রাখতে পারেন। সব বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য একসঙ্গে কমিটি গঠন করা যেতে পারে। আবার আলাদা আলাদা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য আলাদা সার্চ কমিটিও গঠন করতে পারেন চেয়ারম্যান। এরপর তাঁরা উপাচার্য পদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনটি করে নাম বাছাই করে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পাঠাবেন। সেই নামগুলি থেকে একটি নাম বাছাই করে মুখ্যমন্ত্রী নিয়োগের সুপারিশ করে রাজভবনে পাঠাবেন। তাঁকে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসাবে নিয়োগ করবেন রাজ্যপাল। তিনিই রাজ্যের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য। সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, আগামী ২ সপ্তাহের মধ্যে এই প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। ৩ মাসের মধ্যে সরকারকে বিজ্ঞাপন দিয়ে প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে। সেই বিজ্ঞাপনে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের কথা উল্লেখ করতে হবে। গোটা প্রক্রিয়ার খরচ বহন করবে রাজ্য সরকার ।
 
রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজভবন ও রাজ্য সরকারের মধ্যে বিবাদ গড়ায়  সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত। সেই প্রেক্ষিতেই সোমবার সুপ্রিম কোর্ট  অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি ইউইউ ললিতের নেতৃত্বে তিন সদস্যের সার্চ কমিটি গঠন করার নির্দেশ দেয়। সার্চ কমিটি যে তিনটি নাম মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পাঠাবে, সেই নামগুলি যদি মুখ্যমন্ত্রীর পছন্দ না হয় তাহলে তিনি সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হতে পারেন। আবার একইরকমভাবে সার্চ কমিটি প্রস্তাবিত তিনটি নামের মধ্যে থেকে মুখ্যমন্ত্রী যাঁকে বাছবেন, রাজ্যপালের যদি তাঁকে পছন্দ না হয়, তিনিও শীর্ষ আদালতে যেতে পারেন। উচ্চশিক্ষা দফতর নোডাল বিভাগ হিসাবে কাজ করবে।  এই গোটা প্রক্রিয়ার জন্য সময় বরাদ্দ করা হয়েছে তিন মাস। সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, আগামী দু’সপ্তাহের মধ্যে এই প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে।

সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশের পরেই রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু তাঁর প্রতিক্রিয়া জানান।তিনি এক্স হ্যান্ডলে একটি ছবি পোস্ট করেন। তাতে সুপ্রিম কোর্টের সম্পূর্ণ নির্দেশটির কথা তুলে ধরেছেন তিনি। পাশাপাশি তাঁর প্রতিক্রিয়া, ” আবার গণতন্ত্রের জয় হল।’’

রাজ্য সরকারের আইনজীবী সঞ্জয় বসু তাঁর বিবৃতিতে লিখেছেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে রাজ্যপালের স্বেচ্ছাচারী এবং বেআইনি পদক্ষেপের অবসান ঘটেছে। রাজ্যপাল যেভাবে গত এক বছরে মুখ্যমন্ত্রী এবং রাজ্য সরকারকে অন্ধকারে রেখে উপাচার্য নিয়োগ করে গিয়েছেন, তা যে ভুল, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তা স্পষ্ট। সুপ্রিম কোর্টের অন্তর্বর্তী নির্দেশে যথেচ্ছ ক্ষমতা কেড়ে নেওয়া হয়েছে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার দেওয়া হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীকেই। কোর্ট সময়ও বেঁধে দিয়েছে। বিভিন্ন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে দেরি করে রাজ্যপাল যেভাবে রাজ্যের উন্নয়নের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছেন, সুপ্রিম কোর্ট সময় বেঁধে দিয়ে সেই বার্তাই দিয়েছে।’’

রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত দীর্ঘদিন ধরেই চলছে। রাজ্য সরকারের তরফে অভিযোগ, উচ্চশিক্ষা দফতরের সঙ্গে কোনও আলোচনা না করেই একের পর এক বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ করছিলেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। এই পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করে। এর পর একাধিকবার শুনানিতে মামলার গতিপ্রকৃতি নিয়ে আলোচনাও হয়। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশকে সম্মান জানিয়ে রাজভবনে গিয়ে এই বিষয়ে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পরেও জটিলতা থেকে যায় । যদিও দুপক্ষের আলোচনায় যাদবপুর, গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়-সহ বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ করা হয়।