বিরামহীন বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত উত্তরবঙ্গের পাহাড় ও সমতল
অর্ণব সাহা, শিলিগুড়ি: টানা বৃষ্টিতে উত্তরবঙ্গ বিপর্যস্ত। পাহাড় ও সমতলে পাল্লা দিয়ে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। প্রবল জলস্ফীতিতে ফুঁসছে তিস্তা। পাহাড়ে প্রায় প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও ধস নামছে। বুধবার ধস নেমে বন্ধ হয়ে গিয়েছে শিলিগুড়ি-সিকিম ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক। শুক্রবারও তা খোলেনি। প্রশাসন জানিয়েছে, রাস্তা থেকে ধসের বালি-পাথর সরানোর কাজ চলছে। তবে টানা বৃষ্টিতে কাজে সমস্যা হচ্ছে। এদিকে প্রবল বর্ষণে ধস নেমেছে তিস্তা বাজার থেকে দার্জিলিং যাওয়ার পথে মেল্লি বাজার রোডে। ফলে কার্যত ভেঙে পড়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। ঘুরপথে গাড়ি চলাচল করছে। তবে প্রশাসনের তরফে আগে থেকেই এই রাস্তায় যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছিল। জলপাইগুড়ি ও শিলিগুড়ির পাশপাশি আলিপুরদুয়ারেও ভারী বর্ষণ চলছে।
সমতলেও তিস্তা নদীর জল বিপদ সীমার উপর দিয়ে বইতে শুরু করেছে। সর্তকতা জারি করে আবহাওয়া দফতর পূর্বাভাস দিয়েছে অনবরত বৃষ্টি হবে শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ারে। শুক্রবার সকাল থেকে মেঘলা আকাশের সঙ্গে হাওয়া বইতে থাকে। এদিন সকাল থেকে অনবরত বৃষ্টি চলেছে। তিস্তায় মেখলিগঞ্জ-বাংলাদেশ বর্ডার পর্যন্ত অসংরক্ষিত এলাকায় জারি রয়েছে লাল সর্তকতা। পাশাপাশি এন এইচ ৩১ জলঢাকা নদীতে অসংরক্ষিত এলাকায় জারি রয়েছে লাল সর্তকতা। জলঢাকা নদীতেই সংরক্ষিত এলাকায় জারি হয়েছে হলুদ সর্তকতা। পাশাপাশি তিস্তা দোমাহানিতেও অসংরক্ষিত এলাকা জারি রয়েছে হলুদ সর্তকতা। জলপাইগুড়ি গজলডোবা তিস্তা ব্যারেজ থেকে শুক্রবার সকাল ছ’টায় ২২০৪.১১ কিউমেক জল ছাড়া হয়।
আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার সকাল ৮ টা পর্যন্ত শেষ চব্বিশ ঘণ্টায় আলিপুরদুয়ারে ২৭৬ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। যা এই মরশুমে এখনও পর্যন্ত রেকর্ড বৃষ্টি। যার ফলে শহরের বিভিন্ন এলাকায় জল জমে দুর্ভোগে পড়েছেন বাসিন্দারা। বিজি রোড, সারদাপল্লি, নিউ আলিপুরদুয়ার রেলস্টেশন সংলগ্ন এলাকার শতাধিক ঘর-বাড়িতে জল ঢুকেছে। শহরের ১,৮, ৯, ১৬, ১৩, ৫ ও ২০ নম্বর ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকা জলমগ্ন। শহরের ডিমা ও কালজানি নদীর চর এলাকা নদীর জলে প্লাবিত। জল বাড়ছে কালজানি, রায়ঢাক, তোর্সা, ডিমা-সহ বিভিন্ন নদীতে।
উত্তরবঙ্গে এবার মৌসুমী বায়ু সময়ের আগেই প্রবেশ করেছে। তার জেরে লাগাতার ভারী বৃষ্টি চলছে। সেই বৃষ্টি আরও কিছুদিন জারি থাকবে। এখনই সেই আবহাওয়া পরিবর্তনের কোনও সম্ভাবনা নেই।