• facebook
  • twitter
Friday, 22 November, 2024

১০ ডাউনিং স্ট্রিটকে বিদায় সুনকের, ব্রিটেনের মসনদে স্টারমার

লন্ডন, ৫ জুলাই –  ব্রিটেনে প্রায় দেড় দশক পর ক্ষমতা হারাল কনজারভেটিভ পার্টি ৷ কনজ়ারভেটিভ পার্টি -কে হারিয়ে নিরঙ্কুশ জয়লাভ করার পর লেবার পার্টির প্রধান কিয়ের স্টারমার সে দেশের নতুন প্রধানমন্ত্রী হলেন। জনমত সমীক্ষা অনুযায়ী প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ আসন নিয়ে ১০ ডাউনিং স্ট্রিটে ক্ষমতা দখল করলেন লেবার পার্টির নেতা কিয়ের স্টারমার ৷ পরাজয় হল প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনকের কনজারভেটিভ পার্টির ৷ ক্ষমতার

লন্ডন, ৫ জুলাই   ব্রিটেনে প্রায় দেড় দশক পর ক্ষমতা হারাল কনজারভেটিভ পার্টি ৷ কনজ়ারভেটিভ পার্টি -কে হারিয়ে নিরঙ্কুশ জয়লাভ করার পর লেবার পার্টির প্রধান কিয়ের স্টারমার সে দেশের নতুন প্রধানমন্ত্রী হলেন। জনমত সমীক্ষা অনুযায়ী প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ আসন নিয়ে ১০ ডাউনিং স্ট্রিটে ক্ষমতা দখল করলেন লেবার পার্টির নেতা কিয়ের স্টারমার ৷ পরাজয় হল প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনকের কনজারভেটিভ পার্টির ৷ ক্ষমতার এই পালাবদল হল ১৪ বছর পর। 

ব্রিটিশ পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ ‘হাউস অফ কমন্স’এ মোট আসন সংখ্যা ৬৫০ টি । সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য দরকার ৩২৬ টি আসন ৷ বুথফেরত সমীক্ষাকে সত্যি প্রমাণ করে সোমবার ভারতীয় সময় বিকেল সাড়ে ৩টে পর্যন্ত লেবাররা জিতেছে ৪১২টি। কনজারভেটিভ পার্টি অর্থাৎ টোরিরা ১২১ এবং অন্যেরা ১১৫টিতে জিতেছে। দু’টি আসনের ফলঘোষণা এখনও বাকি।  নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার ৩২৬ আসনের গণ্ডি অনায়াসে পেরিয়ে যান স্টারমারের দল ৷ ফলে জনমত সমীক্ষা সঠিক প্রমাণিত করে ১৪ বছর পর ফের ব্রিটেনে ক্ষমতা হারল টেরিরা  ৷ 

জনমত সমীক্ষা অনুযায়ী ভোট গণনা শুরু থেকেই এগিয়ে ছিল স্টারমারের দল ৷ যদিও গণনা শুরুর ৩ ঘণ্টা পরে প্রথম আসনে জয় পায় ঋষি সুনকের দল কনজারভেটিভ পার্টি ৷ কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বদলে যেতে থাকে চিত্র ৷ লন্ডনের হলবর্ন অ্যান্ড সেন্ট প্যানক্রাস আসন থেকে১৮ হাজারেরও বেশি ভোটে জয়লাভ করেন কিয়ের স্টারমার ৷ জয় নিশ্চিত হতেই ভোটারদের ধন্যবাদ জানিয়ে এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করেন তিনি ৷ লেখেন, “পরিবর্তন শুরু হয়ে গিয়েছে ৷”

সরকারিভাবে ভোটের ফল প্রকাশ্যে আসার পর হার স্বীকার করে দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চেয়ে নেন ঋষি সুনক ৷অভিনন্দন জানান তাঁর উত্তরসূরি স্টারমারকে।এরপর প্রথা মেনে বাকিংহাম প্রাসাদে গিয়ে রাজা তৃতীয় চার্লসকে ভোটের ফলাফল জানিয়ে প্রধানমন্ত্রিত্ব থেকে সরে দাঁড়ানোর কথা ঘোষণা করেন। এর পর ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন ১০ ডাউনিং স্ট্রিটে ফিরে বিদায়ী বক্তৃতা করেন তিনি। তিনি বলেন “আমি ক্ষমাপ্রার্থী” ৷ তাঁকে ভোট দেওয়ার জন্য সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে সুনক বলেন, “আপনার পক্ষে কথা বলব, সর্বদা আপনাদের সঙ্গে থাকব, প্রতিদিন আপনাদের হয়ে লড়াই করব ৷” নির্বাচনে কনজারভেটিভ পার্টির  শোচনীয় পরাজয় হলেও রিচমন্ড অ্যান্ড নর্থঅ্যালার্টন আসনে জেতেন  ব্রিটেনের বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী সুনক। নির্বাচনে ২৩ হাজার ৫৯টি ভোটে জয়লাভও করেছেন তিনি ৷ কিন্তু সমগ্র ব্রিটেনে তাঁর দলের প্রতি মানুষের ক্ষোভ মেটাতে পারেননি সুনক ৷ব্রিটেনের ইতিহাসে এই প্রথম ভোটবাক্সে ক্ষতবিক্ষত কনজারভেটিভ পার্টি ৷
 
এদিকে ব্রিটেনের মসনদে অভিষেক হল কিয়ের স্টারমারের। ঋষি সুনককে বিপুল ভোটে হারিয়ে ১০ ডাউনিং স্ট্রিটের ক্ষমতা দখল করেছেন তিনি। জয় নিশ্চিত হওয়ার পর দেশবাসীকে ধন্যবাদ জানান কিয়ের ৷ সরকারিভাবে প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা হওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগেই জয়ের ভাষণও দিয়ে দেন।  দেশবাসীর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “বহু লড়াই, বহু প্রচারের পর আমরা পেরেছি ৷ এবার থেকে পরিবর্তন হবে ৷” তবে এই জয় এক বড় দায়িত্ব এনে দিয়েছে তাঁকে, সেকথাও উঠে আসে  কিয়েরের বক্তব্যে ৷ তিনি বলেন, “এবার পরিবর্তন শুরু হল ৷ এটাই আপনার গণতন্ত্র, আপনার সম্প্রদায়, আপনার ভবিষ্যত ৷” স্টারমার বাকিংহামে রাজার কাছ থেকে আনুষ্ঠানিক ভাবে সরকার গড়ার আমন্ত্রণ আনতে যান। এর পর ডাউনিং স্ট্রিটের সেই ‘১০’ লেখা কালো দরজার সামনে দাঁড়িয়ে বক্তব্য রাখেন। পেশায় আইনজীবী লেবার নেতা বলেন, ‘‘আজ থেকেই পরিবর্তনের পালা শুরু হল দেশে।’’
 
২০১৯ সালের নির্বাচনে ৩৬৫ আসন পেয়েছিল কনজারভেটিভ পার্টি ৷ জয় লাভ করেছিলেন বরিস জনসন ৷ কিন্তু এরপর নানা কারণে ব্রিটেনবাসীর আস্থা হারিয়েছে টোরিরা, যার ফল ভোগ করতে হল সুনককে ৷  লেবার পার্টি পেয়েছিল ২০২ টি আসন ৷ কিন্তু তারপর দুর্বল  অর্থনীতি, সাম্প্রতিককালে  দেশে অপরাধের মাত্রা বৃদ্ধি, ঋষি সুনকদের জয়ের পিছনে প্রধান অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়  ৷ সর্বোপরি গত ৫ বছর ধরে কনজারভেটিভ পার্টির অন্তর্দ্বন্দ্ব এবং তিন বার প্রধানমন্ত্রী বদলের প্রভাবও এই ভোটবাক্সে পড়েছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।