মোল্লা জসিমউদ্দিন: বীরভূম ও পূর্ব বর্ধমান জেলার বেআইনী বালিঘাট নিয়ে বারবার প্রশ্নচিহ্ন দেখা গেছে।এতে হানাহানির ঘটনা যেমন বেড়েছে, ঠিক তেমনি স্থানীয় পুলিশ – প্রশাসনের নিস্ক্রিয় ভূমিকায় জটিলতা ক্রমশ বেড়েছে। অজয় নদের এপারে যেমন বীরভূম জেলা পড়ছে।ঠিক তেমনি ওপারে রয়েছে পূর্ব বর্ধমান জেলা। ঠিক এইরকম পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ বেআইনি খাদান রুখতে এবার বড় নির্দেশ দিল। বীরভূমে বিভিন্ন জায়গায় বেআইনি খাদানের শয়ে শয়ে অভিযোগ উঠে এসেছে।
এদিন এক মামলার শুনানি চলাকালীন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম নির্দেশ দিয়েছেন, -‘বীরভূমে বেআইনি খাদান আটকাতে স্পেশাল টিম গঠন করতে হবে জেলাশাসককে।সেই স্পেশাল টিমকে মাঝেমধ্যেই সারপ্রাইজ় ভিজিট করতে হবে’। হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি আরও জানিয়েছেন, -‘ওই স্পেশাল টিম যখন অভিযানে যাবে, তখন পর্যান্ত পুলিশি নিরাপত্তার বন্দোবস্ত রাখতে হবে। সেটি নিশ্চিত করতে হবে পুলিশ সুপারকে’। কলকাতা হাইকোর্ট আরও জানিয়েছে, -‘ ওই দল পরিদর্শনের পর একটি করে রিপোর্ট জমা দিতে হবে জেলাশাসকের কাছে’।
সেই রিপোর্ট দেখার পর জেলাশাসক প্রয়োজন বোধ করে আইনি পদক্ষেপ করতে পারবেন বলে জানিয়েছে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চ বেঞ্চ। প্রসঙ্গত রাজ্যে বেআইনি বালি-পাথরের খাদানকে কেন্দ্র করে অভিযোগ দীর্ঘদিনের। এর আগেও কলকাতা হাইকোর্টে এই সংক্রান্ত মামলা হয়েছিল। গত ২০২১ সালে একটি মামলায় হাইকোর্টের তৎকালীন প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের ডিভিশন বেঞ্চ বেআইনি বালি-পাথরের খাদান বন্ধের জন্য রাজ্য সরকারকে বিশেষ তদন্তকারী দল গঠনের নির্দেশ দিয়েছিল।পরবর্তীতে ফের সক্রিয় হয়ে উঠে বেআইনী বালিঘাট চক্র। অজয় নদের এপারে বীরভূমের ইলামবাজার -বোলপুর – নানুর এবং অজয় নদের ওপারে আউশগ্রাম – মঙ্গলকোট – কেতুগ্রাম – কাটোয়া প্রভৃতি এলাকায় বালিমাফিয়াদের দাপট দেখার মত।
প্রসঙ্গত, বীরভূমে অজয় নদের মতো ময়ুরাক্ষী নদ নদীগুলি রয়েছে। ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে – ‘ কলকাতা হাইকোর্ট বীরভূমের জেলাশাসক কে বেআইনী বালিঘাট নিয়ে বিশেষ দল গড়তে বলেছে ঠিকই। তবে পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসন কেও যুক্ত করলে আরও কার্যকর হতো বেআইনী বালিঘাট অভিযান । কেননা নদের এপারে বীরভূম যেমন রয়েছে, ঠিক তেমনি ওপারে পূর্ব বর্ধমান জেলা পড়ছে। প্রকৃত বালিঘাটের ইজারদার কারা? তাঁদের লিজের বিস্তারিত তথ্য কি? এগুলি জানা প্রয়োজন। আবার বীরভূমে জেলা পুলিশ প্রশাসন অভিযান চালালে বালিলুটেরা পূর্ব বর্ধমানে সহজেই আশ্রয় নেবে’।