• facebook
  • twitter
Friday, 22 November, 2024

‘দিল্লির তাজ হোটেলের অজানা ঘটনা প্রকাশ্যে আসতে শুরু করবে’, শপথ জট নিয়ে রাজ্যপালকে হুঁশিয়ারি কুনালের

নিজস্ব প্রতিনিধি : তৃণমূলের দুই নবনির্বাচিত বিধায়ক সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রায়াত হোসেনের শপথ জট অব্যাহত। বিধানসভা-রাজভবনের ঠান্ডা লড়াইয়ের মাঝেই এবার রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের উপর অন্য চাপ তৈরি করল তৃণমূল। বরাহনগর এবং ভগবানগোলা বিধানসভা উপনির্বাচনে জেতার পর ২৫ দিন কেটে গেলেও এখনও শপথ নিতে পারেননি সায়ন্তিকা এবং রায়াত। পরিষদীয় স্তরে যখন এই বিষয়ে টানাপড়েন চলছে, তখন

নিজস্ব প্রতিনিধি : তৃণমূলের দুই নবনির্বাচিত বিধায়ক সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রায়াত হোসেনের শপথ জট অব্যাহত। বিধানসভা-রাজভবনের ঠান্ডা লড়াইয়ের মাঝেই এবার রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের উপর অন্য চাপ তৈরি করল তৃণমূল। বরাহনগর এবং ভগবানগোলা বিধানসভা উপনির্বাচনে জেতার পর ২৫ দিন কেটে গেলেও এখনও শপথ নিতে পারেননি সায়ন্তিকা এবং রায়াত। পরিষদীয় স্তরে যখন এই বিষয়ে টানাপড়েন চলছে, তখন রাজ্যপাল বোসকে সোমবার বেলা ৩টে পর্যন্ত সময় বেঁধে দিলেন রাজ্য তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। রাজ্যপালের ‘কীর্তি’ ফাঁসের প্রচ্ছন্ন হুঁশিয়ারি দিলেন কুণাল। শুক্রবার কুণাল বলেন, “রাজ্যপালকে আমি সম্মান করি। কিন্তু আমি তৃণমূলের একজন সৈনিক হিসেবে বলতে পারি উনি বিজেপির লোকের মতো আচরণ করছেন। যদি সোমবার বেলা ৩টের মধ্যে আমাদের দু’জন জয়ী প্রার্থী বিধায়ক হিসেবে শপথ নিতে না পারেন, তা হলে মঙ্গলবার থেকে দিল্লির তাজ প্যালেস হোটেলে কী ঘটেছিল, সেই অজানা ঘটনা প্রকাশ্যে আসতে শুরু করবে।”
কুনালের এই মন্তব্যের পরই জল্পনা তৈরী হয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে। ঠিক কী হয়েছিল দিল্লির তাজ প্যালেসে, তা অবশ্য খোলসা করেননি কুণাল। সম্প্রতি শ্লীলতাহানির অভিযোগে শিরোনামে এসেছেন রাজ্যপাল বোস। রাজভবনের এক অস্থায়ী মহিলা কর্মী রাজ্যপালের বিরুদ্ধে হেয়ার স্ট্রিট থানায় শ্লীলতাহানি এবং যৌন হেনস্থার অভিযোগ এনেছিলেন। সেই একই সময়ে দিল্লির তাজ হোটেলে ঘটে যাওয়া পুরনো একটি ঘটনার ইঙ্গিত করা হয়েছিল শাসকদলের তরফে। অনেকের বক্তব্য, কুণাল সেটার কথাই প্রকাশ্যে আনতে চেয়েছেন। রাজ্যপাল বিধায়কদ্বয়ের শপথগ্রহণে বিঘ্ন ঘটাতে চাইছেন বলেও মন্তব্য করেন কুনাল। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বিধায়কের শপথগ্রহণ জট তৈরী হওয়ার মতো ঘটনা বাংলার বুকে নতুন নয়। তবে সায়ন্তিকা এবং রায়াতের ক্ষেত্রে এই জল্পনা দিনে দিনে বেড়েই চলেছে। রাজভবন-বিধানসভার সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছে নবান্নও। কিন্তু কিভাবে? মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরাসরিই এ প্রসঙ্গে বলেছেন, সায়ন্তিকারা রাজভবনে যাবেন না। মমতার ভাষায়, “রাজভবনে যা কীর্তিকলাপ হয়, তাতে ওখানে মেয়েরা যেতে ভয় পায়।” রাজভবনে শ্লীলতাহানির অভিযোগ সামনে আসার পরও মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, “আমি আর রাজভবনে যাব না। প্রয়োজন হলে রাস্তায় দেখা করব।”
অন্যদিকে রাজ্যপালের বক্তব্য, সায়ন্তিকা এবং রায়াতকে রাজভবনে গিয়েই শপথ নিতে হবে। কারণ এটিই সাংবিধানিক নিয়ম। সায়ন্তিকারা পাল্টা বলছেন, তাঁরা রাজভবনে যাবেন না। রাজ্যপাল বিধানসভায় আসুন অথবা বিধানসভার স্পিকারকেই শপথগ্রহণ করানোর দায়িত্ব দিন। সেই দাবিতে বিধানসভা চত্বরে বুধবার থেকে ধর্না শুরু করেছেন সায়ন্তিকা এবং রায়াত। শুক্রবারও তাঁরা ধর্না চালিয়েছেন বিধানসভায় বি আর আম্বেদকর মূর্তির পাদদেশে। মমতার নির্দেশে তাঁদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন তৃণমূলের মন্ত্রী এবং বিধায়কেরাও। রাজ্যপাল অবশ্য বুধবার বিকেলের বিমানেই দিল্লি চলে গিয়েছেন। পাশাপাশি বিধানসভার স্পিকারও সংশ্লিষ্ট ঘটনায় তৎপর হয়েছেন। ইতিমধ্যেই এ ব্যাপারে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে চিঠি লিখেছেন বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যপাল বোসের আচরণ ‘সুস্থ গণতন্ত্রের পরিপন্থী’ বলেও রাষ্ট্রপতিকে জানিয়েছেন তিনি। টেলিফোনে উপরাষ্ট্রপতি তথা বাংলার প্রাক্তন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের সঙ্গেও কথা বলেছেন। প্রয়োজনে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন স্পিকার। এই জটিল পরিস্থিতিতে স্বাভাবিকভাবে কুণালের হুঁশিয়ারি ঘিরে সমাজে কৌতূহল তৈরি হয়েছে।কোন ঘটনা প্রকাশ্যে আনতে চান কুনাল? এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “অপেক্ষা করুন, সময় তো হয়েই এল। রাজ্যপাল সোমবার দুপুরের মধ্যে শপথগ্রহণের ব্যবস্থা না করলে তখনই দেখতে পাবেন!” এ ব্যাপারে রাজভবনের অবশ্য কোনও প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি।