রাঁচি , ২৮ জুন – জমি দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত আর্থিক কেলেঙ্কারি মামলায় জামিন পেলেন ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন। তাঁর জামিনের আবেদন মঞ্জুর করল ঝাড়খণ্ড হাই কোর্ট। ঝাড়খন্ড উচ্চ আদালতের এই রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গত ৩১ জানুয়ারি ঝাড়খণ্ডে জমি দুর্নীতি সংক্রান্ত বেআইনি আর্থিক লেনদেনের মামলায় ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা নেতা হেমন্ত সোরেনকে গ্রেফতার করেছিল ইডি।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এক্স হ্যান্ডেলের পোস্টে লেখেন, ‘ একজন গুরুত্বপূর্ণ আদিবাসী নেতা , ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনকে একটি মামলার জন্য ইস্তফা দিতে হয়েছিল। আজ সেই মামলায় তাঁকে জামিন দিয়েছে মাননীয় হাইকোর্ট। আজকের এই রায়ে আমি খুব খুশি। খুব তাড়াতাড়ি তিনি জনসাধারণের প্রতি তাঁর কাজ শুরু করবেন।’ প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনের গ্রেফতারি নিয়ে আগেই সরব হয়েছিলেন মমতা। হেমন্ত সোরেনের গ্রেফতারির পর তাঁর স্ত্রীয়ের সঙ্গে ফোনে কথাও বলেন তিনি।
লোকসভা নির্বাচনে প্রচারের জন্য সুপ্রিম কোর্টে অন্তর্বর্তী জামিনের আবেদন জানিয়েছিলেন হেমন্ত সোরেন। দুদিনের সওয়াল-জবাবের পর তথ্য গোপনের অভিযোগে তাঁর জামিনের আবেদন খারিজ করে দিয়েছিল শীর্ষ আদালত।
বস্তুত, সুপ্রিম কোর্টে গ্রেফতারি বিষয়ক দু’টি পৃথক মামলা করেছিলেন সোরেন। একটি ছিল গ্রেফতারির বিরুদ্ধে। অন্যটি ছিল জামিনের আবেদন জানিয়ে করা মামলা। শীর্ষ আদালতের বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত এবং বিচারপতি সতীশচন্দ্র শর্মার বেঞ্চে মামলাগুলি শুনানির জন্য ওঠে। বিচারপতিরা জানান, আদালতের কাছে তথ্য গোপন করেছেন সোরেনের আইনজীবীরা। তাই সোরেনের আবেদনে সাড়া দেয়নি আদালত। এর পরেই মামলা প্রত্যাহার করে নেন তাঁর আইনজীবীরা।
প্রসঙ্গত, আবগারি দুর্নীতি মামলায় ধৃত দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়ালকে গত ২০ জুন রাউস অ্যাভিনিউ আদালত জামিন দিলেও ইডির আবেদনের ভিত্তিতে দিল্লি হাই কোর্ট তা খারিজ করে দেয়। এর পর আদালতের নির্দেশে সিবিআই হেফাজতে পাঠানো হয় । হেমন্তের জামিনের বিরুদ্ধেও তদন্তকারী সংস্থা ইডি সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হতে পারে বলে সূত্রের খবর। শীর্ষ আদালত সেই আবেদনে সাড়া দিলেহেমন্তের মুক্তিও আটকে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে আইনজীবীদের একাংশের অনুমান ।
এদিন আদালতের রায়কে স্বাগত জানান সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদব। এক্স হ্যান্ডেলে সোরেনের একটি ছবি পোস্ট করে ক্যাপশনে তিনি লেখেন , ‘সত্যের পথে থাকলে, সাময়িক সমস্যা হলেও পরাজয় ঘটে না।’
গত ১৩ মে পিএমএলএ সংক্রান্ত রাঁচির বিশেষ আদালত হেমন্তের জামিনের আবেদন খারিজ করেছিল। তার পরেই হাই কোর্টে জামিনের আবেদন জানিয়েছিলেন তিনি। অবশেষে প্রায় পাঁচ মাস পরে জামিনে মুক্তি পেতে চলেছেন হেমন্ত সোরেন ।