হীরক কর, বালুরঘাট: নানান যুদ্ধের মধ্যে দিয়ে সমাজে নিজেদের স্থান তৈরির লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন রূপান্তরকামী মানুষেরা। শিক্ষা থেকে সাহিত্য সর্বস্তরেই এখন তৃতীয় লিঙ্গ-রূপান্তরকামীরা এগিয়ে আসছেন। নিজদের পরিচিতি তৈরি করতে এখন তাঁরা সক্ষম। এবার ফ্যাশন শোতে অংশ নিয়ে সকলকে চমকে দিলেন তাঁরা। তাও আবার বালুরঘাটের মতো পশ্চিমবঙ্গের প্রত্যন্ত শহরে।
সরাসরি র্যাম্পের মঞ্চে তাক লাগালেন তৃতীয় লিঙ্গের প্রতিনিধিরা। ঝাঁ চকচকে মঞ্চে হেঁটে রাজ্যের ফ্যাশন জগতে নয়া নজির গড়লেন রূপান্তরকামীরা। সৌন্দর্যের দৌড়ে কোনও অংশেই তাঁরা যে পিছিয়ে নেই, তারই বার্তা দিল এই র্যাম্প ওয়াক। ‘ফ্যাশন শো’ এখন শুধুমাত্র কলকাতার মতো মেট্রোপলিটন সিটির অংশ নয়। বড় বড় মেট্রোপলিটন সিটির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বিভিন্ন জেলার সদরগুলোতেও নিয়মিত ফ্যাশন শো অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এবার এই ফ্যাশন শোতে অভিনব চমক দেখল বালুরঘাট।
এই ‘ফ্যাশন শো’-এর অন্যতম প্রতিযোগী আরোহী রায় জানান, এই শো-তে প্রায় ছয় থেকে সাতজন রূপান্তরকামী প্রতিযোগী অংশ নেন। তাঁরা সকলেই কলকাতা থেকে এসেছেন । সারা বালুরঘাটে এই শো নিয়ে সাড়া পড়ে গিয়েছিল। বাচ্চারাও অংশ নিয়েছে বলে জানান তিনি। মূলধারার ফ্যাশন শোয়ের মাঝে এরকম রূপান্তরকামীদের জন্য সুযোগ করে দেওয়ায় বেজায় খুশি বলেও জানিয়েছেন আরোহী। আরও এক প্রতিযোগী বীথিকা দাস। তিনি বলেন, আর এস ফিউশন হান্টের পক্ষ থেকে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। তিনি ছোট থেকেই মডেলিং করতে চাইতেন। এই সুযোগের ফলে তাঁর ছোটবেলার স্বপ্নপূরণ হয়েছে বলেও অভিমত তাঁর।
এই অনুষ্ঠানের আয়োজকরা জানিয়েছেন, বাচ্চা থেকে পুরুষ-মহিলা সহ তৃতীয় লিঙ্গদেরও এই র্যাম্পে হাঁটার সুযোগ করে দেওয়া হল। তৃতীয় লিঙ্গদের জন্য মডেলিং-এ আরও সুযোগ তৈরি করা উচিত। এই ‘ফ্যাশন শো’-তে শুধু মডেলিং-ই নয়, স্থানীয় নৃত্যশিল্পীদের কিছু দলও আনা হয়। যাঁরা নৃত্য পরিবেশন করেছেন বলেও জানিয়েছেন আয়োজকরা। ট্রান্সজেন্ডারদের আলাদা চোখে দেখার যে সমাজের নিয়ম চিরাচরিত চলে আসছে, তা ভাঙার জন্যই এই ফ্যাশন শোয়ের ভাবনা বলে আয়োজকদের তরফে জানানো হয়।