• facebook
  • twitter
Thursday, 21 November, 2024

দেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণার ৫০ বছর, ফের কংগ্রেসের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন মোদি 

দিল্লি, ২৫ জুন – দেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণার ৫০ বছরে ফের কংগ্রেসকে বিদ্ধ করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। মঙ্গলবার জরুরি অবস্থার ৫০তম বর্ষপূর্তি। অষ্টাদশ লোকসভার দ্বিতীয় দিনের অধিবেশন শুরু হওয়ার আগে সকালে নিজের এক্স হ্যান্ডলে একাধিক টুইট করে জরুরি অবস্থার ‘কালো দিনের’ কথা মনে করিয়ে দেন মোদি। একই সঙ্গে কংগ্রেসকে কটাক্ষ করে লেখেন, “যারা জরুরি অবস্থা

দিল্লি, ২৫ জুন – দেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণার ৫০ বছরে ফের কংগ্রেসকে বিদ্ধ করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। মঙ্গলবার জরুরি অবস্থার ৫০তম বর্ষপূর্তি। অষ্টাদশ লোকসভার দ্বিতীয় দিনের অধিবেশন শুরু হওয়ার আগে সকালে নিজের এক্স হ্যান্ডলে একাধিক টুইট করে জরুরি অবস্থার ‘কালো দিনের’ কথা মনে করিয়ে দেন মোদি। একই সঙ্গে কংগ্রেসকে কটাক্ষ করে লেখেন, “যারা জরুরি অবস্থা জারি করেছিল, তাদের সংবিধানের প্রতি ভালবাসা প্রকাশ করে কোনও অধিকার তাদের নেই। এরা একাধিকবার দেশে ৩৫৬ ধারা জারি করেছে, সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা খর্ব করার জন্য বিল এনেছে, সংবিধানের প্রতিটি দিক লঙ্ঘন করেছে।”

অষ্টাদশ লোকসভার বিশেষ অধিবেশন পুরোদমে চালু হওয়ার আগেই বিরোধী ইন্ডিয়া জোট প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে সংবিধানের অসম্মান ও অমান্য করার অভিযোগে শান দেয়। এরপর মঙ্গলবার কংগ্রেস নেত্রী, প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধির জারি করা জরুরি অবস্থা নিয়ে কংগ্রেসকে আবার একহাত নিলেন তৃতীয়বার প্রধানমন্ত্রীর কুর্সিতে বসা মোদি । সোমবার লোকসভার প্রথম অধিবেশন শুরুর আগে জরুরি অবস্থাকে দেশের গণতন্ত্রে ‘একটি কালো দাগ’ বলে অভিহিত করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। এদিন একইভাবে কংগ্রেসকে আক্রমণ করেন তিনি। ২৫ জুন হল দেশে একমাত্র জরুরি অবস্থা জারির ৪৯ বছর। ১৯৭৫ সালের সেই দিনগুলির কথা তুলে ধরে মোদি এদিন এক্সবার্তায় লিখেছেন, সংবিধানের প্রতি ভালোবাসা দেখানোর কোনও অধিকার নেই বিরোধী দলের।
 
মোদি ‘জরুরি অবস্থার কালাদিন’ স্মরণে লিখেছেন, ‘সেদিন যে পুরুষ ও মহিলারা জরুরি অবস্থার বিরোধিতা করে জেলে গিয়েছিলেন, আজ তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা দেখানোর দিন। জরুরি অবস্থার কালাদিনগুলি আমাদের মনে করিয়ে দেয়, কংগ্রেস দল কীভাবে ন্যূনতম নাগরিক অধিকার ও স্বাধীনতাকে পিষে দিয়েছিল। সেদিন তারা সংবিধান প্রদত্ত সমস্ত অধিকার কেড়ে নিয়েছিল। ক্ষমতার ব্যবহার করে কংগ্রেস সরকার যাবতীয় গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নিয়ে গোটা দেশকে একটা জেলে পরিণত করেছিল। কোনও ব্যক্তি তৎকালীন সরকারের বিরোধিতা করলে তাঁকে অত্যাচার করা হত।’  তিনি আরও লেখেন, ‘যে মানসিকতা নিয়ে জরুরি অবস্থা লাগা করা হয়েছিল সেই মনোভাব দলের অন্দরে এখনও রয়েছে। সংবিধানের প্রতি তাদের ঘৃণা লুকিয়ে রাখার চেষ্টা করলেও দেশবাসী তা বুজগতে পেরেছে।  আর সেজন্যই প্রতিবার তাদের প্রত্যাখ্যান করেছে। ‘
 

সোমবার অধিবেশনের প্রথম দিনই সংসদ চত্বরে হাতে সংবিধান নিয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র সাংসদেরা। মোদি যখন সংসদের ভিতর শপথবাক্য পাঠ করতে ওঠেন, তখন বেঞ্চে বসে মোদির উদ্দেশে সংবিধান দেখান রাহুল গান্ধি । পরে সংসদ থেকে বেরিয়ে তিনি বলেন, ‘‘মোদি  এবং বিজেপি সংবিধানকেই শেষ করতে চান। আমাদের সেই সংবিধানকে রক্ষা করার লড়াই করতে হচ্ছে।’’ মঙ্গলবার সেই সংবিধান অস্ত্রেই কংগ্রেসের উদ্দেশে পাল্টা তোপ দাগেন মোদি ।

১৯৭৫ সালের ২৫ জুন দেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধির আমলে দেশে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়। সাময়িক ভাবে সমস্ত নাগরিক অধিকার তুলে নেওয়া হয়। বিরোধী নেতাদের জেলবন্দি করা হয়। সংবাদমাধ্যমের উপরেও নজরদারির খাঁড়া নেমে আসে। এই পরিস্থিতি চলে টানা ২১ মাস, ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত। ১৯৭৭ সালের লোকসভা নির্বাচনে ইন্দিরার নেতৃত্বাধীন কংগ্রেস শোচনীয় ভাবে পরাজিত হয়। মঙ্গলবার সেই প্রসঙ্গ উত্থাপন করে মোদির দাবি , ক্ষমতায় টিকে থাকতে কংগ্রেস সরকার সেই সময় সমস্ত গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে অস্বীকার করেছিল।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, সোমবার এই বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গের মধ্যে বাদানুবাদে উত্তাল হয়ে ওঠে সংসদের নিম্নকক্ষ।