• facebook
  • twitter
Sunday, 24 November, 2024

মোদির বিরোধীতায় সংসদদের ভেতরে-বাইরে বিক্ষোভে উত্তাল সংসদ

অভিযোগ ভিন্ন হলেও একই সুরে শক্তি প্রদর্শন ইন্ডিয়া জোটের দিল্লি, ২৪ জুন– এনডিএর ৩.০ সরকারের প্রথম অধিবেশনের দিনই বিরোধীদের বিক্ষোভের মুখে মোদি সরকার৷ অষ্টাদশ লোকসভার দরজা খোলার আগেই মোদি সরকারকে ঘিরে ধরল ইন্ডিয়া জোট৷ সোমবার লোকসভার সদস্য হিসেবে মোদির শপথের আগেই শেয়ার কেলেঙ্কারি থেকে শুরু করে নিট, একাধিক কংগ্রেস, তৃণমূল সহ তামাম ইন্ডিয়া জোটের শরিক

অভিযোগ ভিন্ন হলেও একই সুরে শক্তি প্রদর্শন ইন্ডিয়া জোটের

দিল্লি, ২৪ জুন– এনডিএর ৩.০ সরকারের প্রথম অধিবেশনের দিনই বিরোধীদের বিক্ষোভের মুখে মোদি সরকার৷ অষ্টাদশ লোকসভার দরজা খোলার আগেই মোদি সরকারকে ঘিরে ধরল ইন্ডিয়া জোট৷ সোমবার লোকসভার সদস্য হিসেবে মোদির শপথের আগেই শেয়ার কেলেঙ্কারি থেকে শুরু করে নিট, একাধিক কংগ্রেস, তৃণমূল সহ তামাম ইন্ডিয়া জোটের শরিক দলের এমপিরা গান্ধি মূর্তির পাদদেশে ভারতের সংবিধান হাতে নিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন৷ একদিকে সংসদের বাইরে অন্যদিকে সংসদের ভিতরেও মোদি সরকারকে বিরোধীতার সম্মুখীন হতে হয়৷ নানান কেলেঙ্কারির স্লোগান তুলে সরগরম করলেন বিরোধীরা৷ কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান সাংসদ হিসেবে শপথ নিতে উঠলে তাঁর উদ্দেশে বিরোধীদের বেঞ্চ থেকে ‘নিট’, ‘নেট’ স্লোগান তোলা হয়৷
কংগ্রেসের সোনিয়া গান্ধি, মল্লিকার্জুন খাড়গে থেকে শুরু করে তৃণমূলের সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, সৌগত রায়, নবনির্বাচিত বাপি হালদার সকলেই নামলেন প্রতিবাদে৷ সঙ্গী অন্যান্য বিরোধী দলের সাংসদরাও৷ উল্লেখ্য স্পিকার নির্বাচন নিয়ে এদিন তুমূলে ওঠে উত্তেজনা৷ নতুন স্পিকার নির্বাচনের আগে পর্যন্ত ভর্তৃহরিকে দায়িত্ব দেওয়াকে কোনওমতেই মেনে নিতে রাজি নয় বিরোধীপক্ষ৷ বিরোধীরা ভর্তৃহরির এই দায়িত্বপ্রাপ্তি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন৷ বিক্ষোভকারী সাংসদের অভিযোগ, ‘নতুন সরকার একাধিক বিষয়ে ইতিমধ্যেই পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ করছে৷ আর তা রুখতে আমরা প্রথম দিন থেকে সক্রিয়, প্রতিবাদ শুরু করেছি, সংবিধানকে বাঁচানোর লড়াই করছি আমরা৷ এমনকী প্রোটেম স্পিকারকে সাহায্য করার জন্য বিরোধীদের প্যানেলও এদিন কাজ বয়কট করে৷ সেই প্যানেলে ছিলেন কংগ্রেসের কে সুরেশ, ডিএমকে-র টিআর বালু এবং তৃণমূলের সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়৷
ইন্ডিয়া জোটের সমস্ত শরিক সোমবার নতুন সংসদ ভবনের বাইরে জমায়েত হয়ে নিজেদের বিরোধিতার পথে হাঁটেন৷ সংবিধানের কপি হাতে নিয়ে গান্ধিমূর্তির পাদদেশ থেকে নতুন সংসদ ভবন পর্যন্ত মিছিলে হাঁটলেন বিরোধী সাংসদরা৷ সকলের ইসু্য ভিন্ন ভিন্ন হলেও সকলকে এদিন দলবদ্ধ হয়ে এনডিএর বিরোধীতা করতে দেখা যায়৷ যেমন সোনিয়া গান্ধি, মল্লিকার্জুন খাড়গেদের ইসু্য ছিল কংগ্রেসের আটবারের সাংসদ কে সুরেশকে বাদ দিয়ে ৭বারের ভর্তৃহরি মহতাবকে করা৷
অন্যদিকে, কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি রাহুল গান্ধির অভিযোগ, মোদি-শাহরা দেশের সংবিধানের উপর আঘাত হানতে চাইছেন, কিন্ত্ত  কোনও ক্ষমতা, কোনও শক্তিই সংবিধানকে ছুঁতে পারবেন না৷ আবার জোটের আরেক গুরুত্বপূর্ণ সঙ্গী তৃণমূল ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে গঙ্গাচুক্তির পুনর্নবীকরণ নিয়ে সুর চড়ায়৷ তাদের অভিযোগ, এই চুক্তি পুনর্নবীকরণ করতে মোদি সরকার বাংলার সরকারকে কিছু জানানোর প্রয়োজনই বোধ করেনি৷ লোকসভায় তৃণমূলের দলনেতা তথা প্রোটেম স্পিকারের সহযোগী সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়েরস্পষ্ট বক্তব্য, ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে জলচুক্তি হল বাংলার তৃণমূল সরকারকে অন্ধকারে রেখে৷ এটা একেবারে একপাক্ষিক ব্যাপার, গণতন্ত্রের পরিপন্থী৷ তাই প্রথম দিন থেকে আমরা গণতন্ত্র বাঁচানোর লক্ষ্যে নেমেছি৷”
এ বিষয়ে তৃণমূল এমপি কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, নরেন্দ্র মোদি সরকার সংবিধানকে লঙ্ঘন করেছে৷ আমরা সংবিধান রক্ষার দাবিতে বিক্ষোভ দেখাচ্ছি৷ যে পদ্ধতিতে লোকসভার প্রোটেম স্পিকার নিয়োগ করা হয়েছে, তাতে স্পষ্টত সংবিধানের বিধি এবং অতীতের পরম্পরাকে ভেঙে দিয়েছে বিজেপি৷
কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ এদিন মোদীর ভাষণের প্রতিক্রিয়ায় বলেন, বিরোধী ইন্ডিয়া জোট এবার প্রতি পদক্ষেপে প্রধানমন্ত্রীকে চাপে রাখবে৷ লোকসভা নির্বাচনে এই প্রধানমন্ত্রীর নৈতিক পরাজয় হয়েছে৷ প্রোটেম স্পিকার নিয়ে তৃণমূল সাংসদ ও বর্ষীয়ান নেতা সৌগত রায় বলেন, কংগ্রেসের কে সুরেশ ৮ বারের এমপি৷ তাঁকেই প্রোটেম স্পিকার করা উচিত ছিল৷ তাই আমরা ঠিক করেছি, এ ব্যাপারে সরকারের সঙ্গে অসহযোগিতা করব৷ লোকসভার প্রথম দিন প্রসঙ্গে কংগ্রেসের মুখ্য সচেতক কে সুরেশ বলেন, এদিন এবং কাল সকলে শপথ নেবেন৷ তাই এর মধ্যে আর কোনও কর্মসূচি নেই৷ তারপর আমরা জ্বলন্ত ইসু্যগুলিকে সভায় তুলে ধরব৷