দিল্লি, ২১ জুন– নিট কেলেঙ্কারির শিকড় খুঁজতে গিয়ে বেরিয়ে আসছে একের পর এক সংস্থার নাম৷ নিট-এর বিতর্কের পর উঠে এল ইউজিসি-নেট কেলেঙ্কারিও৷ প্রশ্নপত্র ফাঁস নিয়ে প্রকাশ্যে এল বিস্ফোরক তথ্য৷ জানা যাচ্ছে, সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম টেলিগ্রামে মাত্র ৫ হাজারে বিক্রি হচ্ছিল নিটের প্রশ্নপত্র৷ এই তথ্য প্রকাশ্যে আসার পরই পরীক্ষা বাতিল করে শিক্ষামন্ত্রক৷
জানা গিয়েছে, পরীক্ষার আগে দফায় দফায় টেলিগ্রামে প্রশ্নপত্রের স্কিনশট পোস্ট করা হচ্ছিল৷ পাশাপাশি একাধিক লিঙ্কও পোস্ট করা হয়৷ এই খবর শিক্ষামন্ত্রকের কাছে এলে সেই প্রশ্নপত্র আসলের সঙ্গে মিলিয়ে দেখা যায় তা পুরোপুরি একই৷ এর পরই তড়িঘড়ি পদক্ষেপ করে শিক্ষামন্ত্রক৷ বাতিল করা হয় পরীক্ষা৷ সংবাদ মাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই প্রশ্নপত্র কোথাও ৫ থেকে ১০ হাজার টাকার বিক্রি করছিল দুষ্কৃতীরা৷ প্রাথমিক তদন্তে জানা যাচ্ছে টেলিগ্রামই প্রশ্নফাঁসের এপিসেন্টার৷ তবে টেলিগ্রাম গ্রুপের অ্যাডমিনদের কাছে কোথা থেকে এল তা এখনও জানা যায়নি৷ তদন্ত শুরু হয়েছে৷
কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ডার্ক ওয়েব অভিযোগ মেনে নেওয়ার পরই এ নিয়ে মামলা দায়ের করল সিবিআই৷ অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিদের নামে এফআইআর দায়ের করে তদন্ত শুরু করছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা৷
বুধবার ইউজিসি-নেট বাতিল করার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রক৷ অস্বচ্ছতার কারণ দেখিয়ে এই পরীক্ষা বাতিল করা হয়৷ গত মঙ্গলবার ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি ইউজিসি-নেট পরীক্ষা নেয়৷ প্রায় ৯ লক্ষের উপর পরীক্ষার্থী তাতে অংশ নেন৷ একদিন পর বুধবারই কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রকের তরফে একটি বিবৃতি জারি করে পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়৷ ওই বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের ন্যাশনাল সাইবার ক্রাইম থ্রেট অ্যানালিসিস ইউনিটের তরফে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের কাছে গরমিলের অভিযোগ এসেছে৷ আর ওই অভিযোগের ভিত্তিতে প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, পরীক্ষায় বেনিয়ম হয়েছে৷
গতকাল কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান নিজেই স্বীকার করেন, এনটিএর পরীক্ষা নেওয়ার পদ্ধতিতে গলদ ছিল৷ প্রশ্ন ফাঁস হয়েছিল ডার্ক ওয়েবে৷ বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, ‘পরীক্ষার পরের দিন বিকেল ৩টে নাগাদ আমরা জানতে পারি, ডার্ক নেটে পরীক্ষার আগেই প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়ে গিয়েছে৷ মূল প্রশ্নপত্রের সঙ্গে তা মিলিয়ে দেখা যায় ফাঁস হওয়া প্রশ্নের সঙ্গে সেটা হুবহু মিলে গিয়েছে৷ এর পরই আমরা পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছি৷ টেলিগ্রামের মতো অ্যাপগুলির উপর নজরদারি চালানো কঠিন৷ প্রশ্নফাঁসে সেই ধরনের অ্যাপই ব্যবহৃত হয়েছে৷ স্বচ্ছতার সঙ্গে আমরা আপস করব না৷’