অভিষেক রায়, খড়গপুর, ২০ জুন : দেশের অগ্রণী কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খড়গপুর আইআইটিতে একের পর এক পড়ুয়ার রহস্যজনক মৃত্যুর প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার সকালে প্রতিষ্ঠানের মূল গেটের বাইরে বিক্ষোভ দেখালো খড়গপুর জাগরণ মঞ্চ নামে একটি অরাজনৈতিক সংগঠন । বিক্ষোভকারীরা খড়গপুর আইআইটির ডিরেক্টর বীরেন্দ্র কুমার তিওয়ারির পদত্যাগ এবং গ্রেফতারি দাবি করেন। এছাড়াও তারা আইআইটির নিরাপত্তা আধিকারিক প্রমোদকুমারের পদত্যাগও দাবি করেন। ঘন্টা দুয়েক বিক্ষোভ দেখানোর পর ভবিষ্যতেও লাগাতার আন্দোলনের হুমকি দিয়ে কর্মসূচি আজকের মত প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।
২০২২ সালের ১৪ অক্টোবর খড়গপুর আইআইটির মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্র আসামের তিনসুকিয়ার বাসিন্দা ফয়জান আহমেদের রহস্য মৃত্যু হয়। আইআইটির হোস্টেল থেকে তার দেহ উদ্ধার করা হয়। আইআইটি কর্তৃপক্ষ ফয়জানের মৃত্যুকে আত্মহত্যা বলে চালাতে চাইলেও তার পরিবার সে কথা মেনে না নিয়ে উচ্চ আদালতের শরণাপন্ন হন। উচ্চ আদালতের হস্তক্ষেপে ফয়জানের দেহে দ্বিতীয়বার ময়না তদন্ত হয় এবং জানা যায় তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। অতি সম্প্রতি এই রিপোর্ট সামনে আসার পর পরই খড়গপুর আইআইটির ছাত্রাবাস থেকে দেবিকা পিল্লাই নামে আরো এক পড়ুয়ার গলায় ফাঁস দেওয়া দেহ উদ্ধার হয় গত সোমবার।
নিরাপত্তা বিভাগের কর্মীদের নজর এড়িয়ে একজন ছাত্রী কিভাবে হোস্টেলের ছাদে উঠে গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলে পড়লেন সেটা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছে খড়গপুর জাগরণ মঞ্চ। মঞ্চের আহবায়ক শেখ আইয়ুব আলী বলেন, নিরাপত্তা ব্যবস্থায় বড়সড় গলদ রয়েছে। না হলে এই ছাত্রীকে বাঁচানো যেত । তাই আমরা আইআইটির ডিরেক্টর বীরেন্দ্র কুমার তিওয়ারির পদত্যাগ এবং গ্রেপ্তারী, সেই সঙ্গে নিরাপত্তা আধিকারিক প্রমোদকুমারের পদত্যাগ দাবি করছি। আমাদের দাবি মানা না হলে আন্দোলন লাগাতার চলবে এবং আরো তীব্র আকার ধারণ করবে। খড়্গপুরের শুভবুদ্ধিসম্পন্ন বহু মানুষ এবং কাউন্সিলাররাও আমাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন। আমরা চাই খড়গপুর আইআইটির মতো একটি প্রতিষ্ঠান যেখানে উজ্জ্বল ভবিষ্যতের লক্ষ্য নিয়ে ছাত্রছাত্রীরা পড়াশোনা করতে আসে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হোক । এলাকার কাউন্সিলর দেবাশীষ সেনগুপ্ত বলেন, আইআইটির নিরাপত্তায় গলদ রয়েছে। আইআইটির মতো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এই ধরনের পরিবেশ চিন্তাই করা যায় না। আইআইটি কর্তৃপক্ষের গাফিলতি রয়েছে। উপস্থিত ছিলেন জেলা আইএনটিটিইউসির সভাপতি গোপাল খাটুয়া।