• facebook
  • twitter
Saturday, 19 October, 2024

কসবার অ্যাক্রোপলিস মলে বিধ্বংসী আগুন

নিজস্ব প্রতিনিধি– পার্ক স্ট্রিটের পর এবার কসবা। ৪ দিনের মাথায় ফের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার সাক্ষী থাকল শহর কলকাতা। বিধ্বংসী আগুন লাগল রুবির কাছে কসবা এলাকার রাজডাঙার একটি শপিং মলে। আগুনের ধোঁয়ায় শ্বাসকষ্টে ভুগলেন বহু মানুষ। হুড়োহুড়িতে আহত হলেন অনেকে। শুক্রবার সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাটি ঘটে দক্ষিণ কলকাতার অ্যাক্রোপলিস মলে। অবশ্য কী কারণে আগুন লাগল, তা এখনও

নিজস্ব প্রতিনিধি– পার্ক স্ট্রিটের পর এবার কসবা। ৪ দিনের মাথায় ফের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার সাক্ষী থাকল শহর কলকাতা। বিধ্বংসী আগুন লাগল রুবির কাছে কসবা এলাকার রাজডাঙার একটি শপিং মলে। আগুনের ধোঁয়ায় শ্বাসকষ্টে ভুগলেন বহু মানুষ। হুড়োহুড়িতে আহত হলেন অনেকে।

শুক্রবার সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাটি ঘটে দক্ষিণ কলকাতার অ্যাক্রোপলিস মলে। অবশ্য কী কারণে আগুন লাগল, তা এখনও স্পষ্ট নয়। খবর পেয়ে দমকলের ১৫টি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। এছাড়াও ঘটনাস্থলে পৌঁছে বিপর্যয় মোকাবিলা দলের সদস্যরা এবং কসবা থানার পুলিশও।

এদিন মলের ভিতর থেকে গলগল করে কালো ধোঁয়া বের হতে দেখা যায়। মুহূর্তের মধ্যে গোটা এলাকা কালো ধোঁয়ায় ঢেকে যায়। মলের ৬ তলার ফুড কোর্টে প্রথমে আগুন লাগে বলে জানা গিয়েছে। ক্রমে আগুন ছড়িয়ে পড়ে মলের অন্যান্য ফ্লোরে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গে ফায়ার অ্যালার্ম বাজতে শুরু করে। মলের ফুড কোর্ট এলাকাতেই প্রথম আগুন দেখতে পান তাঁরা। দমবন্ধকর পরিস্থিতি তৈরি হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও জানান, শপিং মলের তিনটি তলা জুড়ে কালো ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে উপস্থিত অনেকেরই শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। অবশ্য পরিস্থিতি অবনতি হওয়ার আগেই দ্রুত সবাইকে শপিং মলের ওই অংশ থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়। 

জানা গিয়েছে, ঘটনার সময় প্রচুর মানুষ মলের ভিতরে ছিলেন। তাঁদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। আতঙ্কে ছোটাছুটি শুরু করে দেন ক্রেতারা। সিঁড়ি দিয়ে নীচে নামতে শুরু করেন কর্মী থেকে ক্রেতা প্রত্যেকে। ফলে, সিঁড়ির মধ্যেই হুড়োহুড়ি শুরু হয়ে যায়। ধোঁয়ার কারণে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। অনেককেই পাঁজাকোলা করে সিঁড়ি দিয়ে নামানো হয়। দমকলকর্মীদের অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে মলের ভিতরে ঢুকতে দেখা যায়। আরও জানা গিয়েছে, মলের কর্মীরা পাশের গীতাঞ্জলি স্টেডিয়ামে আশ্রয় নেন।

উল্লেখ্য, এই মলের প্রত্যেকটি তলায় নামিদামি ব্রান্ডের শোরুম রয়েছে। পাশাপাশি এই বিল্ডিংয়ে একাধিক অফিসও রয়েছে। দমকলকর্মীরা জানিয়েছেন, ধোঁয়ার কারণে, আগুন নেভানোর কাজ ব্যাহত হয়। এর পর তাঁরা মলের কাঁচ ভেঙে ধোঁয়া বের করার চেষ্টা চালান। ওদিকে আগুন লাগার পর দ্রুত মলের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়।

এর পর ঘটনাস্থলে পৌঁছন দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু। তিনি বলেন, ‘দু’টো ল্যাডার পাঠিয়েছি। যাতে আগে ধোঁয়াটা বের করা যায়। এই ঘটনার ফরেন্সিক হবে। রিপোর্টে কিছু ত্রুটি পেলে, আইনত ব্যবস্থা নেব। যদি কর্তৃপক্ষের গাফিলতি থাকে, অ্যাকশন নেওয়া হবে।’  তিনি আরও জানান, আতঙ্কের কোনও কারণ আছে কি না, তা এখনও তাঁর কাছে স্পষ্ট নয়। তবে খবর পেয়েছেন তিনি।

অন্যদিকে, দমকলের তরফেও জানানো হয়েছে যে, আগুন এখন নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে। আগুনের উত্‍স খুঁজে পাওয়া গিয়েছে। দমকল কর্মীরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছেন। আগুনের উৎস সম্পর্কে তদন্ত চলছে।

ওদিকে অগ্নিকাণ্ডের সময় সিঁড়ি দিয়ে নামতে গিয়ে বিপাকে পড়েন কয়েক হাজার মানুষ। তাঁদের অভিযোগ, ১২ ফুটের সিঁড়ি আবর্জনায় ভরা ছিল। সিঁড়ি জুড়ে সিমেন্টের বস্তা স্তূপ করে রাখা।  সেকারণে কুণ্ডলি পাকানো ধোঁয়ার মধ্যে নামতে গিয়ে চোট পান অনেকে। এদিন ২২ তলা থেকে সংকীর্ণ সিঁড়ি দিয়ে নামতে গিয়ে হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। জানা গিয়েছে, মলের ১৪ তলায় এক গর্ভবতী মহিলা অসুস্থ হয়ে পড়েন। এমনকী, দুই প্রতিবন্ধীও আটকে পড়েন। ওদিকে হাইড্রোলিক ল্যাডার নিয়ে কাজ শুরু করেন দমকল কর্মীরা। মলের সামনের রাস্তার যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। এই ঘটনার জেরে রাজডাঙা মেন রোডে ব্যাপক যানজট তৈরি হয়।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবারই পার্কস্ট্রিটের অ্যালেন পার্কে একটি রেস্তরাঁয় বিধ্বংসী আগুন লাগে। রেস্তরাঁর ভিতর নানা দাহ্য পদার্থ থাকায়, দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ে। তার ঠিক চারদিনের মাথায় ফের কলকাতার বুকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটল।