দিল্লি, ১২ জুন – লোকসভা নির্বাচনে ধাক্কা খেতেই ‘অগ্নিপথ’ প্রকল্প নিয়ে নতুন ভাবনা-চিন্তা শুরু করল কেন্দ্র। সূত্রের খবর, ‘অগ্নিপথ’ প্রকল্পে বেশ কিছু বদল আনার কথা ভাবা হচ্ছে। অগ্নিবীর প্রকল্পের পর্যালোচনা করে এর উন্নতির জন্য বেশ কিছু সুপারিশ করেছে ভারতীয় সেনাবাহিনী। অগ্নিবীররা যেসব সুযোগ সুবিধে পান, তা আরও কিছু বাড়ানো যায় কিনা তা নিয়ে ভাবনা শুরু করেছে তৃতীয় মোদি সরকার।
সূত্রের দাবি, অগ্নিপথ নিয়ে বেশ কয়েকটি প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। এর মধ্যে সবার প্রথম হল, অগ্নিপথের মাধ্যমে নিযুক্ত জওয়ানদের স্থায়ীকরণের পরিমাণ বাড়ানো। আগে অগ্নিবীরদের মধ্যে ২৫ শতাংশকে ১৫ বছরের জন্য চাকরিতে বহাল রাখার নিয়ম ছিল। এবার সেটা বেড়ে হতে পারে ৪০-৫০ শতাংশ। এছাড়া , ভারতীয় সেনাবাহিনী চাকরির মেয়াদ ৪ বছর থেকে বাড়িয়ে ৭ থেকে ৮ বছর করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
২০২২ সালে ‘অগ্নিপথ’ প্রকল্প চালু করে মোদি সরকার। এই প্রকল্পে প্রতিবছর ৪৫ থেকে ৫০ হাজার সেনা জওয়ান নিয়োগ করা হয়। নিযুক্তদের অবসর চার বছর পর। এদের মধ্যে ২৫ শতাংশকে আরও ১৫ বছরের জন্য নিয়োগ করা হবে। প্রকল্প ঘোষণার পরই দেশ জুড়ে শুরু হয়ে যায় তুমুল আন্দোলন। হিংসাত্মক আন্দোলনের জেরে গ্রেপ্তার করা হয় বেশ কয়েকজন কর্মপ্রার্থীকে।
শুধু তাই নয়, জওয়ানদের অন্যান্য সুবিধাও বাড়তে পারে। ইন সার্ভিস অবস্থায় জওয়ানের আহত বা নিহত হলে সাধারণ সেনা জওয়ানদের মতো সুবিধা দেওয়ার কথাও ভাবা হতে পারে। যদিও এই সবগুলিই প্রস্তাব আকারে রয়েছে। এই নিয়ে মন্ত্রকে বিস্তারিত আলোচনার পরই এগুলো কার্যকর করা হতে পারে।এছাড়াও প্রযুক্তিগত ক্ষেত্রে অগ্নিবীরদের প্রবেশের বয়সসীমা বাড়িয়ে ২৩ বছর করার সুপারিশ করা হয়েছে।
সরকার টিকিয়ে রাখতে বিজেপি এখন জোট সঙ্গীদের উপর বেশি নির্ভরশীল।সুযোগ বুঝে জোটসঙ্গীরাও বিজেপির সঙ্গে দর কষাকষিতে মজেছে। সেই ক্ষমতা কাজে লাগাতে শুরু করেছে নীতিশ কুমারের জেডিইউ। ‘অগ্নিপথ’ স্কিমে জওয়ানদের নিয়োগের বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করার দাবি জানান। সরকারকে এটি পর্যালোচনা করার আহ্বান জানানো হয়।
২০২৪ লোকসভা নির্বাচনে এই ‘অগ্নিপথ’ প্রকল্পকে সরকারের বিরুদ্ধে হাতিয়ার করে কংগ্রেস। যার প্রভাব পড়ে একাধিক রাজ্যে। রাজস্থান, হরিয়ানা, পাঞ্জাবের মতো রাজ্যে ধাক্কা খায় গেরুয়া শিবির। উত্তরপ্রদেশ, বিহারে বিজেপির ধাক্কার নেপথ্যেও অন্যতম কারণ ছিল এই ‘অগ্নিবীর’ প্রকল্প। আন্দাজ করতে পেরেই কেন্দ্রের তরফে অগ্নিপথ নিয়ে মানুষের অসন্তোষের কারণ নিয়ে তথ্য তালাশ শুরু করেছে প্রতিরক্ষামন্ত্রক।