দিল্লি, ১১ জুন – দ্বিতীয়বার বিদেশমন্ত্রীর দায়িত্বভার গ্রহণের সাথে সাথেই সন্ত্রাসবাদ, চিন ও পাকিস্তান সীমান্ত ইস্যুতে জোর দিলেন এস জয়শঙ্কর।মঙ্গলবার বিদেশমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন তিনি।একইসঙ্গে পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের নীতিগত অবস্থান স্পষ্ট করে দেন। পাকিস্তান যতক্ষণ ভারতের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ চালিয়ে যাবে কিংবা মদত দিয়ে যাবে, ততক্ষণ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নতির ক্ষেত্রেও বাধা হয়ে দাঁড়াবে বলে প্রথমদিনই সাফ জানান বিদেশমন্ত্রী। অন্যদিকে চিন সম্পর্কে তিনি বলেন, চিনের সঙ্গে সীমান্ত সমস্যা মেটানোয় সরকারের বিশেষ নজর থাকবে।
আবার একবার বিদেশমন্ত্রকের দায়িত্ব পেয়ে জয়শংকর জানিয়েছেন, ‘বিদেশ মন্ত্রকের দায়িত্ব আবারও পাওয়া বিশাল সম্মানের। গত মেয়াদে, এই মন্ত্রকটি ব্যতিক্রমিভাবে ভাল কাজ করেছে। আমরা জি – ২০ প্রেসিডেন্সি করেছি। আমরা ভ্যাকসিন সরবরাহ সহ কোভিডের চ্যালেঞ্জগুলি গ্রহণ করেছি।’
সীমান্ত বরাবর চিনের আগ্রাসনমূলক কৌশলের ফলে উদ্ভূত নানা পরিস্থিতির মোকাবিলা করা, পশ্চিম এশিয়ার বর্তমান পরিস্থিতি, ইউক্রেনের সংঘাতের পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের স্বার্থরক্ষা করা-সহ একাধিক বিষয়কে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন এস জয়শংকর।
আগামী পাঁচ বছরের জন্য পাকিস্তান ও চিনের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের বিষয়ে জয়শংকর সাফ জানিয়েছেন, ‘সীমান্ত সমস্যার সমাধান এবং পাকিস্তানের সাথে আমরা একটি সমাধান খুঁজে বের করতে চাই। এছাড়াও পুরনো আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাসবাদের সমস্যার সমাধান খুঁজতে হবে।’
২০১৯ সালে প্রথম বিদেশমন্ত্রীর দায়িত্ব নেন জয়শঙ্কর। তারপর থেকে এই পর্যন্ত চিন নিয়ে বহুবার বিরোধী দলগুলির সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারকে। বিশেষত অশান্ত ভারত-চিন সীমান্ত এলাকা, লালফৌজের আগ্রাসন, পাকিস্তানকে অর্থনৈতিক ও পরিকাঠামোগত সাহায্য করা, তিব্বত এলাকার একাংশে সামরিক ঘাঁটিতে সেনা মোতায়েন করে রাখা নিয়ে বারবার বিরোধীদের প্রশ্ন এড়িয়েছে সরকার।
এছাড়া সমুদ্রপথেও চিনা আগ্রাসনের কোনও উপযুক্ত জবাব বা নিন্দা কোনওটাই শোনা যায়নি নয়াদিল্লির মুখে। শুধুমাত্র রাষ্ট্রসঙ্ঘে কিংবা বিদেশ সফরে গিয়ে এস জয়শঙ্কর চিনা আগ্রাসনের ফলে ভারতীয় ভূখণ্ডের কোনও ক্ষতি হয়নি বলে দাবি করে গিয়েছেন। এতদিন সংসদে বিরোধীরা দুর্বল ছিল বলে তেমন চাপের মুখে পড়তে হয়নি সরকারপক্ষকে। এবার শুধু বিরোধী জোট শক্তিশালী হয়েছে তাই নয়, এনডিএকেও শরিকদের মন জুগিয়ে চলতে হবে। ফলে পাকিস্তান এবং চিনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক সরকার পরিচালনার ক্ষেত্রে বাধা হতে পারে তৃতীয় মোদি সরকারের ।
এদিন বিদেশমন্ত্রী আরও বলেন, বিশ্ববন্ধু হিসেবে ভারত নিজেকে আন্তর্জাতিক মঞ্চে হাজির করতে পেরেছে। গোটা বিশ্বে এখন সঙ্কটের পরিস্থিতি, আন্তর্জাতিক মহল দুভাগে বিভক্ত, চতুর্দিকে সংঘর্ষ ও উত্তেজনা বজায় রয়েছে। তার মধ্যেও ভারত সকলের সঙ্গে সুষম ভারসাম্য বজায় রেখে চলেছে বলে । তিনি বলেন, ‘ভারতের যে পরিচিতি তা আরও বাড়বে। বিদেশনীতি আরও সফল হবে। ‘