• facebook
  • twitter
Monday, 25 November, 2024

তৃতীয়বার প্রধানমন্ত্রী পদে শপথ নিয়ে দেশে নেহেরুর পরে নজির গড়লেন নরেন্দ্র মোদি

দিল্লি, ৯ জুন:  রবিবার নির্ধারিত সময়েই তৃতীয়বার প্রধানমন্ত্রী পদে শপথ নিলেন নরেন্দ্র দামোদর দাস মোদি। আজ তিনি যথাসময়ে রাষ্ট্রপতি ভবনে আসার পর আসেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুও। প্রথমে জাতীয় সংগীতের পর শুরু হয় শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান। মোদির নাম ঘোষণা হতেই যথা সময়ে চলে আসেন শপথগ্রহণের জন্য নির্ধারিত স্থানে। এরপর নির্ধারিত ৭টা ১৫ মিনিটে রাষ্ট্রপতির পৌরোহিত্যে শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান

দিল্লি, ৯ জুন:  রবিবার নির্ধারিত সময়েই তৃতীয়বার প্রধানমন্ত্রী পদে শপথ নিলেন নরেন্দ্র দামোদর দাস মোদি। আজ তিনি যথাসময়ে রাষ্ট্রপতি ভবনে আসার পর আসেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুও। প্রথমে জাতীয় সংগীতের পর শুরু হয় শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান। মোদির নাম ঘোষণা হতেই যথা সময়ে চলে আসেন শপথগ্রহণের জন্য নির্ধারিত স্থানে। এরপর নির্ধারিত ৭টা ১৫ মিনিটে রাষ্ট্রপতির পৌরোহিত্যে শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান শুরু হয়। রাষ্ট্রপতি ভবনের এই মহতী শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের ঐতিহাসিক সাক্ষী ছিলেন দেশ ও বিদেশের তাবড় রাষ্ট্রনেতারা। ছিলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থেকে শুরু করে মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুইজ্জু। ছিলেন শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংঘে, ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং টোবগে। এছাড়া এসেছেন মরিশাসের প্রধানমন্ত্রী প্রভিন্দ কুমার জগনাউথ, নেপালের প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দাহল ‘প্রচন্ড’ সহ অন্যান্য রাষ্ট্রনেতারা। ছিলেন বিশিষ্ট শিল্পপতি অনিল আম্বানি থেকে শুরু করে বলিউড কিং শাহরুখ খান। আমন্ত্রিত ছিলেন সাধারণ স্তরের মানুষও। শ্রমিক, আইনজীবী, চিকিৎসক, শিল্পী, সাংস্কৃতিক শিল্পীরাও এই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত ছিলেন।

দেশের বিশিষ্ট রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরাও হাজির হন এই অনুষ্ঠানে। বিজেপির বিভিন্ন রাজ্যের রাজ্য সভাপতি, বিরোধী দলনেতা ও বিজেপি শাসিত বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরাও এই শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে এদিন সাক্ষী ছিলেন। এনডিএ জোট শরিকের অন্যতম দুই প্রধান জেডিইউ ও টিডিপি-র শীর্ষ দুই নেতা নীতীশকুমার এবং চন্দ্রবাবু নাইডু ছিলেন অনুষ্ঠানের প্রথম ভাগে। অনেক সংশয়ের পরেও কংগ্রেসের সর্ব ভারতীয় সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে মোদির শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে হাজির থেকে সৌজন্য রক্ষা করেন। জল্পনা ছিল যে, এবারের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানটি কার্তব্য পথে অনুষ্ঠিত হবে। তবে আবহাওয়ার অনিশ্চয়তার কারণে এটি রাষ্ট্রপতি ভবনে আয়োজন করা হয়।

মোদির শপথের পরেই শপথ নেন বর্ষীয়ান বিজেপি নেতা ও প্রাক্তন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং। এরপর একে একে প্রাক্তন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ ওরফে অমিত অনিল চন্দ্র শাহ, নীতিন গাদকারী, নির্মলা সীতারামন, শিবরাজ সিং চৌহান, পীযূষ গোয়েল, মনোহর লাল খট্টরের শপথগ্রহণ ছিল প্রথম সারিতে। সেই শপথ গ্রহণের ক্রম পর্যায় দেখে মনে হয়েছে, বিজেপির এইসব শীর্ষ নেতা, প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা আগের মতোই তৃতীয় মোদি সরকারে গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রক পেতে চলেছেন।

তবে এই শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান নিয়ে বিশেষ আলোচ্য বিষয় হল মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান ও হরিয়ানার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মনোহর লাল খট্টরের শপথগ্রহণ। রাজনৈতিক মহলের ধারণা হচ্ছে, বিজেপির এই দুই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তৃতীয় মোদী সরকারে নতুন দুইজন গুরুত্বপূর্ণ মুখ্যমন্ত্রী হতে চলেছেন। এরপর জেডিইউ, জেডিএস, টিডিপি-র সাংসদরা একে একে শপথগ্রহণ করেন। জোট সরকার টিকিয়ে রাখতে দাবি মতো তাঁরাও পেতে পারেন শাঁসালো কোনও কোনও মন্ত্রক। তবে কে কোন দফতর পাবেন সেবিষয়টি শেষ পাওয়া খবর অবধি পরিষ্কার হয়নি। সূত্রের খবর, কেন্দ্রের নতুন সরকারের ভাবী মন্ত্রীদের এই শপথগ্রহণের পর রাষ্ট্রপতি বিশিষ্ট আমন্ত্রিতদের নিয়ে একটি ভোজের আয়োজন করেছেন। সেই ভোজ অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পর কে কোন মন্ত্রক পেতে চলেছেন, তাঁর একটি পরিষ্কার ইঙ্গিত পাওয়া যেতে পারে।

প্রসঙ্গত ১৮তম লোকসভা ভোটে প্রত্যাশিত সাফল্য পাননি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ‘ইস বার ৪০০ পার’ স্লোগান তুলে মোদি লোকসভা ভোটের প্রচারের টেম্পো বাড়িয়ে দিলেও মাত্র ২৮৯ আসনে থামতে হয় এনডিএ-কে। বিজেপি-র ঝুলিতে পড়ে মাত্র ২৪০টি আসন। মোদির দল একক বৃহত্তম দল হলেও একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা থেকে ৩২ আসন কম। ফলে তৃতীয়বার সরকার গড়ে নেহেরুর পর মোদি রেকর্ড গড়লেও জোট শরিকদের ওপর নির্ভর করে সরকার গড়তে হচ্ছে মোদিকে। নেহেরুর সঙ্গে মোদির তফাৎ এখানেই। নেহেরুর কংগ্রেস ছিল একক সংখ্যাগরিষ্ঠ।