• facebook
  • twitter
Monday, 25 November, 2024

হিন্দুত্বের ঢাক পিটিয়ে গোটা এনডিএতে থেকে বাদ সংখ্যালঘু সাংসদরা

দিল্লি, ৭ জুন– বিজেপি রয়েছে বিজেপিতেই৷ গেরুয়া শিবিরের উগ্র হিন্দুত্ব বোধ ফের প্রমাণ হল এনডিএর সাংসদদের সংখ্যার মধ্যেই৷ দেখা গেল গোটা এনডিএ তে একজনও সংখ্যালঘু সাংসদ নেই৷ বা বলা যায় সংখ্যালঘুদের ধুয়ে মুছে সাফ করে দেওয়া হয়েছে৷ তবে এটা তো হবারই ছিল৷ কারণ কট্টর হিন্দুত্বকে হাতিয়ার করেই লোকসভা নির্বাচনে ঝাঁপিয়েছিল বিজেপি৷ ফলে সেখানে যে মুসলিম

দিল্লি, ৭ জুন– বিজেপি রয়েছে বিজেপিতেই৷ গেরুয়া শিবিরের উগ্র হিন্দুত্ব বোধ ফের প্রমাণ হল এনডিএর সাংসদদের সংখ্যার মধ্যেই৷ দেখা গেল গোটা এনডিএ তে একজনও সংখ্যালঘু সাংসদ নেই৷ বা বলা যায় সংখ্যালঘুদের ধুয়ে মুছে সাফ করে দেওয়া হয়েছে৷
তবে এটা তো হবারই ছিল৷ কারণ কট্টর হিন্দুত্বকে হাতিয়ার করেই লোকসভা নির্বাচনে ঝাঁপিয়েছিল বিজেপি৷ ফলে সেখানে যে মুসলিম সাংসদ থাকবে না তা জানাই ছিল৷ তবে তথ্য পরিসংখ্যান বলছে বিজেপি তো বটেই আস্ত এনডিএতে একজনও নেই মুসলিম সাংসদ৷ বলায় একটু ভুল হয়ে গেল৷ শুধু মুসলিম কেন, শিখ, বৌদ্ধের পাশাপাশি সংসদে এনডিএ’র তরফ থেকে থাকছে না একজন খ্রিষ্টান সাংসদও৷
লোকসভা নির্বাচন শেষ হওয়ার পর সম্প্রতি প্রকাশ্যে এসেছে একটি পরিসংখ্যান৷ যেখানে দেখা যাচ্ছে, বিজেপি তো বটেই পুরো এনডিএ এবার ব্রাহ্মণ তাস খেলেছে৷ এনডিএ’র তরফ থেকে এবার ১৪.৯ শতাংশ ব্রাহ্মণকে এবার টিকিট দেওয়া হয়েছিল৷ তার মধ্যে জয়ী হয়েছেন ১৪.৭ শতাংশ৷ পাশাপাশি রাজপুত ও অন্যান্যদের মিলিয়ে এনডিএতে এবার ৩৩.২ শতাংশ সাংসদ উচ্চ সম্প্রদায়ভুক্ত৷ এছাড়া ওবিসি ও ইন্টারমিডিয়েট কাস্টের (মারাঠা, জাঠ, লিঙ্গায়েত, পাতিদার, রেড্ডি, ভোক্কালিঙ্গা) থেকে সাংসদ হয়েছেন ৪১.৯ শতাংশ৷ ১৩.৩ শতাংশ তপশিলি সম্প্রদায়ের এবং ১০.৮ শতাংশ তপশিলি উপজাতি সম্প্রদায়ের৷
অন্যদিকে ইন্ডিয়া জোটের ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, এবার ইন্ডিয়াতে উচ্চ সম্প্রদায় থেকে সাংসদ হয়েছেন মাত্র ১২.৪ শতাংশ৷ ইন্টারমিডিয়েট কাস্ট (মারাঠা, জাঠ, লিঙ্গায়েত, পাতিদার, রেড্ডি, ভোক্কালিঙ্গা) ও ওবিসি (যাদব, কুরমি) থেকে সাংসদ হয়েছেন ৪২.৬ শতাংশ৷ তপশিলি জাতি থেকে সাংসদ হয়েছেন ১৭.৮ শতাংশ, তপশিলি উপজাতি থেকে ৯.৯ শতাংশ, মুসলিম ৭.৯ শতাংশ, খ্রিষ্টান ৩.৫ শতাংশ, শিখ ৫ শতাংশ ও অন্যান্য ১ শতাংশ৷
তবে ব্রাহ্মণ তাস খেলতে গিয়ে অদ্ভুতভাবে মুসলিম, খ্রিষ্টান, শিখ, বৌদ্ধ সম্প্রদায়কেও বাদ দিয়েছে বিজেপি৷ রিপোর্ট বলছে, এনডিএ’র শরিক দলগুলি থেকে এবার মাত্র ০.৯ শতাংশ মুসলিম, ০.২ শতাংশ খ্রিষ্টানকে প্রার্থী করা হয়েছিল তবে আশ্চর্যভাবে কেউই জয়ী হতে পারেননি৷ এই তালিকায় ০.২ ও ০.৪ শতাংশ শিখ ও বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মানুষকে প্রার্থী করা হয়৷ তারাও এবার জয়ী হয়নি৷
এনডিএ’র প্রার্থী তালিকার এই হাল ফুটে এসেছে তামিলনাড়ুর কংগ্রেস সাংসদ মানিকাম ঠাকুরে এক্স হ্যান্ডেলে প্রকাশিত এক তথ্য পরিসংখ্যান থেকে৷ সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘লোকসভায় নবনির্বাচিত এনডিএ সাংসদের মধ্যে একজনও মুসলিম, খ্রিস্টান, শিখ বা বৌদ্ধ সাংসদ নেই৷ প্রকৃত গণতন্ত্রকে চালিয়ে নিয়ে যেতে ধর্মীয় বৈচিত্রের প্রতিনিধিত্ব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ৷ কিন্ত্ত ‘আঙ্কেলজি’ তা হতে দেবেন না৷ এই মনোভাব দেশের গণতন্ত্রে কতটা খারাপ প্রভাব ফেলতে পারবে কল্পনা করবেন৷’
সংখ্যালঘুহীন মোদির সরকারের এই ছবিটা প্রকাশ্যে সামনে আসতেই শুরু হয়েছে জোর জল্পনা৷ রাজনৈতিক মহলের দাবি, এনডিএ’র অন্যান্য শরিকদলগুলি কিন্তু সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে অগ্রাধিকার দিয়ে তাদের প্রার্থী তালিকায় রেখেছে৷ বাদ দিয়েছে শুধু বিজেপি৷ কিন্ত্ত এনডিএ’র হর্তা-কর্তা বিজেপির উগ্র হিন্দুত্বের বিশ্বাসে সংখ্যালঘু প্রার্থীদের হারের তালিকা আগুনে ঘি ঢালার কাজ করেছে৷ যার ফল, এবার একটিও সংখ্যালঘু সাংসদকে জেতাতে পারেনি কোনও শরিকদল৷