• facebook
  • twitter
Friday, 22 November, 2024

অনুব্রতের সঙ্গে দেখা করার ইচ্ছা প্রকাশ শতাব্দীর

মমতা-অভিষেকের যুগলবন্দিতে বাজিমাত খায়রুল আনাম: তিনি রাজনীতির জগতের মানুষ ছিলেন না৷ রাজ্যে বাম শাসনকালে বিরোধী দলের তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লড়াকু মনোভাব দেখে তাঁর প্রতি আকৃষ্ট হয়ে বাম শাসন কালে গ্ল্যামার জগৎ ছেড়ে কলকাতা থেকে দূরে ২০০৯ সালে বীরভূম লোকসভা কেন্দ্র এসে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী হয়েছিলেন সেই সময়ের ডাকসাইটে তারকা শতাব্দী রায়৷ প্রথমবার প্রার্থী হয়েই

মমতা-অভিষেকের যুগলবন্দিতে বাজিমাত

খায়রুল আনাম: তিনি রাজনীতির জগতের মানুষ ছিলেন না৷ রাজ্যে বাম শাসনকালে বিরোধী দলের তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লড়াকু মনোভাব দেখে তাঁর প্রতি আকৃষ্ট হয়ে বাম শাসন কালে গ্ল্যামার জগৎ ছেড়ে কলকাতা থেকে দূরে ২০০৯ সালে বীরভূম লোকসভা কেন্দ্র এসে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী হয়েছিলেন সেই সময়ের ডাকসাইটে তারকা শতাব্দী রায়৷ প্রথমবার প্রার্থী হয়েই তিনি বাজিমাত করে জয়লাভ করে সংসদে যাওয়ার ছাড়পত্র পান৷ তারপর আর তাঁকে পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি৷ এবারও তিনি বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জয়লাভ করে চতুর্থবারের জন্য সংসদে যাওয়ার পথ প্রশস্ত করে নিয়েছেন৷ মঙ্গলবার ৪ জুন সিউড়িতে ভোট গণনা শেষে দেখা যায়, শতাব্দী রায় পেয়েছেন ৭ লক্ষ ১৭ হাজার ৯৬১টি ভোট, বিজেপির দেবতনু ভট্টাচার্য পেয়েছেন ৫ লক্ষ ২০ হাজার ৩১১টি ভোট আর কংগ্রেসের মিল্টন রশিদ পেয়েছেন ২ লক্ষ ২৬ হাজার ২৬০টি ভোট৷ অর্থাৎ, শতাব্দী রায় জয়ী হন ১ লক্ষ ৯৭ হাজার ৬৫০ ভোটের ব্যবধানে৷ শতাব্দী রায় জয়ের পরে উদ্বাহু হয়ে এই জয়কে উৎসর্গ করেন বীরভূমের মানুষকে৷ আর এবারই প্রথম শতাব্দী রায় এবং বীরভূমের তৃণমূল কংগ্রেসকে লোকসভা ভোটে লড়াই করতে হলো অনুব্রত মণ্ডলহীন অবস্থায়৷ গোরু পাচার মামলায় সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হয়ে অনুব্রত মণ্ডল এখন রয়েছেন দিল্লির তিহাড় জেলে৷ সেখানেই রয়েছেন তাঁর মাতৃহীন একমাত্র কন্যা সুকন্যা মণ্ডল এবং প্রাক্তন সরকারি দেহরক্ষী সেহগাল হোসেন৷ এবারের লোকসভা ভোটের প্রচারে জেলায় এসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বার বার বলেছেন, অনুব্রত মণ্ডল ওরফে কেষ্ট মণ্ডলকে সিবিআই ‘মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে’ তিহাড় জেলে আটকে রেখেছে৷ এবং তাঁরা আশাও প্রকাশ করে বলেন যে, লোকসভা ভোটের পরে কেষ্ট জেল থেকে ছাড়া পেয়ে বাইরে এলে, আপনারা তাঁকে বীরের সম্মান দিয়ে বরণ করবেন৷

রাজনৈতিক দিক থেকে অনেকেই বলে থাকেন যে, একটা সময় শতাব্দী রায়ের সঙ্গে জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের একটা দূরত্ব তৈরী হলেও, দলীয় প্রার্থী হিসেবে শতাব্দী রায়কে জেতাতে অনুব্রত মণ্ডল কোনও দ্বিধা রাখেননি৷ তাই শতাব্দী রায় চতুর্থবারের জন্য সাংসদ হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পরে, তাঁর দিকে বার বার প্রশ্ন ছুঁড়ে দেওয়া হয়েছে, তাঁর এই জয়ের পিছনে তিনি অনুব্রত মণ্ডলের ভূমিকাকে কী ভাবে দেখছেন ? এক অর্থে তিনি এবিষয়ে স্পষ্টতই কোনও মন্তব্য না করে এই জয়কে তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীদের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফল বলে উল্লেখ করেছেন৷ তবে, বুধবার ৫ জুন শতাব্দী রায়কে পাওয়া গেল সম্পূর্ণ ভিন্নরূপে৷ এদিন সকালেই স্নান সেরে লাল শাড়িতে মাথা ঢেকে স্বামী এবং কন্যাকে নিয়ে শতাব্দী রায় হাজির হন তারাপীঠ মন্দিরে৷ সেখানে তিনি মা তারাকে পুজো দিয়ে বেরিয়ে এসে একাধিক প্রশ্নের উত্তরে জানান, এই ভোটে নরেন্দ্র মোদির গ্যারান্টি বা ম্যাজিক কোনটাই কাজ করেনি৷ দিদি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গ্যারান্টিতেই ভরসা রেখেছেন মানুষ৷ তাঁর এই জয়ের পিছনে তারা মায়ের আশীর্বাদ আছে৷ আর তাই পনেরো বছর বীরভূমে কাটিয়ে এবার কুড়ি বছর কাটাতে চলেছি৷ সেইসাথে তিনি জানিয়ে দেন যে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আর অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের যুগলবন্দিতে বাংলায় বাজিমাৎ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস৷ তাঁর এই জয়ের পিছনে অনুব্রত মণ্ডলের অবদান কতটুকু? এই প্রশ্নের উত্তরে শতাব্দী রায় বলেন, তাঁর সাজানো সংগঠনেই খেলে বাজিমাৎ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস৷ সেইসাথে তিনি জানিয়ে দেন যে, এবার দিল্লি গিয়ে এক সময়ের সতীর্থ কেষ্টদার সঙ্গে দেখা করতে তিহাড়ে যাবো৷