তৃণমূলের উচ্ছ্বাস জেলা জুডে়
নিজস্ব সংবাদদাতা, বর্ধমান, ৫ জুন — তখনও গননা শুরু হয়নি৷ বর্ধমানের দুই গননা কেন্দ্রে নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা বলয়ের মাঝে এক এক করে ঢুকছেন গননা কর্মীরা৷ আর সেই সময়ই দুটি ছোট ঘটনা যেন ফলাফলের অনেকটাই মিল এনে দেয়৷ একটি ঘটনা বর্ধমানের ইউআইটি বিল্ডিং এর গননা কেন্দ্রের সামনে৷ যেখানে গননা হচ্ছে বর্ধমান দুর্গাপুর লোকসভা আসনের৷ দিলীপ ঘোষকে দেখে একদল তৃণমূল সর্মথক বলেন, এবার তো যেতে হবে৷ চাবিকাঠি দক্ষিণের বিধায়কের কাছে জমা দেবেন৷ আর একটা ঘটনা বর্ধমানের এমবিসি কলেজের গননা কেন্দ্রে৷ সেখানে গননা হবার কথা বর্ধমান পূর্ব আসনের৷ এখানে দাঁডি়য়ে একদল তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী সমর্থক চিৎকার করে মমতার নামে জয়ধ্বনি দিয়ে৷ বলেন মমতাদি যা বলেছেন তাই হবে৷ বিজেপি সাফ হবে৷ আর সেটাই হলো৷ বেলা বারোটার পর সেই চিত্র টা পাল্টে গিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস এর কর্মী সমর্থকদের যখন দেখা যায় সবুজ আবীর খেলায় মেতে উঠতে৷
লোকসভা ভোটে এবার পূর্ব বর্ধমান জেলার দুটি আসনেই শুরু থেকেই এগিয়ে ছিল তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থীরা৷ এমনকি পোষ্টাল ব্যালটের গণনা শেষ হতেই জয়ের দিকে এগিয়ে যায় দুই প্রার্থী৷ প্রথম দফার ফলাফলে বর্ধমান দুর্গাপুর লোকসভা আসনের তৃণমূল প্রার্থী কীর্তি আজাদ বিজেপির দিলীপ ঘোষ এর থেকে প্রায় ৩ হাজারের বেশি ভোটে এগিয়ে যান৷ আর দ্বিতীয় রাউন্ডে সেই ব্যাবধান বাডে় ২৩,২২৩ ভোটে৷ অন্যদিকে বর্ধমান পূর্ব আসনে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী ডাঃ শর্মিলা সরকার দুটি রাউন্ডে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপি প্রার্থী অসীম সরকার এর চেয়ে ৩৬ হাজার ৮৯৭ ভোটের ব্যাবধানে পৌঁছে যান৷ আর তার পরেই দুই গননা কেন্দ্রের সামনে তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীদের মধ্যে উচ্ছাস ছডি়য়ে পডে়ছিল৷ পাড়ায় পাড়ায় মহিলাদের মধ্যে ঘর থেকে বের হয়ে লক্ষীর ভান্ডারের প্রতীক নিয়ে রাস্তায় উল্লাসে মেতে উঠতে দেখা যায়৷ বিভিন্ন জায়গায় কর্মী সমর্থকদের উৎসবে মেতে উঠার সময় বার বার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দোপাধ্যায় এর হয়ে স্লোগান উঠে৷ শুরু হয়ে যায় সবুজ আবীর খেলা৷ এরই মধ্যে বিজেপির দাপুটে নেতা দিলীপ ঘোষ বের হয়ে আসেন ইউআইটি বিল্ডিং থেকে৷ তার পরেই হেঁটে বের হয়ে যান নিরাপত্তা রক্ষীদের ঘেরাটোপে৷ কিন্ত্ত তার মধ্যেই কয়েকশো তৃণমূল কংগ্রেস এর সর্মথক তাকে লক্ষ্য করে জয়বাংলা শ্লোগান দেওয়া শুরু করেন৷ বুধবার সকাল থেকেই বর্ধমান শহর তো বটেই ভাতার, মন্তেশ্বর, জামালপুর, কালনা, কাটোয়া, মেমারি, পূর্বস্থলীতে উচ্ছাস তুঙ্গে উঠে তৃণমূল কর্মী সমর্থকদের মধ্যে৷ দুই জয়ী প্রার্থী ডাঃ শর্মিলা সরকার ও কীর্তি আজাদ কে নিয়ে উৎসবে মেতে উঠতে দেখা যায়৷ বিশেষ করে বিভিন্ন মহল্লায় মহিলা সমর্থকদের উল্লাস ছিল চোখে পড়ার মতো৷
মঙ্গলবার বর্ধমান শহরের বিভিন্ন মহল্লায় দুপুরের দিকে বাজি ফাটতেও দেখা যায়৷ কিন্ত্ত তার ঠিক উল্টো চিত্র দেখা যায় বিজেপি শিবিরে৷ বেলা যত বেডে়ছে হতাশ হয়ে বিজেপি শিবির ছেডে় চলে যেতে দেখা যায় কর্মী সমর্থকদের৷ এমনকি সংবাদ মাধ্যমের কাছেও সে ভাবে কোন নেতা মুখ খুলতে চাননি৷ বুধবারও একই চিত্র৷ এমনকি শহর বর্ধমানের ঘোড়দৌড় চটি এলাকার বিজেপির প্রধান কার্যালয়েও একই অবস্থা ছিল৷ হতাশায় দলের পার্টি অফিসের কাছাকাছি যেতে দেখা যায়নি কাউকেই৷ তবে গননা কেন্দ্র ছেডে় যাবার আগে দিলীপ ঘোষ মঙ্গলবার বলেছিলেন হঠাৎ করে লডে়ছি৷ লোক মন খুলে ভোট দিয়েছেন৷