দিল্লি, ৫ জুন – লোকসভা ভোটের ফল প্রকাশ হওয়ার পরই ট্যুইট করে দলের কর্মীদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং। কিন্তু সেই শুভেচ্ছা বার্তায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি র উদ্দেশে একটি শব্দও ব্যয় করেননি তিনি। আর তা নিয়েই দিল্লির রাজনীতিতে শুরু হয়েছে চর্চা ।
লখনউ আসন থেকে জিতেছেন রাজনাথ। এক সময়ে উত্তরপ্রদেশের এই আসনে লড়তেন অটল বিহারী বাজপেয়ী। টুইটে রাজনাথ লেখেন , “বিজেপির কর্মীদের পরিশ্রম ও ঘাম লোকসভা ভোটে বিজেপি লাগাতার তিন বারের সাফল্যের মূল কারণ । বিজেপি সভাপতি জে পি নাড্ডার নেতৃত্বে দেশ জুড়ে বিজেপির কর্মীরা অক্লান্ত ও নিরলস চেষ্টা করেছেন। আমি বিজেপির সমস্ত কর্মীদের অভিনন্দন জানাই ও তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞ।”
রাজনাথের এই ট্যুইট নিয়েই চর্চা চলছে রাজনৈতিক মহলে। কারণ, ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের পর রাজনাথ যে টুইট করেছিলেন, তার সঙ্গে এবারের টুইটের বিস্তর পার্থক্য। উনিশের ভোটের ফলাফল ঘোষণা হয়েছিল ২৩ মে। সেদিন টুইট করে রাজনাথ লিখেছিলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং বিজেপি সভাপতি অমিত শাহর সঙ্গে কথা ফোনে বলেছি। এনডিএ-র এই বিপুল জয়ের জন্য তাঁদের অভিনন্দন জানিয়েছি।
দুটি টুইট পাশাপাশি রেখে বিজেপিতেও শুরু হয়েছে জোর জল্পনা । কারণ, দলের মধ্যে অনেকেই মনে করেন, মোদির মন্ত্রিসভায় রাজনাথ বিগ ফোরে থাকলেও তাঁর কোনও দাম নেই। প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের কাজও আসলে পরিচালনা করা হয় প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয় থেকে। প্রসঙ্গত , নরেন্দ্র মোদির অনেক আগে থেকেই সর্বভারতীয় রাজনীতিতে রাজনাথের উত্থান। উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন তিনি। পরে বিজেপির সভাপতি হন। তা ছাড়া কেন্দ্রে বাজপেয়ী সরকারে মন্ত্রী ছিলেন রাজনাথ।
রাজনাথ অনুগামীরা মনে করেন, মোদি-শাহ জুটি বিজেপি দলটাকে হাইজ্যাক করে নিয়েছেন। দল ও সরকার দুজন লোকই চালান। তা ছাড়া সর্বভারতীয় রাজনীতিতেও অনেকের ধারণা হলজে পি নাড্ডাকে কেবল পোশাকি সভাপতি করে রাখা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে রাজনাথের টুইট দেখে অনেকে বলছেন, দলের মধ্যে এবার চাপ সৃষ্টির চেষ্টা করবেন রাজনাথ সিংহরা। তা ছাড়া এবার শরিক দল নির্ভর সরকার চালাতে হবে মোদিকে। ফলে সরকার পরিচালনার ক্ষেত্রে রাজনাথ সিংহকে গুরুত্ব দিতে হবে। কারণ, বাজপেয়ী জমানায় শরিকদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার কাজটি করতেন রাজনাথই । মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও সেই কারণেই তাঁর সম্পর্ক ছিল বন্ধুত্বপূর্ণ ।
রাজনাথের টুইট দেখে খোঁচা দিতে ছাড়েননি কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশ। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, একি জলবায়ু পরিবর্তনের ইঙ্গিত?