• facebook
  • twitter
Friday, 22 November, 2024

বিষাক্ত পার্থেনিয়ামে ছেয়ে গেছে মঙ্গলকোট

মোল্লা জসিমউদ্দিন: বায়ু দূষণ ক্রমশ বাড়ছে৷ সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে বিষাক্ত পার্থেনিয়াম গাছে ছেয়ে গেছে গোটা মঙ্গলকোট৷ পূর্ব বর্ধমান জেলার মঙ্গলকোট ব্লক এলাকায় নুতনহাট থেকে কাটোয়া-বর্ধমান-দুর্গাপুর প্রভৃতি সড়কপথের দু ধারে ভরে গেছে এই বিষাক্ত পার্থেনিয়াম গাছ৷ গোতিষ্ঠা উপ স্বাস্থ্য কেন্দ্রের চারিদিকে রয়েছে পার্থেনিয়াম গাছের জঙ্গল৷ ‘পার্থেনিয়াম’ মূলত আগাছা৷ এই গাছের আসল নাম ‘পার্থেনিয়াম হিস্টেরোফরাস’৷ এটি সূর্যমুখী উপজাতির

মোল্লা জসিমউদ্দিন: বায়ু দূষণ ক্রমশ বাড়ছে৷ সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে বিষাক্ত পার্থেনিয়াম গাছে ছেয়ে গেছে গোটা মঙ্গলকোট৷ পূর্ব বর্ধমান জেলার মঙ্গলকোট ব্লক এলাকায় নুতনহাট থেকে কাটোয়া-বর্ধমান-দুর্গাপুর প্রভৃতি সড়কপথের দু ধারে ভরে গেছে এই বিষাক্ত পার্থেনিয়াম গাছ৷ গোতিষ্ঠা উপ স্বাস্থ্য কেন্দ্রের চারিদিকে রয়েছে পার্থেনিয়াম গাছের জঙ্গল৷ ‘পার্থেনিয়াম’ মূলত আগাছা৷ এই গাছের আসল নাম ‘পার্থেনিয়াম হিস্টেরোফরাস’৷ এটি সূর্যমুখী উপজাতির উদ্ভিদ যার জন্ম মেক্সিকোতে কিন্ত্ত বর্তমানে বাংলা তথা সারা ভারতের সর্বত্র ভয়ঙ্কর বিপদজনক ভাবে ছডি়য়ে পডে়ছে৷ পার্থেনিয়াম গাছ বাঁচে তিন থেকে চার মাস৷ এই সময়ের মধ্যেই তিনবার ফুল ও বীজ দেয়৷ একটি পার্থেনিয়াম গাছ ৪ থেকে ২৫ হাজার বীজের জন্ম দিতে পারে৷ এই বীজ এতই ছোট যে সাধারণত গবাদি পশুর গোবর, গাডি়র চাকা, জুতোর তলার কাদামাটি, সেচের জল ও বাতাসের সঙ্গে এর বিস্তার ঘটে৷ সাম্প্রতিক এক রিপোর্ট অনুযায়ী, ভারতের পুণেতে পার্থেনিয়ামজনিত বিষক্রিয়ায় এ পর্যন্ত ১২ জন মারা গেছেন৷ পার্থেনিয়ামে রয়েছে ‘পার্থেনিন’ নামক ক্ষতিকর রাসায়নিক উপাদান এবং এক ধরনের টক্সিন বা বিষ, যা মানুষসহ অন্যান্য প্রাণীদের জন্য ক্ষতিকর৷

এই আগাছা উদ্ভিদ ফসলি জমিতে থাকলে ফসলের উৎপাদন প্রায় চল্লিশ শতাংশ কমিয়ে দেয়৷ পার্থেনিয়াম আগাছাযুক্ত মাঠে গবাদি পশু চরানো হলে পশুর শরীর ফুলে যায়, তীব্র জ্বর, বদহজমসহ নানা রোগের উপসর্গ দেখা দেয়৷ পার্থেনিয়াম মানুষের হাতে-পায়ে লাগলে হাত-পা চুলকায়, লাল হয়ে যায় এবং পরে ত্বকের ক্যানসারের সৃষ্টি করতে পারে৷ আক্রান্ত ব্যক্তি ঘনঘন জ্বর, অসহ্য মাথাব্যথা ও উচ্চ রক্তচাপে ভুগতে পারে৷ ১০ মিটার দূর থেকে পার্থেনিয়ামের ফুলের রেণু মানুষের এলার্জি, হাঁপানি, চর্মরোগ, ব্রঙ্কাইটিস সৃষ্টি করতে পারে৷ এই আগাছা ৭০ শতাংশ মানুষের চর্মরোগ, ৩০ শতাংশ মানুষের শ্বাসকষ্টজনিত রোগ সৃষ্টি করতে পারে৷ পার্থেনিয়াম গাছে কোনও ভাবেই হাত দেওয়া যাবে না এবং বাচ্চাদের দূরে রাখুন৷

পার্থেনিয়াম সাফাই অভিযানে সবসময় মুখে মাস্ক ও হাতে গ্লাভস পরে থাকতে হবে৷ এছাড়া ফুলহাতা জামা ও ফুলপ্যান্ট পরে থাকা ভালো৷ সাফাইয়ের পর জামাকাপড় ভালো করে ধুয়ে ফেলরে হবে ও তারপর স্নান করে বাডি়তে ঢুকতে হবে৷ পার্থেনিয়াম গাছের গায়ে কেরোসিন স্প্রে করলে পার্থেনিয়াম খুব তাড়াতাডি় মারা যায়৷ তবে এতে অনেক অসুবিধা আছে, যেমন- পদ্ধতিটি ব্যয়সাপেক্ষ, কেরোসিন জলাশয়ে ছডি়য়ে পড়লে জল নষ্ট হবে৷ তাই খুব কম খরচে এই আগাছা বিনাশ করার সবচেয়ে ভালো উপায় হলো ৪ থেকে ৫ লিটার জলে ১ কেজি নুন ভালো করে মিশিয়ে গাছের পাতায় ও গোড়াতে স্প্রে করলে ২ দিনের মধ্যে পার্থেনিয়াম গাছ মারা যাবে৷ মঙ্গলকোটে বিষাক্ত পার্থেনিয়াম গাছ ধ্বংস করতে সরকারি উদ্যোগের দাবি রেখেছেন স্থানীয়রা৷