• facebook
  • twitter
Friday, 18 October, 2024

‘ধ্যান করলে ঘরে করুন’, মোদিকে খোঁচা অভিষেকের

‘নয়ে নয় নিয়ে আমরা আশাবাদী’, ‘হাওয়া বুঝে গিয়েছেন মিঠুন’ নিজস্ব প্রতিনিধি— উৎসবের মেজাজে সকাল সকাল নিজ গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়৷ শেষ দফায় শনিবার বাংলার ন’টি আসনে ভোটগ্রহণ৷ এই ন’টি আসনেই উড়বে সবুজ আবির, ভোটদানের পর বেড়িয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে জানিয়ে দিলেন ডায়মন্ড হারবারের বিদায়ী সাংসদ তথা তৃণমূল প্রার্থী অভিষেক

‘নয়ে নয় নিয়ে আমরা আশাবাদী’, ‘হাওয়া বুঝে গিয়েছেন মিঠুন’

নিজস্ব প্রতিনিধি— উৎসবের মেজাজে সকাল সকাল নিজ গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়৷ শেষ দফায় শনিবার বাংলার ন’টি আসনে ভোটগ্রহণ৷ এই ন’টি আসনেই উড়বে সবুজ আবির, ভোটদানের পর বেড়িয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে জানিয়ে দিলেন ডায়মন্ড হারবারের বিদায়ী সাংসদ তথা তৃণমূল প্রার্থী অভিষেক বন্দোপাধ্যায়৷

ভবানীপুরের মিত্র ইনস্টিটিউশনে ভোট দিয়ে বেড়িয়ে আত্মবিশ্বাসী অভিষেক বলেন, “শেষ ৬ দফায় ২৩ পাড় করে গেছি৷ সপ্তম দফায়, নয়ে নয় নিয়ে আশাবাদী৷ আগের বারও জিতেছি৷ আমরা সারা বছর কাজ করেছি৷ ” এই প্রসঙ্গ ধরেই বিজেপিকে আক্রমণ অভিষেকের৷ তিনি বলেন, “বিজেপির রাজনীতি ইডি, সিবিআই এবং আদালত কেন্দ্রিক৷ হারের আগাম অজুহাত বিজেপি তৈরী করে নিয়েছে এখন থেকেই৷ বুথে এজেন্ট বসতে দিচ্ছে না, শান্তিপূর্ণ ভাবে ভোট হচ্ছে না ইত্যাদি তাঁদের অভিযোগ৷ প্রশাসন তো এখন নির্বাচন কমিশনের অধীনে৷ বারংবার ডিজি সহ বিভিন্ন অফিসারের বদলির পরও সমস্যা হলে ব্যর্থতা নির্বাচন কমিশনের, রাজ্যের শাসক দলের নয়৷ ”

কন্যাকুমারীর বিবেকানন্দ রক মেমোরিয়ালে ধ্যানে বসেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি৷ এ প্রসঙ্গেও অভিষেক বিঁধতে ভোলেন নি প্রধানমন্ত্রীকে৷ কড়া ভাষায় অভিষেক বলেন, “ঘর তৈরির টাকা আটকে, ১০০ দিনের কাজের টাকা আটকে, মূল্যবৃদ্ধি, সেখানে মানুষের উপর বোঝা চাপিয়ে ধ্যান করা ঠিক নয়৷ করদাতাদের উপর বোঝা চাপানো ঠিক নয়৷ ধ্যান করলে ঘরে করুন৷ এভাবে ধ্যান করতে বসায় কোনও গরিবের উপকার হবে? হলে করুন৷ আমার আপত্তি নেই৷ যে অর্থ ব্যয়ে তিনি ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করছেন, সেই অর্থ মানুষের জন্য ব্যয়িত হলে মানুষের জন্য আবাস, বিদ্যালয়, হাসপাতাল তৈরী হতে পারতো৷ করদাতাদের করের অপব্যবহার করছেন৷ ” এরপরেই তাঁর খোঁচা, “আমিও শনিবার ১০ মিনিট ধ্যান করেছি৷ আপনারা জানেন?” পাশাপাশি অভিষেকের দাবি, বারাণসীতে গণতন্ত্রে কণ্ঠরুদ্ধ করা হয়েছে৷ তিনি বলেন, “বারাণসীতে বিজেপি প্রার্থী স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী মোদি৷ সেখানেই বিরোধী প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে৷ মনোনয়ন জমা দিতে গেলে রিটার্নিং অফিসারের ঘরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি৷ এত আত্মবিশ্বাস থাকলে এ রকম কেন হবে?

ভয় কেন? আপনার বয়সের অর্ধেক বয়সের একটি ছেলেকে মনোনয়ন দিতে দেননি৷ গত বছরও এ রকম হয়েছিল৷ ”

এদিন ভোটদানের পর অভিষেক দফায় দফায় আক্রমণ শানিয়েছেন বিজেপি কে৷ মানুষ কেন কেন্দ্রে পরিবর্তন চাইছে, তার কারণ ব্যাখ্যা করেছেন তৃণমূল সেনাপতি৷ তাঁর ভাষায়, “বিগত পাঁচ বছরে বাংলার প্রতি যে কেন্দ্রের বঞ্চনা তা বাংলার মানুষ দেখেছে৷ তার প্রতিফলন ভোটবাক্সে হচ্ছে৷ এক বুক আশা, আকাঙ্খা নিয়ে মানুষ পাঁচ বছর, দশ বছর আগে বিজেপিকে জয়ী করেছিল৷ তিন মাস ধরে রাস্তায় ঘুরেছি, বুঝেছি মানুষের মোহভঙ্গ হয়েছে৷ উৎসবের মেজাজে ভোট হচ্ছে৷ গরম তুলনামূলক কম৷ আমি আশাবাদী, বিপুল সংখ্যক মানুষ ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন৷ কেন্দ্র সরকারের বিরুদ্ধে যে রাগ, তার প্রতিফলন থাকবে৷ শুধু শেষ দফার দক্ষিণের ন’টি আসন নয়, রাজ্যের সর্বত্র প্রতিফলন থাকবে৷ মূল্যবৃদ্ধি আকাশছোঁয়া৷ এ সবের বিরুদ্ধেই মানুষ ভোট দেবেন৷ ” এখানেই শেষ নয়, অভিষেকের আরও সংযোজন, “এটি কেবল নির্বাচিত করার ভোট নয়, এটি প্রতিবাদের ভোট এবং প্রতিরোধের ভোট৷ মোদির নেতৃত্বে দ্বিতীয় বার যে এনডিএ ক্ষমতায় এসেছে তাকে যোগ্য জবাব দেওয়ার ভোট৷ আগামী ৪ তারিখের ফলাফল হবে চমকে দেওয়ার মতো৷ আমি দায়িত্বের সাথে বলতে পারি, বিজেপির বিদায় আসন্ন৷ ২০১৯ এর তুলনায় তৃণমূলের ভালো হবে এবার৷ ”

অভিষেকের বক্তব্য অনুযায়ী, তৃণমূলের ফল ভালো হলেও সম্ভাব্য কত আসন বাংলায় পেতে চলেছে তৃণমূল? ইন্ডিয়া জোট পাবে কটি আসন? আশাবাদী অভিষেক সেই জল্পনায় ইতি টানেন নি৷ আগামী ৪ঠা জুনের অপেক্ষায় থাকার বার্তাই দিয়েছেন৷ তিনি বলেন, “সবটাই জানা যাবে ৪ জুন৷ সে দিন বিজেপির বিদায়ঘণ্টা বাজবে৷ গরিব-বিরোধী, কৃষক-বিরোধী সরকারের পতন হবে৷ ” এই প্রসঙ্গে অভিষেক বিজেপির বিরুদ্ধে তোপ দেগে বলেন, “গতবার লোকসভা নির্বাচনে ১৮ টি আসন পেয়েছিল বিজেপি৷ টেকনিক্যালি ২০টি আসন৷ এ বার তার নীচে গেলে দায়িত্ব কার? জিজ্ঞেস করুন৷ আগে ওঁরা বলেছিল ৩৫, তারপর দাবি করছে ৩০ টি আসন পাবে৷ এখন কেউ বলছে ২২ টি আসন পাবে৷ সব দেখা যাবে ৪ জুন৷ ” নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়েও এদিন সরব হন অভিষেক৷ তাঁর ভাষায়, “নির্বাচন কমিশনের একটা অংশ বিজেপির হয়ে কাজ করছে৷ বিজেপি নেতার কাছ থেকে বিপুল পরিমান টাকা উদ্ধারের পর সংশ্লিষ্ট অফিসারকে পুরস্কৃত করার বদলে বদলি করানো হয়৷ এর থেকেই প্রমাণিত নির্বাচন কমিশন পক্ষপাতদুষ্ট৷ কিন্ত্ত তাতে কোনো লাভ হবে না৷ ভোট মানুষ দেবে, নির্বাচন কমিশন নয়৷ ” ভোটদানের পর মিঠুন শনিবার জানিয়েছেন, বিজেপি নেতৃত্বের নির্দেশ মেনে ৩০ মে তাঁর কাজ শেষ হয়েছে৷ এ বার তিনি ছবির কাজে যোগ দেবেন৷ রাজনীতি নিয়ে কথা বলবেন না৷ এই প্রসঙ্গে অভিষেকের খোঁচা, “মিঠুন হাওয়া বুঝে গেছেন৷ তাই ফিরে যেতে হচ্ছে৷ ” শনিবার দিল্লিতে ইন্ডিয়া জোটের বৈঠক রয়েছে৷ ফলাফল ঘোষণার পর কী পদক্ষেপ করা হবে, সেই নিয়ে আলোচনায় বসবেন জোটশরিকেরা৷ তবে বৈঠকে তৃণমূলের কেউ যাচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন অভিযেক৷ তাঁর কথায়, “নেত্রী বলেছেন, ন’টি আসনে ভোট৷ তাই শনিবার যাওয়া সম্ভব নয়৷ পরবর্তীকালে হলে নিশ্চয়ই যাব৷”