পুনে, ৩০ মে – পুনের পোর্শেকাণ্ডের তদন্তে আবার চাঞ্চল্যকর মোড়। আড়াই কোটির পোর্শে গাড়ির ধাক্কায় দুই তথ্যপ্রযুক্তি ইঞ্জিনিয়ারের মৃত্যুর জন্য দায়ী কিশোরের রক্তের নমুনা বদল করা হয়েছিল। তদন্তে আরও জানা গেল, ওই কিশোরের মায়ের রক্তের সঙ্গে নমুনা বদল করেছিলেন ডাক্তাররা।
চাঞ্চল্যকর এই ঘটনা নাড়িয়ে দিয়েছে সমাজকে। প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার আগেই মদ্যপান করে গাড়ির ধাক্কায় দুজনকে প্রাণে মারার পরেও ছেলেকে আইনের হাত থেকে বাঁচাতে সরকারি হাসপাতালে রক্ত দিয়েছিলেন কিশোরের মা নিজেই। রক্তের নমুনায় যাতে মদ্যপানের প্রমাণ না পাওয়া যায়, তাই ৩ লক্ষ টাকা ঘুষ নিয়ে ডাক্তাররা কিশোরের রক্তের নমুনা ডাস্টবিনে ফেলে দেন।
এই ঘটনার তদন্তে গঠিত বিশেষ টিম ইতিমধ্যেই সরকারের কাছে রিপোর্ট জমা দিয়েছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, কিশোরের মা ছেলেকে বাঁচাতে নিজের রক্তের নমুনা হাসপাতালে দিয়েছিলেন। শুধু তাই নয়, পোর্শে গাড়িতে থাকা আরও ২ আরোহীর রক্তের নমুনা বদলেরও প্রমাণ মিলেছে। ওই দুজনের একজনের দাদা ও অন্যজনের বাবা রক্ত দিয়েছিলেন নমুনা বদলের জন্য।
গাড়িতে পুণের ধনকুবের প্রোমোটারের পারিবারিক চালক ছাড়াও ওই কিশোর ও তার দুই বন্ধু ছিল। দুর্ঘটনার সময় গাড়ি চালাচ্ছিল ওই কিশোরই, এ ব্যাপারে নিশ্চিত তদন্তকারী দল। তারপরেই সাসুন সরকারি হাসপাতালে রক্ত দিতে চলে যান কিশোরের মা শিবাণী আগরওয়াল। ডাঃ শ্রীহরি এবং ডাঃ অজয় তাওয়াড়েকে গ্রেফতারের পর থেকেই বেপাত্তা হয়েছেন শিবাণী। পুলিশ তাঁর খোঁজে সন্ধান চালাচ্ছে।
হাসপাতালের ডিন বিনায়ক কালের দাবি, তাওয়াড়েকে সুপার পদে সুপারিশ করেছিলেন অজিত পাওয়ার গোষ্ঠীর এনসিপি-র বিধায়ক সুনীল টিঙ্গরে এবং অনুমোদন দিয়েছিলেন রাজ্যের মেডিক্যাল শিক্ষামন্ত্রী হাসান মুশরিফ। কিডনি প্রতিস্থাপন এবং ওষুধ কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত হওয়া সত্ত্বেও তাওয়াড়েকে ফরেন্সিক মেডিক্যাল বিভাগের প্রধান করা হয়েছিল।
এদিকে, ওই দুর্ঘটনার পুনর্গঠন করতে পুলিশ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রযুক্তি ব্যবহারের চিন্তাভাবনা করছে। পদস্থ এক পুলিশ কর্তা জানান, এ ধরনের কেসে কখনও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্য নেওয়া হয়নি। এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে থাকে খুনের মামলায় দেহ শনাক্ত করার কাজে। তবে এবারে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে ঘটনার বিস্তারিত ডিজিটাল পুনর্গঠনের ভাবনা রয়েছে পুলিশের ।